Published : Wednesday, 3 November, 2021 at 12:00 AM, Update: 03.11.2021 1:18:44 AM
স্টাফ
রিপোর্টার।। খোঁজ নেই কুমিল্লা সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর পিএস হিসেবে
পরিচিত মঈনুদ্দীন আহমেদ বাবুর। গত ২৩ অক্টোবর থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।
পরিবারের সদস্য ও আত্মীয় স্বজন এমনকি মেয়র ও মেয়রের ঘনিষ্ঠরাও জানেন না
পিএস বাবু কোথায়! গত ১৩ অক্টোবর সকালে কুমিল্রার নানুয়া দিঘির পাড়ে
পূজামণ্ডপে হামলার সময় ঘটনাস্থলেই ছিলেন মেয়রের পিএস হিসেবে পরিচিত ‘পিএস
বাবু’। হামলার সময় পুলিশ পিএস বাবুকে গ্রেপ্তার করতে গেলে মেয়র সাক্কু তাকে
নিজের পিএস পরিচয় দিয়ে ছাড়িয়ে নেন। কিন্তু ২৩ অক্টোবর থেকে গুঞ্জন ছড়িয়ে
পড়ে পিএস বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু ১৩ অক্টোবরের ঘটনায় দায়ের করা
মামলাগুলোর তদন্ত সংস্থা সিআইডি ও কোতয়ালী পুলিশ এবং র্যাব বলছে তার পিএস
বাবু নামে কাউকে গ্রেপ্তার করে নি। আবার পিএস বাবুর বাড়ি কুমিল্লা শহরের
বজ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বাড়িতে মঙ্গলবার গিয়ে দেখা গেছে
তালাবদ্ধ গেইট। ভেতরেও দরজা তালাবদ্ধ। পাশের ঘর বা বাড়ির লোকজনও জানেন না
পিএস বাবু কোথায়।
জানা গেছে, কুমিল্লার নানুয়ার দিঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে
বিশৃংখলা শুরুর জন্য মঈনুদ্দীন আহমেদ বাবু নামের এক ব্যক্তিকে দায়ী করছেন
এলাকাবাসী ও মণ্ডপসংশ্লিষ্টরা। এ নিয়ে ফেসবুকেও তার বিরুদ্ধে নানা পোষ্ট
দেওয়া হয়। ঘটনার সময় তাকে উত্তর পাড়ে সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে। কখনো সে
শ্লোগান দেয় এবং কখনো বিক্ষোভকারীদের থামায়।
মঈনুদ্দীন আহমেদ বাবু
কুমিল্লা জেলা বিএনপির প্রাক্তণ ও প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আহমেদের
ছেলে। তার মা দু মাস আগে করোনায় মারা যান। বিবাহিত বাবু দুই ছেলে সন্তানের
জনক। দুই ছেলেই মাদ্রাসায় পড়ে। কিন্তু প্রতিবেশী ও আত্মীয় কারো সঙ্গেই
পিএস বাবুর তেমন কোন সম্পর্ক নেই। প্রতিবেশীরাও জানেন না বাবু ও তার পরিবার
কোথায়। তার স্ত্রীর সম্পর্কে বা শ্বশুর বাড়ি কোথায় তাও জানেন না কেউ! এমকি
প্রতিদিন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে দায়িত্ব পালন করা পিএস বাবুর সহযোগী বা
ঘনিষ্ঠ বিএনপি নেতারাও সে কোথায় আছে জানেন না। কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করা হলে
তারা তাকে চিনেন বলেও স্বীকার করতে গরিমসি করেন! কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের
মেয়র মনিরুল হক সাক্কুও সাংবাদিকদের কাছে পিএস বাবুকে তার ব্যক্তিগত সহকারি
নয় বলে দাবি করে বলেছেন, বাবু প্রায়ই আমার সাথে থাকতো।
নাম প্রকাশে
অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন আত্মীয় জানান, ঐ ঘটনার পর বাবু তার পরিবার নিয়ে বাসা
তালা দিয়ে চলে গেছে। সকাল বেলায় গেছে বলে কারো সাথে কথা হয় নি। কিন্তু অপর
একটি সূত্র বলছে, ২৩ অক্টোবর বা তার আগে পরে পিএস বাবুকে নানুয়া দিঘির
পূর্ব পাড় থেকে তাকে ধরে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কারা ধরে নিয়ে গেছে, কেন
নিয়ে গেছে এ সম্পর্কে কেউ কিছুই জানেন না।
মঙ্গলবার দুপুরে শহরের
বজ্রপুরে পিএস বাবুর বাসায় গিয়ে দেখা যায় তার দোতলা বাসার কলাপসিবল গেইটে
তিনটি তালা ঝুলছে। ভেতরের কক্ষের দরজায়ও তালা রয়েছে। কোথাও কেউ নেই।
পুলিশের
অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) কুমিল্লার বিশেষ পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ
রেজোয়ান জানান, মেয়রের পিএস বাবু নামে কাউকে তারা গ্রেপ্তার করেন নি। তাকে
না পাওয়া গেলে পরিবারের সদস্যরা জিডি করতে পারে। কিন্তু এমন কিছু তো কেউ
করে নি।
নানুয়ার দিঘির পাড়ের ওই মণ্ডপে চলে ব্যাপক ভাঙচুর, আক্রান্ত হয়
নগরীর আরও বেশকিছু পূজামণ্ডপ। পরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে চাঁদপুর, নোয়াখালী,
চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায়।