২০০৩ সালে সাফ ফুটবলে
সবশেষ মালদ্বীপকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর থেকে জয়হীন। তবে এবার
শ্রীলঙ্কার চার জাতি প্রতিযোগিতায় ইতিহাস বদলালো বাংলাদেশ। জয় নিয়েই মাঠ
ছেড়েছে মারিও লেমসের শিষ্যরা। আজ (শনিবার) জামাল ভূঁইয়া ও তপু বর্মণের গোলে
২-১ ব্যবধানে হারিয়েছে মালদ্বীপকে। এই জয়ে দুই ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে
ফাইনালের পথে এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ।
অথচ খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। গত
মাসের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে মালদ্বীপের কাছে ২-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কার চার জাতি ফুটবল প্রতিযোগিতায় যখন আবারও সেই দ্বীপ দেশটির
মুখোমুখি, তখন সাফের ম্যাচের স্মৃতি সামনে আসাই স্বাভাবিক। তবে পার্থক্যটা
বাংলাদেশ কলম্বোর ম্যাচের শুরুতেই দেখিয়ে দিলো। জামাল ভূঁইয়ার গোলে
মালদ্বীপের বিপক্ষে ১-০ গোলের লিড নেয় লাল সবুজ জার্সিধারীরা। তবে ৩২
মিনিটে ম্যাচে সমতা ফেরায় মালদ্বীপ। আর ৮৭ মিনিটে তপুর পেনাল্টিতে ১৮ বছর
পর মালদ্বীপকে হারানোর উল্লাসে মাতে বাংলাদেশ।
আজ (শনিবার) কলম্বোর
রেসকোর্স মাঠে ১১ মিনিটে জামালের গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। জাতীয় দলের
জার্সিতে এই প্রথম গোলের দেখা পেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এর আগে অনূর্ধ্ব-২৩
দলের হয়ে দুটি গোল আছে তার। তবে সেটি ছিল বয়সভিত্তিক দলে। মালদ্বীপের
বিপক্ষে এই লড়াই দিয়েই তাই মূল দলের হয়ে প্রথম গোলের দেখা পেলেন ৫৮তম
ম্যাচে এসে।
শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার ছিল বাংলাদেশের খেলায়। গোলের
দেখা পেতেও তাই খুব একটা দেরি হয়নি। ১১তম মিনিটে এগিয়ে যায় লাল-সবুজ
জার্সিধারীরা। রহমত মিয়ার লম্বা থ্রো-ইনে বক্সের ভেতর মালদ্বীপের এক
খেলোয়াড় লাফিয়ে হেড করতে চাইলেও পারেননি, ছুটে যাওয়া সেই বল আরেক খেলোয়াড়ও
পায়ে ছোঁয়াতে পারেননি। অনেকটা ভাগ্যক্রমে বল চলে যায় দূরের পোস্টে। যেখানে
একেবারে ফাঁকায় ছিলেন জামাল। প্লেসিং শটে সহজ সুযোগটা কাজে লাগেনি ভুল
করেননি এই মিডফিল্ডার।
তবে বিপত্তি ঘটে সহকারী রেফারি অফসাইডের বাঁশি
বাজালে। যদিও বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা কড়া আপত্তি জানান। তাদের অবস্থান জোরালো
হওয়ায় রেফারি তার সহকারীর সঙ্গে আলোচনা করে গোলের সিদ্ধান্ত জানান। যদিও
লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। ৩২ মিনিটে মালদ্বীপকে সমতায় ফেরান
ইব্রাহিম আইসাম। কর্নার থেকে ৬ গজ দূরত্ব থেকে লক্ষ্যভেদ করেন এই ফুটবলার।
বিরতির
পর মালদ্বীপ দাপট দেখানোর চেষ্টা করে। বেশ কয়েকবার ভয় ছড়িয়েছে বাংলাদেশের
রক্ষণে। যদিও গোল পায়নি। বরং বাংলাদেশ তিনটি সুযোগ থেকে একটি গোল আদায় করে
নেয়।
বদলি নেমে ফয়সাল আহমেদ ফাহিম ও জুয়েল রানা নিজেদের প্রমাণ করার
চেষ্টা করেছেন। ৬০ মিনিটে ফয়সাল বক্সের ভেতরে বল পেয়ে লক্ষ্যে শট নিতে
পারেননি। মিনিট ছয়েক পর রহমত মিয়ার লম্বা থ্রো-ইন থেকে আবারও ফাহিমের শট
দূরের পোস্ট দিয়ে যায়।
তবে ৮৭ মিনিটে বাংলাদেশ সফল। জুয়েল রানাকে
নিজেদের সীমানায় ফেলে দেন মালদ্বীপ গোলকিপার আলী নাইজ। শ্রীলঙ্কান রেফারি
বাজান পেনাল্টির বাঁশি। স্পট কিকের সুযোগটা নষ্ট করেননি তপু। গোলকিপারের
বিপরীত দিক দিয়ে জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করে ৩ পয়েন্ট এনে দেন এই ডিফেন্ডার।
এরই সঙ্গে বাংলাদেশের কোচ হিসেবে মারিও লেমস পেয়ে যান প্রথম জয়। ১৬ নভেম্বর
রাউন্ড রবিন লিগের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামবে
বাংলাদেশ।