নিজস্ব
প্রতিবেদক: হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে কুমিল্লার বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ
নেতা, জেলা চৌদ্দ দলের সমন্বয়ক, বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা
অধ্যক্ষ আফজল খানের জানাজা কুমিল্লা টাউন হল মাঠে অনুষ্ঠি তহয়েছে। জানাজার
সময় যেন মানুষের ঢল নেমেছিল কান্দিরপাড় এলাকায়। বুধবার দুপুরের পর প্রিয়
নেতার জানাজাস্থল কুমিল্লা টাউনহল মাঠ ভরাট হয়ে যাওয়ায় জানাজায়
অংশগ্রহণকারী মানুষ পূবালীচত্ত্বর থেকে লিবার্টি চত্তর এবং জিলা স্কুল রোডে
অবস্থান নেন। স্মরণকালের মধ্যে অনুষ্ঠিত এই বিশাল জানাজায় এলজিআরডি
মন্ত্রী তাজুলই সলাম, সাবেক রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক মুজিব, সংসদ সদস্য
নাসিমুল আলম চৌধুরী নজরুল, আফজল খান পুত্র ইমরান খান বক্তব্য রাখেন।
জানাজার শুরুতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয় এবং
রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁর পক্ষে জানাজায়
অংশ নেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল
মাহমুদ। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁর পক্ষে জানাজায় অংশ নেয়া আওয়ামী
লীগের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে আফজল খানকে গোবিন্দপুর চাঁন খা মসজিদের কাছে
পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। আপামর জনতার ফুলেল শ্রদ্ধায় চির বিদায়
নিলেন কুমিল্লার বর্ষিয়ান আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ আফজল খান।
কুমিল্লার
গণমানুষের নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আফজল খানকে বিদায় জানাতে বুধবার
দুপুরে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে উপস্থিত হন কুমিল্লার সকল রাজনৈতিক দলের
নোতাকর্মী এবং সব শ্রেণী পেশার মানুষ। টাউন হল মাঠ পরিপূর্ণ হয়ে কান্দিরপাড়
পূবালী চত্বর ও লিবার্টি মোড়ের সড়কেও জায়গা নেয় জানাজার নামাজে অংশ নেয়া
আফজল খানের শুভাকাঙ্খিরা।
টাউন হলের জানাজার নামাজের পূর্বে আফজল খানকে
রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জানান কুমিল্লা জেলা পুলিশের একটি চৌকস দল। পরে
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আফজল খানের কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। জানাজার নামাজে অংশ গ্রহণ করেন
এলজিআরডি মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এমপি, জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাইদ আল
মাহমুদ এমপি, সাবেক রেলপথ মন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক এমপি, আ ক ম বাহাউদ্দিন
বাহার এমপি, এডভোকেট আবুুল হাসেম খান এমপি, নাসিমুল আলম নজরুল এমপি,
কুমিল্লা সিটি মেয়র মোঃ মনিরুল হক সাক্কু, বিএনপির কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা
সাবেক এমপি মনিরুল হক চৌধুরী, কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রশাসক মোঃ আবু
তাহের, জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক আলহাজ্ব ওমর ফারুক, কুমিল্লা জেলা
প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ, এলডিপি
চেয়ারম্যান সাবেক এমপি রেদোয়ান আহমেদ, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ
সম্পাদক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, আঞ্জুম সুলতানা সীমা এমপিসহ আফজল খানের
পরিবারের সদস্যরাসহ বিভিন্ন কুমিল্লা ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে আসা
আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনিক
কর্মকর্তারা।
নামাজের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে অংশ নিয়ে জাতীয় সংসদের
হুইপ ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ আল মাহমুদ এমপি বলেন,
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এবং তাঁর পক্ষ থেকেই শ্রদ্ধা জানাতে আমরা অধ্যক্ষ
আফজল খানের জানাজায় অংশগ্রহন করেছি। এমপি, মন্ত্রী, হুইপ অনেকেই হতে পারে
কিন্তু গণমানুষের নেতা সবাই হতে পারেন না। আফজল খান ছিলেন গণমানুষের প্রিয়
নেতা। তাঁর প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল নেতা কর্মীরা শ্রদ্ধাজ্ঞাপন
করেন।
বক্তব্যে এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এমপি বলেন, বীর
মুক্তিযোদ্ধা আফজল খান তাঁর বর্ণাঢ্য রানৈতিক জীবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর
আদর্শ বাস্তবায়নে অনেক লড়াই সংগ্রাম করেছেন। স্বাধীণতার সংগ্রামসহ দুর্দিনে
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে টিকিয়ে রাখা এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে টিকিয়ে রাখতে আফজল খানের অবদান অনস্বীকার্য।
কুমিল্লাসহ সারা বাংলাদেশেই আফজল খান সুপরিচিত রাজনীতিবিদ। কুমিল্লার আপামর
মানুষ এই ব্যাক্তিকে মনে প্রাণে শ্রদ্ধা করে। তাঁর এই প্রয়াণে সমগ্র
কুমিল্লাবাসী শোকাহত। আমরা সবাই মরহুম আফজল খানের পরিবারের সদস্যদের প্রতি
সমবেদনা জানাই এবং তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে
সাবেক রেলপথ মন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক এমপি বলেন, আফজল খান ছিলেন একজন সাহসী
রাজনীতিবিদ। তিনি মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর রাজনীতিতে সক্রিয় একজন
যোদ্ধা ছিলেন। তাঁর এই প্রয়াণ কুমিল্লার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অপূরনীয়
ক্ষতি। আমরা তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাই এবং ঐতিহাসিক এই
নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
সব শেষে অধ্যক্ষ আফজল খানের ছেলে
মাসুদ পারভেজ খান ইমরান তাঁর পিতার প্রতি সকলের দোয়া কামনা করে বক্তব্য
রাখেন। তিনি এসময় জানাজায় অংশ নেয়া সকল মুসল্লির প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন
করেন।
জানাজার নামাজ শেষে কুমিল্লার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও
ধর্মীয় সংগঠনসহ আপামর জনতার ফুলেল শ্রদ্ধায় ফুলে ফুলে ঢেকে যায় কুমিল্লার
বর্ষিয়ান নেতার মরদেহ রাখা এ্যাম্বুলেন্স। ফুলেল শ্রদ্ধার্ঘ্য প্রদাণ করেন
কুমিল্লা জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ, মহানগর আওয়ামী
লীগ, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ, দক্ষিণ ও উত্তর জেলা যুবলীগ, দক্ষিণ জেলা
বিএনপি ও যুবদল, জেলা জাসদ ও ন্যাপসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
এর
আগে কুমিল্লা আদালত প্রাঙ্গণে সাবেক আইজীবী অধ্যক্ষ আফজল খানের প্রথম
জানাজার নামাজে অংশ নেন কুমিল্লা বারের নেতৃবৃন্দ, আইনজীবী ও আইনজীবী
সহকারীরা।