Published : Friday, 3 December, 2021 at 12:00 AM, Update: 03.12.2021 1:13:31 AM
কুমিল্লায়
কাউন্সিলর সোহেলসহ জোড়া খুনের কিলিং মিশনে নেতৃত্ব দেয়া এই মামলার প্রধান
আসামি শাহ আলম(২৮)ও পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহ হয়েছে। সিটি
কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র, ১৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগ
সদস্য সৈয়দ মোঃ সোহেল ও তার রাজনৈতিক সহযোগী হরিপদ সাহাকে খুনের মামলায়
সবচেয়ে আলোচিত হিসেবে শাহ আলমের নাম ছিলো সবার মুখে মুখে। বুধবার দিবাগত
রাত সোয়া ১টার দিকে কুমিল্লা সদর উপজেলার চাঁনপুর গোমতী নদীর বেড়িবাঁধ
এলাকায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের সঙ্গে এই
‘বন্দুকযুদ্ধে’র ঘটনায় সে মারা যায়। নিহত শাহ আলম নগরীর ১৬ নং ওয়ার্ডের
সুজানগর পূর্বপাড়া এলাকার মৃত জানু মিয়া ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ ৮টির
অধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জোড়া খুনের এই ঘটনায় এজাহারনামীয়
১১জন এবং অজ্ঞাতনামা আরো ১০ জনসহ মোট ২১ জনের বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতয়ালি
মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন কাউন্সিলর সোহেলের ছোট ভাই সৈয়দ মোঃ রুমন। এই
মামলায় এজাহারনামীয় প্রধান আসামি ১ নম্বর শাহ আলম, ৩ নম্বর সাব্বির ও ৫
নম্বর সাজন পুলিশের সাথে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছে। এছাড়া এই মামলায়
এজাহারনামীয় আসামি সুমন, আশিকুর রহমান রকি, আলম, জিসান মিয়া ও মাসুম
গ্রেপ্তার রয়েছে। তদন্তে নাম আসায় অন্তু ও জুয়েল নামে আরো দুই যুবককে
গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর মধ্যে অন্তু আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি
দিয়েছে এবং জুয়েল নামে নাঙ্গলকোট থেকে গ্রেপ্তার ওই যুবকের কাছ থেকে কিলিং
মিশনে শাহ আলম ব্যবহৃত দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
অন্যদিকে সর্বশেষ ইমরানকে অস্ত্রবহনে সহযোগিতার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২২
নভেম্বর হত্যাকান্ডের পর অস্ত্রসহ ব্যাগ সংরাইশ রহিম ডাক্তারের বাসায় ফেলে
যায় ইমরান ও সিজান।
এদিকে এখনো পলাতক রয়েছে মামলার এজাহার নামীয় ২
নম্বর আসামি ও এই ঘটনার মূলহোতা ২নম্বর আসামি জেল সোহেল, ১০ নম্বর আসামি
সায়মন ও ১১ নম্বর আসামি।
জোা খুনের এই ঘটনায় এপর্যন্ত তিন আসামি
পুলিশের সাথে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছে। সর্বশেষ নিহত হয়েছে শাহ আলম। পুলিশ
জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুমিল্লা জেলা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের একটি
বিশেষ দল বুধবার রাতে গোমতী বেরিবাঁধ এলাকায় অভিযান চালায়। পুলিশের কাছে
খবর আসে কয়েকজন অস্ত্রধারী দুষ্কৃতিকারী চাঁনপুরস্থ গোমতী নদীর বেড়িবাঁধে
অবস্থান করছে। রাত ১টা ১৫ মিনিটে অভিযানের সময় সন্ত্রাসীরা পুলিশের
উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। পুলিশের সদস্যরা
নিজেদের জীবন ও জানমাল রক্ষার্থে পাল্টা গুলি বর্ষণ করে। উভয়পক্ষের মধ্যে
গোলাগুলির একপর্যায়ে কয়েকজন দুষ্কৃতিকারী পালিয়ে যায়। গুলিবর্ষণ শেষে
ঘটনাস্থলে এক ব্যক্তিকে গুলিবিদ্ধ ও হাতে আগ্নেয়াস্ত্রসহ পরে থাকতে দেখা
যায়। স্থানীয়রা তাকে শাহআলম বলে শনাক্ত করে। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে চিকিৎসার
জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ডিবির
এসআই পরিমল দাস জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশের দুইজন সদস্য আহত হন। আহত পুলিশ
সদস্যদের চিকিৎসার জন্য পুলিশ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। সন্ত্রাসীদের
ব্যবহৃত একটি ৭.৬৫ পিস্তল, গুলির এবং কার্তুজের খোসা উদ্ধার করা হয়। পলাতক
আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার
রাতে মামলার ৩ নম্বর আসামি নগরীর সুজানগর এলাকার রফিক মিয়া ছেলে মো.
সাব্বির রহমান (২৮) ও মামলার ৫ নম্বর আসামি নগরীর সংরাইশ এলাকার কাঁকন
মিয়ার ছেলে সাজন (৩২) পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন। সাব্বির
ছিলেন হত্যা মামলার ৩ নম্বর ও সাজন ৫ নম্বর আসামি। নিহত মো. সাব্বির
হোসেনের বাড়ি নগরের সুজানগর পানির ট্যাংকি এলাকায়। তিনি ওই এলাকার রফিক
মিয়ার ছেলে। সাজনের বাড়ি নগরের সংরাইশ রহিম ডাক্তারের গলির ভেতরে। তিনি ওই
এলাকার কাঁকন মিয়া ওরফে চোরা কাঁকনের ছেলে।