Published : Saturday, 18 December, 2021 at 12:00 AM, Update: 18.12.2021 1:18:52 AM
তানভীর দিপু:
কুমিল্লা
নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ
সাহা খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া মামলার চার আসামীর পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষ
হওয়ায় গতকাল শুক্রবার দুপুরে আদালতে হাজির করা হয়। কুমিল্লার আমলী আদালত ১
এর বিচারিক হাকিম ফারহানা সুলতানার আদালতে তাদের আনা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা
কৃর্তক পূনরায় রিমান্ড আবেদন না থাকায় আদালত তাদের কারাগারে প্রেরন করেন।
জেলা
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, কাউন্সিলর সোহেলসহ জোড়া খুনের মামলার ৬ নম্বর আসামী
আশিকুর রহমান রকি, ৭ নম্বর আসামী মোঃ আলম, ৯ নম্বর আসামী মোঃ মাসুম ও
৮নম্বর আসামী মোঃ জিসান মিয়ার পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষ হয়েছে। রিমান্ড শেষে
তাদের গতকাল শুক্রবার আদালতে তোলা হয়। এদিকে পুলিশ রিমান্ডে থাকাকালে কিলিং
মিশনে ব্যবহৃত অস্ত্র সংগ্রহের তথ্য ও অর্থ যোগানদাতাদের নাম বলেছেন বলে
জানা যায়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধায় তিন দিনের রিমান্ডে মো. এমরান
হোসেন ওরফে রিশাত (২৩) তিন দিনের পুলিশ রিমান্ডে থাকাকালে কিলিং মিশনে
ব্যবহৃত অস্ত্র সংগ্রহের তথ্য দিয়েছে। সে বলেছে, কিলিং মিশনে ব্যবহৃত
অস্ত্র খাগড়াছড়ি জেলার এক ব্যক্তির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাকে আদালতে
হাজির করা হলে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে সে কিলিং
মিশনে অংশ নেয়াসহ হিট স্কোয়াডে থাকা অন্যান্যদের নাম প্রকাশ করেছে।
জেলা
গোয়েন্দা পুলিশ সত্রে জানা যায়, এ হত্যা মামলার এজহারভূক্ত আসামী নগরীর
তেলিকোনার আনোয়ার হোসেনের ছেলে আশিকুর রহমান রকি , ১৬ নং ওয়ার্ড সুজানগর বউ
বাজার এলাকার জানু মিয়ার ছেলে মোঃ আলম, সংরাইশ বেকারির গলির মনজিল মিয়ার
ছেলে মাসুম, সুজানগর পূর্ব পাড়ার নূর আলীর ছেলে জিসান মিয়ার কাছ থেকে পুলিশ
রিমান্ড শেষে অনেক গুরুত্বপূর্ন তথ্য পেয়েছে বলে জানায়। চাঞ্চল্যকর এ
ঘটনায় কিলিং মিশনে থাকা সদস্য ও সিসিটিভি ফুটেজে সনাক্ত এবং তদন্তে প্রাপ্ত
আসামিদের কয়েকদফায় পৃথক রিমান্ড শেষ করা হয়। তারা পুলিশের কাছে কিলিং
মিশনে ব্যবহৃত অস্ত্র সংগ্রহ ও অস্ত্র কেনার অর্থ যোগানদাতাদের নাম বলেছেন।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সত্যজিৎ বড়ুয়া
বলেন, কাউন্সিলর সোহেল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতার চার আসামি আলম মিয়া,
আশিকুর রহমান রকি, মাসুম ও জিসান মিয়াকে ৫ দিনের রিমান্ড শেষে শুক্রবার
তাদেরকে আদালতে আনা হয়। আদালত তাদের কারাগারে প্রেরন তরেন। পুলিশের
জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। সহযোগীসহ
কাউন্সিলর খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
মামলার তদন্তকারী
কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া জানান,
কুমিল্লায় সিটি কাউন্সিলর সোহলসহ জোড়া খুনের চার আসামীর পাঁচ দিনের রিমান্ড
শেষে গতকাল শুক্রবার বিকালে আদালতে আনা হয়। পুনরায় রিমান্ড আবেদন না করায়
আদালত তাদের জেল হাজতে প্রেরন করেন। রিমান্ডে থাকাকালে আসামীরা কাউন্সিলরসহ
জোড়া খুনের বিষয়ে গুরত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে। হত্যা মিশনে কারা জড়িত
ছিলো কে কে অস্ত্র কিনেছিলো, কে অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছিলো তাদের নামসহ
গুরুত্বপূর্ন তথ্য আমরা যাচাই বাচাই করছি। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে
তাদের বক্তব্য এবং পূর্বে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া আসামীদের
বক্তব্য যাছাই বাছাই করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহারনামীয়
প্রধান আসামি শাহ আলম ২ ডিসেম্বর গভীর রাতে এবং এর আগে ৩০ নভেম্বর গভীর
রাতে ৩ নম্বর আসামি সাব্বির হোসেন ও ৫ নম্বর আসামি সাজন পুলিশের সাথে পৃথক
‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।
উল্লেখ্য, ২২ নভেম্বর বিকালে নগরীর
পাথুরিয়াপাড়া এলাকায় কাউন্সিলরের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে অবস্থানকালে
কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ সাহাকে গুলি করে হত্যা করে
মুখোশ পরিহিত সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই সৈয়দ মো. রুমন বাদী হয়ে
কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানায় ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০
জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ মামলার এজাহারনামীয় ১১ নম্বর আসামি রনি
পলাতক রয়েছে।