Published : Saturday, 25 December, 2021 at 12:00 AM, Update: 25.12.2021 1:33:41 AM
ঝালকাঠির
সুগন্ধা নদীতে স্মরণকালের ভয়াবহ লঞ্চ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪১
জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চার জনের লাশ নিয়ে গেছেন স্বজনরা। বাকি ৩৭
জনের লাশ বরগুনা জেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছে ঝালকাঠি জেলা
প্রশাসন। লাশগুলো নিয়ে বরগুনায় পৌঁছেছেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে জেলা প্রশাসনের কাছে এসব লাশ
হস্তান্তর করা হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনার জেলা
প্রশাসক হাবিবুর রহমান। এর আগে দুপুরে মৃতদের লাশ বুঝে নিতে ঝালকাঠিতে যান
বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জালাল উদ্দীন এবং সহকারী কমিশনার
ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান।
পাশাপাশি বরিশাল
শেরে-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসার খোঁজখবর নিচ্ছেন
জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ভূমি) মো.
মাহফুজুর রহমান।
বরগুনা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৩৭
জনের লাশ আমরা বুঝে নিয়েছি। এর মধ্যে পাঁচ জনের লাশ শনাক্ত করেছেন স্বজনরা।
সকল প্রক্রিয়া শেষে ওই পাঁচ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
বাকিদের লাশ বিকৃত হয়ে যাওয়ায় চিনতে পারছেন না স্বজনরা। লাশের ময়নাতদন্ত
করা হয়েছে। স্বজনরা চিনতে না পারলে ডিএনএ পরীক্ষা করে এসব লাশ হস্তান্তর
করা হবে।
জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত ২২ জন
নিখোঁজের খসড়া তালিকা করেছি। আহত ও মৃতদের তালিকা তৈরি করতে গ্রামে গ্রামে
মাইকিং করা হচ্ছে। নিখোঁজদের তালিকা পূর্ণাঙ্গ হলে বলা যাবে বরগুনার কতজন
নিখোঁজ রয়েছেন। এরই মধ্যে ৩৭ জনের লাশ আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে ঝালকাঠি জেলা
প্রশাসন। এখানে বরগুনার অনেকের স্বজন রয়েছেন। তারা লাশ চিনতে না পারলে
ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে।
হাবিবুর রহমান বলেন, লঞ্চ দুর্ঘটনার ঘটনায়
বরগুনা জেলা প্রসাসনের পক্ষ থেকে জরুরি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এ ছাড়া
নিখোঁজ ও অগ্নিদগ্ধদের তালিকা করতে গ্রামে গ্রামে মাইকিং করা হচ্ছে।
ঝালকাঠির
সিভিল সার্জন ডা. রতন কুমার ঢালী বলেন, ঝালকাঠি হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে
৩৭ জনের লাশ বরগুনা জেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখানে লাশ
শনাক্ত করতে এসেছেন স্বজনরা। চার জনের লাশ স্বজনরা নিয়ে গেছেন। বাকিদের
চেহারা বিকৃত হয়ে যাওয়ায় শনাক্ত করতে পারছিলেন না। যাদের স্বজন নিখোঁজ
আছে, ডিএনএ পরীক্ষা করে লাশ শনাক্ত করা হবে। সে বিষয়টি আমরা মাথায় রেখেছি।
লাশ শনাক্তে স্বজনদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
সহকারী কমিশনার ও
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান বলেন, লাশগুলো নিয়ে আমরা বরগুনায়
পৌঁছেছি। পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পর লাশগুলো হস্তান্তর করা হবে।
বৃহস্পতিবার
দিবাগত রাত ৩টার দিকে নলছিটির সুগন্ধা নদীর পোনাবালীয়া ইউনিয়নের দেউরী
এলাকায় বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের ইঞ্জিন রুম থেকে আগুন লাগে। এ
ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে
শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭০ জন। ঢাকায়
পাঠানো হয়েছে ১৬ জনকে। পাশাপাশি আহত হয়েছেন শতাধিক।