ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশে ফেরার দিন তাঁর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে হবে
Published : Monday, 10 January, 2022 at 12:00 AM
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশে ফেরার দিন তাঁর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে হবেআজ ১০ই জানুয়ারি। বাঙালি জাতির জীবনে এক ঐতিহাসিক দিন। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের এই দিনে দেশে ফিরে আসেন স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হলেও প্রিয় নেতার অনুপস্থিতি কাঁটা হয়ে বিঁধে ছিল প্রত্যেক বাঙালির হৃদয়ে। তাই বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছিল বাঙালি জাতির কাছে এক পরম প্রাপ্তি। স্বাধীনতার আনন্দ সেদিন পরিপূর্ণতা পেয়েছিল। বাঙালি জাতি সেদিন ফিরে পেয়েছিল মাথা উঁচু করে বাঁচার আত্মবিশ্বাস।
স্বাধীনতার জন্য বাঙালির লড়াই দীর্ঘকালের। ব্রিটিশ শাসনের নাগপাশ থেকে মুক্তি পেতেও বহু মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। কিন্তু ব্রিটিশরা চলে গেলেও বাঙালি জাতির মুক্তি মেলেনি। ঘাড়ে চেপে বসে পাকিস্তানি শোষণ-শাসন। আবারও স্বাধীনতার স্থির লক্ষ্যে দেশের মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছে। তাদের মনে স্বাধীনতার বীজমন্ত্র বুনতে হয়েছে। এই কাজটি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ছিলেন সেই মহান পথপ্রদর্শক, যিনি জাতিকে একটি অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকে একটু একটু করে এগিয়ে নিয়েছিলেন। তাঁর নেতৃত্বগুণেই জাতি পরাধীনতার শৃঙ্খল ছিন্ন করে বেরিয়ে আসে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের ঐতিহাসিক জনসভায় বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ তাঁর সেই ডাকের অর্থ স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল পুরো জাতির কাছে। যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল দেশব্যাপী। এর মধ্যে ২৫শে মার্চ রাতে ঘুমন্ত বাঙালিদের ওপর কামান-মেশিনগান নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি বাহিনী। ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে, বাঙালি বিজয়ী হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু থেকে যান পাকিস্তানের কারাগারে। বিজয়ের আনন্দ অপূর্ণ থেকে যায়। তাই যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে পাকিস্তানের কারাগার থেকে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধুর জীবিত ফিরে আসার দিনটি হয়ে ওঠে আরেকটি বিজয়ের দিন। সাড়ে সাত কোটি বাঙালির হৃদয় সেদিন আনন্দে উদ্বেলিত হয়েছিল তাদের প্রাণপ্রিয় নেতাকে কাছে পেয়ে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই নেতা, যিনি বাঙালির চোখে স্বাধীনতার স্বপ্ন এঁকে দিতে পেরেছিলেন। আর সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য জীবন বাজি রাখতেও তিনি দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছিলেন। আজ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ভিন্ন এক তাৎপর্য বহন করছে। চলতি বছর পালিত হচ্ছে তাঁর জন্মশতবর্ষ। একই সঙ্গে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে। বঙ্গবন্ধু আমাদের মধ্যে না থাকলেও তাঁর নীতি ও আদর্শ আজও আমাদের কাছে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। তাই তাঁর আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে পারি আমরা। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে আমাদের অঙ্গীকার হোক, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলবই।