নতুন
করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারায় দেশে এক দিনে শনাক্ত কোভিড রোগীর
সংখ্যা আরও বেড়েছে; দৈনিক শনাক্তের হার পৌঁছেছে ৯ শতাংশের কাছাকাছি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ২
হাজার ৪৫৮ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মৃত্যু হয়েছে ২
জনের।
গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর একদিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল,
সেদিন ২ হাজার ৫৮৮ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। গত এক দিনে দেশে মোট ২৭
হাজার ৩৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তাতে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৮
দশমিক ৯৭ শতাংশ।
এর আগে গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে
শনাক্তের হার এর চেয়ে বেশি ছিল। সেদিন প্রতি ১০০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৯
দশমিক ০৭ জনের কোভিড পজিটিভ এসেছিল।
সোমবার ২ হাজার ২৩১ জনের মধ্যে
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নমুনা
পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
করোনাভাইরাসের
ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দাপটের সময় গতবছর জুলাই-অগাস্ট সময়ে দৈনিক শনাক্তের
হার ৩০ শতাংশও ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এরপর তা নামতে নামতে জুলাই মাসে ২ শতাংশের
নিচে চলে আসে।
ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত পরিস্থিতি অনেকটা
নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কিন্তু এরমধ্যেই বিশ্বে শুরু হয় ওমিক্রনের ত্রাস। ৩
জানুয়ারি দৈনিক শনাক্তের হার ৩ শতাংশ এবং ৬ জানুয়ারি তা ৫ শতাংশ ছাড়ায়।
নতুন
রোগীদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৯৮
হাজার ৩৮৯ জনে। গত একদিনে আরও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ২৮ হাজার
১০৭ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস।
সরকারি হিসাবে গত এক দিনে দেশে সেরে উঠেছেন ২৭৪ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৫১ হাজার ৩৮৭ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
এই হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ১৮ হাজার ৮৯৫ জন, যা আগের দিন ১৬ হাজার ৭১৩ ছিল।
গত
এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ১৯৭৯ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট
আক্রান্তের ৮০ শতাংশের বেশি। দেশের ১৩টি জেলায় একদিনে কারও করোনাভাইরাস
শনাক্ত হয়নি।
যে দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। তাদের বয়স
ছিল ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে একজন চট্টগ্রাম বিভাগের এবং একজন
খুলনা বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক
দিনে পরীক্ষা করা ২৭ হাজার ৩৯৯টি নমুনা মিলিয়ে এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ১
কোটি ১৭ লাখ ২৫ হাজার ৩৩৭টি নমুনা।
এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা অনুযায়ী শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
বাংলাদেশে
করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। গত বছর ৩১
অগাস্ট তা ১৫ লাখ পেরিয়ে যায়। এর আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক
বিস্তারের মধ্যে ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত
হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম
মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত বছর ৫ ডিসেম্বর কোভিডে
মোট মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে
মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫৪ লাখ ৮৭ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ৩১ কোটি ৬ লাখের বেশি রোগী।