অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারালেন সৌদিফেরত জাহিদুল
Published : Saturday, 15 January, 2022 at 12:00 AM
স্ত্রীর জন্য স্বর্ণের গয়না, মা ও পরিবারের সবার জন্য উপহার কিনেছিলেন সৌদি আরব প্রবাসী জাহিদুল ইসলাম। কিন্তু এসব কিছুই বাড়ি নিয়ে যেতে পারেননি তিনি। বাসে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সবই খুইয়েছেন। প্রায় ১৪ ঘণ্টা চিকিৎসার পর তাঁর জ্ঞান ফিরেছে।
জাহিদুল ইসলামের (২৮) বাড়ি বগুড়ার শেরপুর উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়নের ভদ্রপাড়া গ্রামে। সৌদি আরবে গাড়িচালক হিসেবে তিনি চাকরি করতেন।
জাহিদুলের স্ত্রী জান্নাতি খাতুন বলেন, তাঁর স্বামী বৃহস্পতিবার বিমানযোগে ঢাকায় ফেরেন। দুপুর ১২টায় ঢাকার উত্তরায় শাহ ফতেহ আলী নামের একটি বাসে ওঠেন বগুড়ায় আসার জন্য। পরে বাসের সুপারভাইজার মুঠোফোনে তাঁকে জানান, তাঁর স্বামী অচেতন হয়ে পড়েছেন। খবর পেয়ে তিনি জাহিদুলকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের শেরপুরের দশমাইল গিয়ে নিয়ে আসেন। চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। প্রায় ১৪ ঘণ্টা চিকিৎসার পর শুক্রবার সকাল ৯টায় জাহিদুলের জ্ঞান ফিরেছে।
জান্নাতি আরও বলেন, তাঁর স্বামীকে অচেতন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাস থেকে নামিয়ে দিলেও বাসের সুপারভাইজার তিনটি ব্যাগের একটিও দিতে পারেননি। ব্যাগগুলো কে বা কারা নামিয়ে নিয়েছেন বলে জানান তাঁকে।
আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাহিদুল বলেন, বাসে ওঠার পর জাকির হোসেন নামের অপর এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয়। তিনি তাঁর বাড়ি বগুড়ার আটাপাড়া বলে জানান। তিনি ওমান থেকে দেশে ফিরেছেন বলে জানান। জাকির হোসেনের সঙ্গে আরও দুজন ছিলেন। বাসের মধ্যে জাকিরের দেওয়া বিস্কুট খান তিনি। এরপর তিনি ঘুমিয়ে পড়েন।
জাহিদুল আরও বলেন, প্রায় আড়াই বছর সৌদি আরবে গাড়ির চালক হিসেবে চাকরি করেন। ছুটি নিয়ে তিনি দেশে ফিরে আসেন। আসার সময় স্ত্রীর জন্য স্বর্ণের গয়না, দুটি মুঠোফোন সেট, মা ও পরিবারের অন্যদের জন্য নতুন জামাকাপড় কেনেন। নগদ টাকাসহ তিনটি বড় ব্যাগে তাঁর প্রায় তিন লাখ টাকার জিনিস ছিল। অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে তিনি সর্বস্ব খুইয়েছেন। স্ত্রীর জন্য কেনা গয়না ও টাকা তিনি জামার মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিলেন । বাসের মধ্যে অজ্ঞান পার্টি তাঁর শরীর তল্লাশি করে গয়না ও নগদ টাকা বের করে নিয়েছে।
জাহিদুল অভিযোগ করেন, বাসটির যাঁরা যাত্রী ছিলেন তাঁদের, বিশেষ করে বাসের চালক, সুপারভাইজার ও হেলপারকে জিজ্ঞাসা করলেই এই অজ্ঞান পার্টির সঙ্গে কারা জড়িত, তা বের হয়ে আসবে। নইলে তাঁর মতো বিদেশ থেকে ফেরা লোকজন বারবার অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারাবেন।
শেরপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় জান্নাতি খাতুন বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের আলোকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।