শান্তিরঞ্জন ভৌমিক ||
(পূর্ব প্রকাশের পর)
উভয়দিক থেকেই বাংলা ভাষার উপর নির্যাতন চলল। পাকিস্তানে যারা উর্দু এবং ইংরেজি ভাষার পারদর্শী-তাদের কদর দেখা গেল ভারতে হিন্দী ও ইংরেজি ভাষার লালনে অভিজ্ঞদের সর্বভারতীয় আদর বাড়ল। বাংলা ভাষা বা প্রকৃত অর্থে বাঙালির কোন মূল্যায়ন হলো না। পাকিস্তান হলো সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের নিয়ে, ধর্মের ছত্রচ্ছায়ায় রাজনীতিকে লালন করার প্রয়াস যেমন একদিকে ছিল, শোষণের হাতিয়ার হিসেবে পশ্চিম পাকিস্তানীরা উর্দুকে চাপিয়ে বৃহত্তর বাঙালি জনগোষ্ঠীর অস্তিত্বকে অস্বীকার করার এক কূটজাল বিস্তার
করতে থাকে।
উর্দুই একমাত্র পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হতে যাচ্ছে এ আশংকায় ছাত্র-শিক্ষক ও সমাজের সচেতন শ্রেণি পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার প্রথম থেকেই তৎপর হয়। ৪৭ এর ১৭ই নভেম্বর বাংলা-ভাষাকে পূর্বপাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করার অনুরোধ জানিয়ে পূর্ববঙ্গের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর নিকট (খাজা নাজিমুদ্দিন) একটি স্মারকপত্র দাখিল করা হয়। এতে দেশের সর্বশ্রেণীর শত শত নাগরিক স্মারক পত্রে স্বাক্ষর করেন।
(দৈনিক আজাদ ১৮ই নভেম্বর ১৯৪৭)
৪৭ এর ৫ ডিসেম্বর করাচিতে শিক্ষা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ৬ ডিসেম্বর ঢাকার দৈনিক ‘মর্নিং নিউজ’ পত্রিকায় এ সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় ঢাকার ছাত্রদের মনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সংবাদটি ছিল নিম্নরূপ-‘শিক্ষা সম্মেলনে উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেলতলায় (আমতলার কিছু দূরে) এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঢাকা কলেজ, জগন্নাথ কলেজ সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা দলে দলে অংশ গ্রহণ করে। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এটাই ছিল প্রথম ছাত্রসভা।
৭ ডিসেম্বর ‘পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষা সমস্যা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ ঘোষণা করেন “উর্দু কিছুতেই বাংলার (পূর্ব-পাকিস্তানের) রাষ্ট্রভাষা হতে পারে না।”
স্কুল কলেজের শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে উর্দু প্রচলনের প্রস্তাবকে এ সময় ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ কঠোর ভাষায় সমালোচনা করে ‘পূর্ব পাকিস্তানের ভাষা সমস্যা’ শীর্ষক প্রবন্ধ লিখেন-
“যাহারা বাংলাদেশে বাংলা ভাষাকে ছাড়িয়া কিংবা বাংলার স্কুল কলেজে শিক্ষার মাধ্যম (মিডিয়াম) রূপে অথবা বাংলাদেশের আইন আদালতের ব্যবহার্য ভাষারূপে উর্দুর পক্ষে ওকালতি করিতেছেন আমি তাহাদিগকে কাণ্ডজ্ঞানবিহীন পণ্ডিতমুর্খ ভিন্ন আর কিছুই মনে করিতে পারি না।”
(দৈনিক আজাদ ২১ ডিসেম্বর ১৯৪৭)
ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে ৪৮ সালের ১১ই মার্চের আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম। ৪৮ এর ১১ মার্চ রাষ্ট্রভাষার দাবী নিয়ে যে সংগ্রাম শুরু হয় ৫২-এর ২১ ফেব্রুয়ারিতে তা পূর্ণতা পায়।
উল্লেখ্য, ৪৮ এর ১১ মার্চই ছিল ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে প্রথম সংগঠিত গণবিক্ষোভ। এ আন্দোলন তৎকালীন সরকারকে রাষ্ট্রভাষার স্বপক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেছিল। সাত দফা দাবি সম্বলিত চুক্তিপত্রের খসড়া নিম্নরূপ ছিল-
১। পূর্ববঙ্গ পরিষদে চলতি অধিবেশনে বাংলাকে পূর্ববঙ্গের ভাষা এবং সর্বস্তরের শিক্ষার মাধ্যম হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রস্তাব পাশ করতে হবে।
২। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার সুপারিশ সম্বলিত প্রাদেশিক পরিষদের গৃহীত একটি প্রস্তাব কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠাতে হবে।
৩। আন্দোলন চলাকালে গ্রেপ্তারকৃত সকল রাজবন্দীর বিনাশর্তে মুক্তি দিতে হবে।
৪। আন্দোলনে সমর্থনদানকারী পূর্ববঙ্গ এবং কোলকাতা হতে প্রকাশিত সকল পত্রিকার ওপর হতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে।
৫। পুলিশ এবং দায়িত্বে নিয়োজিত কমাণ্ডিং অফিসারগণের সকল নির্যাতনমূলক কার্যকলাপের জন্য উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি তদন্ত দল গঠন করতে হবে।
৬। আন্দোলন অংশগ্রহণকারী সকলের ওপর হতে গ্রেফতারী পরওয়ানা প্রত্যাহার করে নিতে হবে এবং কারো বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না।
৭। সরকারিভাবে ঘোষণা করতে হবে যে, এ আন্দোলন গভীর দেশপ্রেমে উজ্জীবিত। প্রেস নোটের মাধ্যমে এবং প্রধানমন্ত্রীকে তা ঢাকা বেতার থেকে তাঁর ভাষণে বলতে হবে।
এই দাবিনামায় খাজা নাজিমুদ্দীন বাধ্য হয়ে লিখেন-
৮। ‘রাষ্ট্র ভাষা সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনার পর আমি (খাজা নাজিমুদ্দীন) এ ব্যাপারে নি:সন্দেহ হয়েছি যে, এ আন্দোলন রাষ্ট্রের দুশমনদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়নি।
[বিশেষ সাক্ষাৎকার: কমরুদ্দীন আহমদ, ঢাকা ডাইজেস্ট
জুন ৭৯/মিল্লাত ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩]
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর ১৯৪৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর মুহম্মদ আলী জিন্না বলেছিলেন, ‘ধর্ম ব্যক্তির নিজস্ব ব্যাপার, তার সঙ্গে রাষ্ট্রীয় কাজকর্মের কোন যোগ নেই। তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে, এই মূলনীতি নিয়ে পাকিস্তানের সূচনা হতে যাচ্ছে যে, ধর্মবর্ণমত নির্বিশেষে সকলে রাষ্ট্রের সমান নাগরিক এবং আশা প্রকাশ করেছিলেন যে, কালে-ধর্মীয় অর্থে নয়, রাজনৈতিক অর্থে-হিন্দু আর হিন্দু থাকবে না, মুসলমানও মুসলমান থাকবে না। তিনি বলেছিলেন,-‘পাকিস্তান হতে যাচ্ছে ইসলামি আদর্শ ভিত্তিক একটি মুসলিম রাষ্ট্র। এটি ধর্মীয় রাষ্ট্র হতে যাচ্ছে না। ইসলামে নাগরিকতার ক্ষেত্রে কোন ভেদাভেদ নেই।’ কিন্থ পরবর্তীতে জিন্নার সহকর্মী ও উত্তরসূরীরা এই আদর্শে দেশ শাসন করেন নি।
১৯৪৮ সালে ২৬ ফেব্রুয়ারিতে গণপরিষদে দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে বাংলা ব্যবহারের প্রস্তাব করে এবং প্রসঙ্গক্রমে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষারূপে বাংলার দাবির যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন, তার জবাবে প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান বলেছিলেন, “পাকিস্তান একটি মুসলিম রাষ্ট্র এবং এর সাধারণ ভাষা হবে মুসলিম জাতির ভাষা।” ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের প্রস্তাবটি ছিল নিম্নরূপ-
“রাষ্ট্রভাষা সেই ভাষারই হওয়া উচিত, রাষ্ট্রের অধিকাংশ মানুষ যে ভাষা ব্যবহার করে এবং আমি মনে করি যে, বাংলা ভাষাই আমাদের রাষ্ট্রের লিংগুয়া ফ্রাংকা। যদি ২৯নং বিধিতে ইংরেজি ভাষা সম্মানজনক স্থান পেতে পারে- যদি পরিষদের কার্যাবলী উর্দু অথবা ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে চলতে পারে তা হলে বাংলা যা চার কোটি চল্লিশ লক্ষ লোকের ভাষা কেন সম্মানজনক স্থান পাবে না? কাজেই এ ভাষাকে প্রাদেশিক ভাষা হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয়। এ ভাষাকে রাষ্ট্রের ভাষারূপে বিবেচনা করা উঠিত। সুতরাং আমি প্রস্তাব করি যে, ২৯ নং বিধিতে ইংরেজী শব্দটির পরে ‘অথবা বাংলা’ কথাটি যোগ করা হোক।”
ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের সংশোধনী প্রস্তাবটি সরকারী সদস্যদের বিবোধিতার মুখে অগ্রাহ্য হয়।
১৯৪৮ সালে ১৮ মার্চ মুহম্মদ আলী জিন্নার ঢাকায় আগমন এবং ২১ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের ভাষণে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দেয়াই সদ্য প্রতিষ্ঠিত নবীন পাকিস্তান রাষ্ট্রের শাসকবর্গের মানসিকতার বহি:প্রকাশ ঘটে। সেদিন যাঁরা প্রকাশ্যে তার প্রতিবাদ করেছিলেন, তাঁরা আজ ইতিহাসের পাতায় প্রবাদপুরুষ। আজকের বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ছিলেন অপ্রতিহত প্রতিবাদী ব্যক্তিত্ব। তাঁর সহযোগী ছিলেন-অলিআহাদ, মোহাম্মদ তোয়াহা, আবদুল মতিন, অধ্যক্ষ আবুল কাসেম, গাজীউল হক সহ অনেক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। বুদ্ধিজীবীরা মুক্তকণ্ঠে সমর্থন জানালেন। গণ পরিষদে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত সংশোধনী প্রস্তাবে বাংলা ভাষাকে স্বীকৃতি প্রদানের পক্ষে বক্তব্য রাখায়, তাঁকে ভারতের দালাল, পাকিস্তান ভাঙ্গার ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত করার পক্ষে একশ্রেণী কায়েমী স্বার্থন্বেষী প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী উঠে পড়ে লেগে যায়। তৎকালীন পূর্ববাংলার জনসাধারণ বুঝতে পারে-
এরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়।
তারা মোদের মায়ের ভাষা কাইড়া নিতে চায়।
৫২-এর ভাষা আন্দোলন শুরু হয় ২৬শে জানুয়ারি ১৯৫২ সালে পল্টনে খাজা নাজিমুদ্দীনের উর্দুর স্বপক্ষে ঘোষণাকে কেন্দ্র করে। ‘উর্দুই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে’- এ ঘোষণা ছিল ৪৮ এর ১৫ মার্চের গৃহীত রাষ্ট্রভাষা চুক্তির প্রত্যক্ষ খেলাপ। এ ঘোষণার প্রতিবাদে ৩০ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণ ধর্মঘট পালিত হয়, প্রতিবাদ সভা হয়।
৪ঠা ফেব্রুয়ারি সর্বদলীয় পরিষদের উদ্যোগে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবীতে ঢাকা শহরে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং ৪ঠা ফেব্রুয়ারি থেকে ২০শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাধারণ ধর্মঘটের অব্যাহত প্রস্থতি চলে। ২১শে ফেব্রুয়ারি সাধারণ ধর্মঘটের জন্য প্রচারপত্র বিলি হয়। প্রচারপত্রে লিখা ছিল-
২১শে ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষার দাবীতে সাধারণ ধর্মঘট ঃ
- স্কুলে, কলেজে, বাজারে সাধারণ ধর্মঘট পালন করুন।
- দলে দলে শোভাযাত্রায় যোগদান করুন।
- বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা এবং পূর্ববাংলার সরকারী ভাষা করনের দাবিতে পূর্ববাংলার সর্বত্র এক সঘবদ্ধ এবং জাগ্রত আন্দোলন গড়ে তুলুন।
- আরবী হরফে বাংলা লেখার উদ্ভট সরকারী পরিকল্পনাকে ব্যর্থ করুন।
- সংস্কার এবং ঐকিকতার নামে বাংলা ভাষাকে হত্যা করবার প্রচেষ্টাকে যুক্ত আন্দোলনদ্বারা ব্যর্থ করুন।
- বিনা বিচারে আটক রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তির দাবীতে সাড়া দেন।
[বদরুদ্দীন উমর-পূর্ববাংলার ভাষা আন্দোলন ও
তৎকালীন রাজনীতি-২য় খণ্ড-পৃ:৪০০.]
সরকার ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে একমাসের জন্য ঢাকা শহরের সর্বত্র ধর্মঘট, সভা, শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারী করেন। অকুতোভয় ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে এবং প্রতিবাদী মিছিল বের করে। পুলিশ মিছিল ঠেকাতে কাঁদানেগ্যাস, লাঠি চার্জ ও গুলি চালায়। তাতে প্রাণ হারায় সালাউদ্দিন, বরকত, সালাম, রফিক, জব্বর ও আরো অনেকে। বুকের তাজা রক্তের আখরে সৃষ্টি হয় ভাষা আন্দোলনের আরেক ইতিহাস।
তখন প্রাদেশিক পরিষদের অধিবেশন চলছিল। এ ঘটনায় অধিবেশনে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। আবদুর রশীদ তর্কবাগিশ সহ কয়েকজন পরিষদ সদস্য পদত্যাগ করে ছাত্র জনতার মিছিলে যোগদান করেন। ভাষার দাবিতে, বাঁচার দাবিতে, অস্তিত্বের দাবিতে বাঙালি জেগে ওঠে। গ্রামে গঞ্জে শহরে বন্দরে ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’ শ্লোগানে সারা পূর্ববাংলা তথা বাংলাদেশ প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। এক অভূতপূর্ব গণজাগরণ। বাঙালি ভাষার দাবিতে জাগ্রত হয়-প্রাণ দিতে শিখে, প্রতিবাদের ভাষা উচ্চারণে প্রত্যয়ী হয়। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এক গণজোয়ার সৃষ্টি হয়। উন্মত্ত পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের ৯২ (ক) ধারায় নিরাপত্তা-আইনে গ্রেপ্তার করতে থাকে। কিন্থ ভাষার দাবিকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী বাঙালির এই দাবী মানতে বাধ্য হয়।
ইতিহাস বলে- পৃথিবীতে ধর্মের জন্য সংঘাতে যত রক্তপাত ঘটেছে, দুটি বিশ্বযুদ্ধসহ কালে কালে যুদ্ধেও এত রক্ত ঝরেনি। আবার মাতৃভাষার অধিকার স্থাপনের জন্য কোনোকালে কোনোজাতি রক্ত দিতে হয়নি। কিন্থ বাঙালি দিয়েছে। বাংলাভাষা তথা আমাদের মাতৃভাষা রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ভাষা। যদিও পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী নীতিগত ভাবে বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হলো-কিন্থ ষড়যন্ত্রের অক্টোপাস বিস্তার করেই চলল। (চলবে...)