Published : Saturday, 26 February, 2022 at 12:00 AM, Update: 26.02.2022 12:35:05 AM
নিজস্ব
প্রতিবেদক: গভীর সমুদ্রে ইঞ্জিন বিকল ও আগুন লাগায় সেন্ট মার্টিনে না গিয়ে
সাড়ে ১৩ ঘণ্টা পর চট্টগ্রামে ফিরে এসেছে প্রমোদতরী ‘বে ওয়ান ক্রুজ’।
সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকবাহী এ জাহাজে অন্যান্যদের সাথে যাত্রী হিসেবে
ছিলেন সাবেক রেলপথমন্ত্রী ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ
সম্পাদক মুজিবুল হক মুজিবসহ তার পরিবার। তবে তারা নিরাপদ ও সুস্থ আছেন।
রোটারী ক্লাব অব কুমিল্লা লালমাইয়ের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সেন্ট মার্টিন
যাচ্ছিলেন মুজিবুল হক মুজিব ।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টার পর এই ঘাট থেকেই
আটশর বেশি যাত্রী নিয়ে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে গিয়েছিল ‘বে ওয়ান
ক্রুজ’। রাত ১২টার দিকে জাহাজটির ইঞ্জিন কক্ষে আগুন লাগে এবং সেখান থেকে
ধোঁয়া বের হতে থাকে। কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেড পরিচালিত জাহাজটিকে
বন্দরের টাগবোট ‘কাণ্ডারি-১০’ এর সহযোগিতায় শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে
পতেঙ্গা ওয়াটার বাস টার্মিনালে ভেড়ানো হয়। তারপর যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া
হয়। জাহাজটিতে প্রায় ৯ শ’ যাত্রী ছিলেন বলে জানা গেছে।
জাহাজটির যাত্রী
আমিন আহমেদ রায়হান বলেন, “জাহাজ ছাড়ার পর যাত্রীরা ওপরের ডেকে জড়ো
হয়েছিলেন। সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছিল। রাত ১২টার পর আমরা ইঞ্জিন
রুমে আগুন লাগর কথা জানতে পারি। নিচে নামার পর সেখানে ধোঁয়া দেখতে পাই।”
তখন
যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে জানিয়ে তিনি বলেন, “জাহাজের লোকজন ফায়ার
ডিসটিংগুইশার দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। একটি ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায় বলে
আমরা জানতে পারি। আতঙ্কিত যাত্রীরা তখন নিচে নেমে গিয়ে লাইফ জ্যাকেট পরতে
শুরু করে। বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়া চ্যানেল এলাকায় জাহাজটি একপ্রকার দাঁড়িয়ে
ছিল তখন।”
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের টাগবোট কাণ্ডারি-১০
ঘটনাস্থলে যায় এবং বে ওয়ান ক্রুজকে কুতুবদিয়া চ্যানেল থেকে টেনে চট্টগ্রাম
ফিরিয়ে আনে।
বে ওয়ান ক্রুজের ইঞ্জিন রুমের এক কর্মকর্তা বলেন, জাহাজটি
চ্যানেল এলাকায় যাবার পর ইঞ্জিনে সমস্যা দেখা দেয়। জাহাজের একটি ইঞ্জিনের
এয়ার লক হয়েছিল। জাহাজে বড় কোনো সমস্যা হয়নি। আমরা সেন্টমার্টিন না গিয়ে
চট্টগ্রাম ফিরে এসেছি।
গত বছর ১৪ জানুয়ারি কর্ণফুলি শিপ বিল্ডার্স
লিমিটেডের মালিকানাধীন প্রমোদতরী ‘বে ওয়ান ক্রুজ’ চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি
সেন্টমার্টিন রুটে যাত্রী পরিবহন শুরু করে।
৪৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের ও ৫৫ ফুট
প্রস্থের জাহাজটির উত্তাল সমুদ্রে চলার সক্ষমতা রয়েছে। ঘণ্টায় ২৪ নটিক্যাল
মাইল বেগে চলতে সক্ষম জাহাজটি ৩০ বছর আগে জাপানে তৈরি হয়েছিল। বাংলাদেশের
বিদ্যমান আইনে ২৫ বছরের পুরনো জাহাজ সাগরে ভাসানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
জাহাজটি
ভাসানোর আগে গত বছর সংবাদ সম্মেলনে কর্ণফুলি শিপ বিল্ডার্রসের মালিক এম এ
রশিদ বলেছিলেন, “এই আইন শুধু আমাদের দেশে আছে। বিদেশে প্যাসেঞ্জার জাহাজ
৫৫-৬০ বছরের পুরনো হলেও চলে। কার্গো জাহাজ ২৫ বছরের পুরনো হলে নষ্ট হয়ে
যায়। কিন্তু প্যাসেঞ্জার জাহাজে সমস্যা হয় না।”