বঙ্গবন্ধুর ভাষণ গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল
Published : Tuesday, 8 March, 2022 at 12:00 AM
এবিএম আতিকুর রহমান বাশার ঃ
পৃথিবির বুকে একমাত্র নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ৭মার্চের একটি ভাষণে গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। যে ভাষণটি ছিল পাকিস্তানী শাসক ও শোষকদের বিরুদ্ধে বাঙ্গালী জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার জাদুকরী মূলমন্ত্র। যে মন্ত্রে দীক্ষা নিয়ে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ এক রক্ষক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ৭১’র মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের ২৩ বছরের গোলামির দুঃশাসন ও শোষণের শৃংখল ছিন্ন করে দেশ মাতৃকাকে মুক্ত করেছিল।
সোমবার বিকেলে উপজেলার ভানী ইউনিয়ন আ’লীগের উদ্যোগে ইটাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যদানকালে দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগ’র সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আবুল কালাম আজাদ ওই বক্তব্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ঢাকা রেইসকোর্স ময়দানে মাত্র ১৮ মিনিটের ভাষনে গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। উত্তাল জনসমুদ্র যখন স্বাধীনতার ঘোষণা শুনতে উদগ্রীব, তখন বঙ্গবন্ধু উচ্চারণ করেন তার চূড়ান্ত আদেশ, ‘তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো। মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেবো- এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো, ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
বঙ্গবন্ধুর সেই ৭ মার্চের ভাষণটি আজ বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃত। ৭ই মার্চের ভাষণকে ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড'-এর স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। ২০১৭সালের ৩০ অক্টোবর ফ্রান্সের প্যারিসে এক অধিবেশনে ইউনেস্কো কর্তৃক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্তিকরণে ওয়ার্ল্ড ডেমোক্রেসি হেরিটেজের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি ঘোষণা দিয়েছিলেন ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা।
পৃথিবীর বুকে একমাত্র একজন নেতা একটি ভাষণে গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল, যেটা বাঙালির মুক্তির সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ, যে ভাষণ পুরো জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করে তুলেছিল, শক্তি জুগিয়ে ছিল প্রতিরোধ যুদ্ধের, ৯ মাস সেই সশস্ত্র সংগ্রামের পর আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলী আশরাফের সঞ্চালনায় উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগ’র সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগ’র সদস্য কালিপদ মজুমদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দিন, উপজেলা যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান ভূঁইয়া, সদস্য মোঃ লুৎফর রহমান বাবুল ভূঁইয়া, দেবীদ্বার পৌরসভার কমিশনার মোঃ মজিবুর রহমান।
অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন, সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ হুমায়ুন কবির, সাবেক ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি ডাঃ হাজী মোঃ জামাল ভূঁইয়া, যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক, আ’লীগ নেতা আলম সরকার, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আমির হোসেন আমু প্রমুখ।
বক্তারা আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর সেই জাদুকরী ভাষণ দেশের জনগণের মাঝে এমনভাবে প্রভাব বিস্তার করেছিল যে, সেই সময়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালনকারী সব জনগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ তাদের মনোজাগতিক উদ্দীপনার অংশ হিসাবে পরিগণিত হয়েছিল। আর এ কারণেই এ ভাষণের গুরুত্ব অনুধাবন করে ইউনেস্কো কর্তৃক মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার কমিটি চেয়ারপারসন থেকে শুরু করে সবাই একবাক্যে বঙ্গবন্ধুর এই ঐতিহাসিক ভাষণকে স্বীকৃতির জন্য নির্বাচিত করে।