কুমিল্লার হোমনায় অপহরণের পর মুক্তিপণ না পেয়ে জাহিদ হাসান নামে এক স্কুল ছাত্রকে হত্যার দায়ে তিন বন্ধুর আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) দুপুর দুইটায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৪ এর বিচারক মিসেস সেলিনা আক্তার এই রায় দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেলা জজ আদালতের এপিপি মুজিবুর রহমান বাহার।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- হোমনা উপজেলার ভিটিকালমিনা গ্রামের মজিবুরের ছেলে জিহাদ হোসেন (২৪), হাফেজ হোসেনের ছেলে এমদাদ হোসেন (২২) ও মুরাদনগর উপজেলার শাহ জালালের ছেলে খাইরুল ইসলাম (২২)। রায় ঘোষণার সময় আসামি খাইরুল ইসলাম আদালতে উপস্থিত ছিল। অপর দুই জন এমদাদ হোসেন ও জিহাদ হোসেন হাইকোর্ট থেকে জামিনের পর পলাতক রয়েছেন।
হত্যাকাণ্ডের শিকার জাহিদ হাসান হোমনা উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের সাপলেজি গ্রামের ব্যবসায়ী মো. আক্তারুজ্জামানের ছেলে ও দুলালপুর চন্দ্রমণি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিলো।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের গত ৪ নভেম্বর কুমিল্লার হোমনা উপজেলার সাপলেজী গ্রামের মো. আক্তারুজ্জামানের ছেলে ও দুলালপুরচন্দ্র মনি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র মো. জাহিদ হাসানকে বাড়ির পাশ থেকে কৌশলে অপহরণ করে তারই তিন বন্ধু। সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজির পরদিন ৫ নভেম্বর হোমনা থানায় নিখোঁজের পরিবার একটি ডায়েরি করে। এরপর অপহরণকারীরা ৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় নিহতের চাচা মাসুদ রানার মোবাইলে কল দিয়ে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। চাচা মাসুদ রানা জাহিদের পরিবারকে বিষয়টি জানালে তারা টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে এবং বিষয়টি থানা পুলিশকে জানায়। এরপর মোবাইল ফোনের কল লিস্টের সূত্রধরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে জিহাদ হোসেন, এমদাদ ও খাইরুলকে আটক করে পুলিশ।
আটকের পর তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা মুক্তিপণ দাবি ও জাহিদ হাসানকে হত্যা করে স্কুলের সেপটিক ট্যাংকিতে ফেলে রাখে বলে ৩ ঘাতক পুলিশকে জানায়। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, দুলালপুর চন্দ্র মনি উচ্চ বিদ্যালয়ের সেপটিক ট্যাংকির ভেতর থেকে স্কুল ছাত্র জাহিদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
মামলার রায়ের পর হত্যাকাণ্ডের শিকার জাহিদের বাবা ও মামলার বাদী মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, আমার ছেলেকে তারা নৃশংসভাবে মেরেছে। আমি এই রায়ে সন্তুষ্ট নই। আমি তাদের মৃত্যুদণ্ড আশা করেছিলাম।