ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়তে বিদেশি বিশেষ করে ইউরোপীয় দেশগুলোর নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন ভলোদিমির জেলেনস্কি।
এজন্য একটি ‘আন্তর্জাতিক বাহিনী’ প্রতিষ্ঠাও করেছে দেশটি। গত সপ্তাহ পর্যন্ত এতে ১৬ হাজার বিদেশি স্বেচ্ছাসেবী নাম লিখিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলেনস্কি, তবে এদের মধ্যে কতজন ইউক্রেনে পৌঁছেছে তা স্পষ্ট করেননি তিনি।
এরকম ২০ বিদেশি যোদ্ধা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স, যাদের অধিকাংশই বলছেন, ইউক্রেন এই বিদেশিদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা, অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করা ও যুদ্ধক্ষেত্রে মোতায়েনে হিমশিম খাচ্ছে।
এদের মধ্যে যাদের যুদ্ধ অভিজ্ঞতা খুব সামান্য কিংবা একেবারেই নবীন, রুশ বাহিনীর ধারাবাহিক, আতঙ্কজনক গোলাবর্ষণ চলছে এমন যুদ্ধক্ষেত্রগুলোতে তাদের মূল্য ‘নেই বললেই চলে’ বলে মনে করছেন সমর বিশ্লেষকরা। এদেরকে ‘বুলেট গ্রহীতা’ বলে অ্যাখ্যা দিয়েছেন ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর এক সাবেক কর্মকর্তা।
যদিও ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে লিভভে আগত বিদেশি স্বেচ্ছাসেবীদের দায়িত্বে থাকা ইউক্রেনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রোমান শেপেলায়েক জানান, তাদের বিদেশি যোদ্ধাদের অভ্যর্থনা, প্রশিক্ষণ ও যুদ্ধক্ষেত্রে মোতায়েন কার্যক্রম এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে, তবে সামনের দিনগুলোতে এই প্রক্রিয়া আরও মসৃণ হবে।
ইউক্রেনে আসা বিদেশি এ ‘যোদ্ধাদের’ অনেককেই যে কারণটি আকৃষ্ট করছে তা হল- তাদের দৃষ্টিতে স্বৈরতান্ত্রিক একটি শক্তি বিনা উসকানিতে গণতান্ত্রিক একটি দেশে হামলা চালাচ্ছে, এটি থামাতে তারা এসেছে।
এদের অনেকেই আবার ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধ করেছেন, ইউক্রেনে এসেছেন আগের অভিজ্ঞতা ঝালাই করে নিতে, যা তাদের নিজ নিজ দেশের সরকার কাজে লাগাচ্ছে না বলেই মনে করছেন তারা।
ইউক্রেনের হয়ে যুদ্ধ করতে যাওয়া বিদেশিদের মধ্যে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর অভিজাত প্যারাসুট রেজিমেন্টের কয়েক ডজন সাবেক সদস্যও আছে বলে রেজিমেন্টটির সাবেক এক সেনা জানিয়েছেন। আরও কয়েকশ সেনা পথে রয়েছে, বলেছেন তিনি। তবে তাদের মোট কতজন ইউক্রেনে যাচ্ছে, তা নিশ্চিত হতে পারেনি রয়টার্স।
ইউক্রেনে স্বেচ্ছাসেবী বাহিনীতে সদস্যের সংখ্যা কম না হলেও জেভেলিন এবং এনএলএডব্লিউ অ্যান্টি-ট্যাংক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে পারে এমন বিশেষজ্ঞের সংখ্যা কম। দক্ষ সৈনিকদেরও এসব সঠিকভাবে ব্যবহার করতে শিখতে কয়েক মাস লেগে যায়।