কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার নাজিরা বাজার এলাকায় তিসা পরিবহনের বাসের ধাক্কায় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত করপোরাল মো. দিদার হোসেন (৩৮) নিহতের ঘটনায় বাসচালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিশ্রামহীনভাবে গাড়ি চালানো ও দ্রুতগতির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
রবিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে নিজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত মো. বাবুল (৩০) দেবিদ্বার উপজেলার দক্ষিণ মিল্লাবাড়ি এলাকার মৃত ইদ্রিস মিয়ার ছেলে। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১১ কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. সাকিব হোসেন।
র্যাব জানায়, গত বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) সকালে বুড়িচং উপজেলার নাজিরা বাজার এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে তিসা পরিবহনের বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেল আরোহী সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত করপোরাল মো. দিদার হোসেন গুরুতর আহত হন। তাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। দুর্ঘটনার পর বাসটি রেখে পালিয়ে যান চালক। এ ঘটনায় ময়নামতি হাইওয়ে থানার এএসআই মো. আব্দুল্লাহ বাদী হয়ে বুড়িচং থানায় মামলা করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বাসচালককে গ্রেফতার করে র্যাব।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে র্যাব জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোটরসাইকেলকে পেছন থেকে ধাক্কা দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন বাসচালক বাবুল। সেই সঙ্গে বলেছেন, ড্রাইভিং পেশা শুরুর আগে ছয় মাস বাসের হেলপার ছিলেন। কোনও ধরনের প্রশিক্ষণ ছাড়াই গত ১২ বছর ধরে কুমিল্লা-ঢাকা রুটে ড্রাইভিং করে আসছেন। ১২ বছরের ড্রাইভিং পেশার প্রথম সাত বছর লাইসেন্স ছিল না। পরবর্তী সময়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স নেন।
গত ১০ মার্চ সকালে যাত্রী নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থেকে ঢাকায় রওনা দেন। ঘটনার আগের দিন রাতে পর্যাপ্ত না ঘুমানোর কারণে তার চোখে-মুখে ক্লান্তি ছিল। এজন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে ঢাকায় পৌঁছাতে পারলে বিশ্রামের পর আরেকটি ট্রিপ নিয়ে ওই দিনই ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফেরার কথা ছিল। এসব কারণে প্রতিযোগিতা করে গাড়ি চালিয়েছেন।
মেজর সাকিব হোসেন আরও বলেন, বিশ্রামহীন গাড়ি চালানো, দ্রুতগতির কারণে নাজিরা বাজার এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে ইউটার্নের সময় মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা দিদার হোসেনকে দেখেও ব্রেক করেননি চালক। এজন্য ধাক্কা লেগে দিদার হোসেন নিহত হন। স্থানীয়দের ভয়ে বাস রেখে পালিয়ে যান চালক। তাকে গ্রেফতার করে বুড়িচং থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।