হাসলুর স্ত্রী মনোয়ারা গৃহবধূ। তাদের সাত ও পাঁচ বছরের দুই ছেলে রয়েছে। বর্তমানে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে বছর আঠাশের অচিন্ত্যর ডায়ালিসিস চলছে। তার স্ত্রী রিতা গৃহবধূ। বছর খানেক আগে দুইটি কিডনি নষ্ট হতে শুরু করে। মাসখানেক আগে চিকিৎসকেরা পেশায় ঋণদান সংস্থার এজেন্ট অচিন্ত্য বিশ্বাসকে জানান, তাঁকে বাঁচাতে হলে দ্রুত কাউকে একটি কিডনি দিতে হবে। সে কথা শুনে এগিয়ে আসেন হাসলু মহম্মদ। বছর ছয়েক আগে কর্মসূত্রে বন্ধুত্ব। পেশায় হাট ব্যবসায়ী বছর একত্রিশের হাসলুর রক্তের গ্রুপও মিলে যায় বন্ধুর সঙ্গে। শেষ পর্যন্ত অচিন্ত্যকে বাঁচাতে স্বাস্থ্য দফতরের কাছে নিজের একটি কিডনি দেওয়ার আবেদন করলেন হাসলু।
উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের বরুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ঢেলপির এলাকার বাসিন্দা হাসলুর। অচিন্ত্যর বাড়ি জেলার কালিয়াগঞ্জ থানার মোস্তাফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের কুনোরে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, কেউ স্বাস্থ্য দফতরের কাছে স্বেচ্ছায় কিডনি দেওয়ার জন্য আবেদন করলে, দাতা টাকার বিনিময়ে কিডনি দিতে চাইছেন কিনা, সেই বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করে। রায়গঞ্জ পুলিশ জেলা কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসলু বিনা স্বার্থে বন্ধুকে বাঁচাতে কিডনি দিতে চান বলে তদন্তে জানা গিয়েছে। ফলে তার কিডনি দিতে আইনি কোনো বাধা নেই। দ্রুত তদন্ত রিপোর্ট স্বাস্থ্য দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার সানা আখতার বলেন, হাসলু ও অচিন্ত্যর বন্ধুত্ব সম্প্রীতির দৃষ্টান্তমূলক নজির তৈরি করবে।
হাসলুর স্ত্রী মনোয়ারা গৃহবধূ। তাদের সাত ও পাঁচ বছরের দুই ছেলে রয়েছে। বর্তমানে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে বছর আঠাশের অচিন্ত্যর ডায়ালিসিস চলছে। তার স্ত্রী রিতা গৃহবধূ। তাদের আট বছরের একটি ছেলে রয়েছে। বছর ছয়েক আগে কালিয়াগঞ্জের ওই ঋণদানকারী সংস্থায় এজেন্টের কাজে যোগ দেন হাসলু। তখন থেকেই তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। হাসলু বলেন, আমি অচিন্ত্যকে একটি কিডনি দিলে মরব না। বরং আমার একটি কিডনি পেলে অচিন্ত্য প্রাণে বেঁচে যাবে। ওর পরিবার ভেসে যাবে না। তাই জাতপাত দূরে সরিয়ে বিনা স্বার্থে বন্ধুকে বাঁচাতে আমি মাসখানেক আগে স্বাস্থ্য দফতরের কাছে ওকে কিডনি দেওয়ার আবেদন করেছি।
অচিন্ত্য বলেন, হাসলু আমাকে বাঁচাতে বিনা স্বার্থে ওর একটি কিডনি দিতে চেয়েছে। ওর কাছে আমি ও আমার পরিবার চিরকৃতজ্ঞ। হাসলুর বাবা পেশায় চায়ের দোকানি ফয়ম মহম্মদের বক্তব্য, আমার ছেলে মানুষকে বাঁচাতে মনুষ্যত্বের ধর্ম পালন করছে।