রাজধানী ও এর আশপাশ এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। আক্রান্তদের একটি বড় অংশ শিশু। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ সময় শিশুর প্রতি বাড়তি নজর রাখা দরকার।
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) মহাখালী হাসপাতালে এখন প্রতিদিন এক হাজারের বেশি ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হচ্ছে। তাদের একটি অংশ শিশু। এদের অনেকের বয়স পাঁচ বছরের কম।
মঙ্গলবার আইসিডিডিআরবির পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডায়রিয়া থেকে দূরে রাখতে এ সময় শিশুকে ফিডারে কিছুই খাওয়ানো যাবে না। তবে শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে তাদের জন্য আলাদা পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, শিশুর ডায়রিয়া হলে প্রতিবার পায়খানার পর শিশুর যত কেজি ওজন তত চা-চামচ বা যতটুকু পায়খানা হয়েছে, আনুমানিক সেই পরিমাণ খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। শিশু বমি করলে ধীরে ধীরে খাওয়াতে হবে, যেমন তিন বা চার মিনিট পর পর এক চামচ করে খেতে দিতে হবে। খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি দুই বছরের কম বয়সী শিশু অবশ্যই মায়ের দুধ খাবে। শিশুকে কোনো অবস্থাতেই মায়ের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করা যাবে না।
ডায়রিয়া থেকে সুস্থ হওয়ার পরও কিছু করার আছে। ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুকে প্রতিদিন ১টি করে জিংক ট্যাবলেট পানিতে গুলিয়ে ১০ দিন খাওয়াতে হবে।
অনেক শিশু তীব্র ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এসব শিশুর ডায়রিয়া পরিস্থিতির উন্নতি না হলে তাদের দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিতে হবে।
আইসিডিডিআরবি সূত্র বলছে, সারা বছর দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ ডায়রিয়া রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে রোগীর সংখ্যা বাড়ে। সাধারণত মার্চের শেষ সপ্তাহে রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে শেষ সপ্তাহে রোগী চূড়ান্তভাবে বাড়ে। কিন্তু এ বছর ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এস এম আলমগীরের পরামর্শ, এ সময় পানি ফুটিয়ে বা বড়ি দিয়ে বিশুদ্ধ করে খেতে হবে। হাত না ধুয়ে কোনো খাবার খাওয়া উচিত হবে না। রাস্তার পাশের খাবার ও বাসি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।