Published : Tuesday, 19 April, 2022 at 12:00 AM, Update: 19.04.2022 1:39:37 PM
হাফেজ মাও: মুফতী মোহাম্মদ ইব্রাহীম ক্বাদেরী ||
রামাদ্বানের
দ্বিতীয় অংশ ক্ষমার। আমরা বর্তমানে এই ক্ষমার অংশে অবস্থান করছি। বান্দাহর
জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে যতগুলো নেয়ামতের কথা বলা
হয়েছে এর মধ্যে ক্ষমা অন্যতম। মানুষ শয়তানের কুমন্ত্রণায় পড়ে অপরাধ বা
গুনাহ করবে এটাই স্বাভাবিক। নবী রাসুলগণ এবং বিশেষ বিশেষ আল্লাহর অলিগণ
ছাড়া কেউই এর থেকে মুক্ত নন। বাকি ধরণ আলাদা। কারও কম কারও বেশি। কারোরটা
কবিরা বা বড়, কারোরটা সগীরা বা ছোট। গুনাহের ব্যাপারে মানুষ প্রধানত: দুই
ধরনের। ০১. গুনাহ করে অনুতপ্ত হওয়া ও অনুশোচনা করা। ০২. গুনাহ করে অহংকার
করা এবং গুনাহকে গুনাহ মনে না করা। দ্বিতীয় প্রকারের ব্যক্তি খুবই হতাভাগা
এবং পরিমাণ খুবই ভয়াবহ ইহকালেও পরকালেও। আর প্রথম প্রকারের ব্যক্তির জন্য
মহা সু-সংবাদ।
ক্ষমা চাওয়া মহান আল্লাহর দরবারে, সবার নসীবে হয়না,
তাদেরই হয় যাদের অন্তর ঈমানী নূরে আলোকিত। মহাগ্রন্থ আল কুরআনে আল্লাহ
রাব্বুল আলামিন বলেন- হে হাবীব (দঃ) আপনি বলে দিন ‘যে ব্যক্তি (গুনাহ করার
পর) তাওবা করে আর ক্ষমা চায়, ঈমান আনে অতঃপর সৎকর্ম করে (তাদেরকে মহান
আল্লাহ ক্ষমা করে দেন) তাদের গুনাহগুলোকে মহান আল্লাহ নেক আমল দ্বারা
পরিবর্তন করে দেন।’ (সুবাহানাল্লাহ)
এর অর্থ এই নয় যে বান্দাহ বার বার
গুনাহ করবে আর ক্ষমা চাইবে। অপর আয়াতে বলা হচ্ছে- হে রাসুল (দঃ) আপনি বলে
দিন ‘হে বান্দাহগণ তোমরা ক্ষমা প্রার্থণা কর অবশ্যই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন
ক্ষমাশীল’। সুরা নুহ, আয়াত-১২
হাদিস শরীফে নূর নবীজি (দঃ) বলেছেন-
বান্দাহ যখন গুনাহ করে এবং অনুতপ্ত হয়ে মহান আল্লাহর দরবারে চোখের পানি
ফেলে গুনাহর ক্ষমা চায় মহান আল্লাহ ঐ ব্যক্তির গুনাহ যত বড় এমনিক এক একটি
গুনাহ যদি উহুদ পাহাড়ের সমান হয় এবং আসমান ও জমিন পরিপূর্ণও হয়ে যায় তাহলে
তওবার বিনিময়ে এক ফোটা চোখের পানির কারণে আল্লাহ পাক তা ক্ষমা করে দেন।
সুবাহানল্লাহ।
অপর হাদিসে আল্লাহর রাসুল (দঃ) বলেন- ক্ষমা চাওয়া
তাওবাকারী ব্যক্তি এমন নিষ্পাপ হয়ে যায় যেন তার কোন গুনাহই নাই। তাইতো মহান
আল্লাহ বলেন- ‘বান্দাহ আমার রহমত থেকে কখনও নিরাশ হয়োনা’। সুরা
যুমার-আয়াত-৫৩
তবে একটি জিনিস অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে- যে গুনাহ থেকে
তাওবা ও ক্ষমা চাইলাম সে গুনাহটি যেন আমার দ্বারা আর না হয়। নয়ত এই তাওবা ও
ক্ষমা আর তাওবা রইলনা হাসি তামাশার বিষয়ে পরিণত হয়ে গেল।
যদি সত্যিকার
অর্থে ক্ষমা চাইতে পারি তাহলে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা পাওয়া, জান্নাত
ও সবচেয়ে বড় বিষয় হলো মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ এই মহান সু-সংবাদ আছে
আমাদের জন্য।
মাহে রামাদ্বানের এই মাগফিরাত ও ক্ষমা পাওয়ার অংশে আল্লাহ
রাব্বুল আলামিনের দরবারে ক্ষমা চেয়ে আমাদের গুনাহগুলিকে পরিষ্কার করে এবং
ভবিষ্যতের গুনাহ থেকে বেঁচে থেকে জান্নাতিদের খাতার নামের তালিকায় আমাদের
নামগুলিকে কবুল করুন। আমিন।
লেখক: ইমাম ও খতিব, কান্দিরপাড় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও কেন্দ্রীয় ঈদগাহ কুমিল্লা