ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি অভিযানের খবর সংগ্রহের সময় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার সাংবাদিক শিরীন আবু আকলেহকে গুলি করে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনী। এর আগে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সংঘাত নিয়ে সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করায় আরব বিশ্বে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন তিনি। জেরুজালেমে বেড়ে উঠলেও ৫১ বছর বয়সী আকলেহ একজন মার্কিন নাগরিক। সাংবাদিকতা পেশায় তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে।
শিরীন আবু আকলেহের বন্ধু ও সহকর্মীরা জানিয়েছেন, তিনি অনেক সাহসী-দয়ালু ও হাসি-খুশি ছিলেন। গত তিন দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন এই অভিজ্ঞ সাংবাদিক।
আবু আকলেহের সহকর্মী ও আল-জাজিরার প্রতিবেদক নাদিয়া ইব্রাহিম বলেন, তাকে হত্যা করে অপূরণীয় ক্ষতি করা হয়েছে। আকলেহ দয়ালু, কর্মঠ ও নিবেদিত সাংবাদিক ছিলেন।
কাঁন্না জড়িত কণ্ঠে ইব্রাহিম বলেন, তিনি ছিলেন অতুলনীয়, বিনয়ী ও পরিচিত মুখ। নিজের কাজের ব্যাপারে অত্যন্ত প্রতিশ্রুতিশীল ছিলেন বলেও জানান তিনি।
ইব্রাহিম আরও বলেন, যে সময় তাকে হত্যা করা হলো সেই মুহূর্তে তিনি হিব্রু ভাষা শিখছিলেন। কারণ তিনি ইসরায়েলের গণমাধ্যমের বর্ণনা আরও ভালোভাবে বোঝতে চেয়েছিলেন। তাছাড়া তিনি কেবলই ডিজিটাল মিডিয়ার ওপর ডিপ্লোমা শেষ করেছেন।
আবু আকলেহের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও আল জাজিরার সাংবাদিক ডালিয়া হাতুকা বলেন, তিনি ছিলেন আমাদের সবার জন্য অনুপ্রেরণা।
১৯৭১ সালে জেরুজালেমে জন্মগ্রহণ করেন এই খ্যাতিমান সাংবাদিক। তিনি ছিলেন একজন খ্রিষ্টান। জর্ডানের ইয়ারমুক ইউনিভার্সিটিতে সাংবাদিকতায় যাওয়ার আগে প্রাথমিকভাবে আর্কিটেকচারে পড়াশোনা করেন। স্নাতক শেষ করে তিনি ফিলিস্তিনে ফিরে আসেন ও কিছু গণমাধ্যমে কাজ করেন। আল-জাজিরার যাত্রা শুরুর এক বছর পর তিনি এর সঙ্গে যুক্ত হন।
একজন টেলিভিশন সাংবাদিক হিসেবে আবু আকলেহের গাজার ছোট-বড় সব যুদ্ধের সংবাদ সংগ্রহ করেছেন। ২০০৬ সালে লেবানন যুদ্ধসহ স্থানীয় সব সংবাদও তিনি সংগ্রহ করেছেন।