শ্রীলঙ্কায় সদ্য পদত্যাগকারী প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ও তার মিত্রদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ মে) মাহিন্দা, তার রাজনীতিবিদ পুত্র নামাল ও আরও ১৫ মিত্রকে দেশত্যাগ করতে নিষেধ করেছেন স্থানীয় একটি আদালত। সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংসতার অভিযোগে তাদের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া গত সোমবার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলার তদন্ত করতে পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন কলম্বোর ম্যাজিস্ট্রেট। সেদিনের ওই ঘটনার জেরে দেশটিতে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে, যাতে প্রাণ হারান অন্তত নয়জন, ক্ষয়ক্ষতিও হয় প্রচুর।
লঙ্কান আদালতের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপি’কে জানিয়েছেন, আদালতে একটি আবেদনে রাজাপাকসে ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। কারণ, যেভাবেই হোক, যেকোনো সন্দেহভাজনকে আটক করার ক্ষমতা পুলিশের রয়েছে।
গত সোমবারের সহিংসতায় ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, রাজাপাকসে ও তার সহযোগীরা প্রায় তিন হাজার সমর্থককে বাসে করে কলম্বোয় নিয়ে গিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা করতে প্ররোচিত করেছিলেন। তাদের দাবি, সরকার সমর্থকরা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে বেরিয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায়।
এ ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ২২৫ জনের মধ্যে বেশ কয়েকজন বৌদ্ধ সন্ন্যাসী এবং ক্যাথলিক পুরোহিতও ছিলেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভের আগুনে ঘি ঢালার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। একরাতের মধ্যেই অগ্নিসংযোগ করা হয় শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী-এমপিসহ প্রায় অর্ধশত রাজনৈতিক নেতার বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে। সহিংসতায় প্রাণ হারান এক এমপি, আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় আরও একজনকে। হামলার শিকার হন সরকারি কর্মকর্তারাও।
পরে তোপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন লঙ্কান প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের ক্ষোভ তখনো যায়নি। তারা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ঘেরাও করেন। শেষপর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনীর সাহায্য নিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে সরকারি বাসভবন ছাড়েন তিনি।
৭৬ বছর বয়সী এ নেতা বর্তমানে শ্রীলঙ্কার পূর্বাঞ্চলীয় একটি নৌঘাঁটিতে লুকিয়ে রয়েছেন। তার ছেলে নামাল গত মঙ্গলবার জানিয়েছেন, মাহিন্দা রাজাপাকসের দেশত্যাগ করার কোনো পরিকল্পনা নেই।
সূত্র: এনডিটিভি