শ্রীলঙ্কায় সম্প্রতি সহিংস ঘটনার জেরে সন্দেহভাজন হিসেবে ক্ষমতাসীন দল পদুজানা পেরামুনার (এসএলপিপি) দুই আইনপ্রণেতাসহ এখন পর্যন্ত অন্তত নয়শ জনকে আটক করা হয়েছে। আটক হওয়া ওই দুই সংসদ সদস্য হলেন সনৎ নিশান্ত ও মিলন জয়থিলাকে। গত ৯ মে গ্যালা ফেইস গ্রিন ও কোল্লুপিতিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংস ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের আটক করা হলো।
পুলিশের মুখপাত্র এসএসপি নিহাল থালদুয়া বলেন, আটকৃতদের মধ্যে আদালতের মাধ্যমে ৪১২ জনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ৩৬৪ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ১৭ মে পুলিশ আরও ২১৯ জনকে আটক করে। তাদের মধ্যে ৫৭ জনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ৯ মে থেকে কারফিউ লঙ্ঘন, সরকারি-বেসরকারি সম্পদ ধ্বংস ও লুট করার অভিযোগ আনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ ছাড়া সহিংসতার ঘটনার তথ্য জানতে হটলাইন নাম্বার চালু করা হয়েছে। পুলিশের ওই মুখপাত্র বলেন, সম্পত্তি ও যানবাহনের ক্ষতি সংক্রান্ত ৭৫৬টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, সহিংস ঘটনার ৪৭৫টি ছবি ও ৭০টি ভিডিও ক্লিপ তাদের হাতে এসেছে। এগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অর্থনীতি কার্যত অচল হয়ে পড়ায় গত সোমবার (৯ মে) শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে বিক্ষোভে জড়ো হন লাখো জনতা। সেখানে সরকার সমর্থকরা আন্দোলনকারীদের মারধর শুরু করলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। শুরু হয় দাঙ্গা। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পদত্যাগের দাবিতে চলা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন পরিশেষে ভয়ংকর পরিস্থিতির দিকে চলে যায়। এরপর দুই দিনের সহিংসতায় দেশটিতে নয়জন নিহত হন। সংঘর্ষে আহত হন আরও তিনশ জনের মতো।
পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশজুড়ে কারফিউ জারি করে দেশটির সরকার। এমনকি বিশৃঙ্খলাকারীদের দেখামাত্রই গুলি করারও নির্দেশ দেয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর শ্রীলঙ্কাকে এবারই চরম অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এর বড় কারণ বৈদেশিক মুদ্রার অভাব। করোনা মহামারি সামাল দিতে না পারায় আরও নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয় দেশটিতে। যার ফলে বেড়ে যায় তেল, গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সাধারণ মানুষ।
সূত্র: কলম্বো গেজেট, ডেইলি মিরর