ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
মুক্তিযোদ্ধার জালে রহমতগঞ্জের ৭ গোল
Published : Tuesday, 5 July, 2022 at 12:00 AM
অবনমন অঞ্চলের দুই দলের লড়াইয়ে বড় জয় পেয়েছে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটি। মুন্সীগঞ্জের শহীদ লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে ৭-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছে রহমতগঞ্জ। এবারের প্রিমিয়ার লিগে এটিই সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয়।
এই জয়ে প্রিমিয়ার লিগে টিকে থাকার আশা আরো জোরালো করল পুরান ঢাকার দলটি।
অবশ্য এমন বড়  হারে চ্যাম্পিয়নশিপে নেমে যাওয়ার শঙ্কায় মুক্তিযোদ্ধা। ১৮ ম্যাচ শেষে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে নবম অবস্থানে উঠে এসেছে রহমতগঞ্জ। সমান ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে এগারোতম স্থানে মুক্তিযোদ্ধা। ১৩ পয়েন্ট নিয়ে দশম স্থানে উত্তর বারিধারা। দিনের আরেক ম্যাচে পুলিশের কাছে হেরে যাওয়ায় তলানিতেই আছে স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ। লিগের শেষ চার ম্যাচের ফলের ওপর নির্ভর করছে কোন দুটি দল প্রিমিয়ার লিগ থেকে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে নেমে যাচ্ছে।
ম্যাচের শুরুর ১৫-২০ মিনিট মুক্তিযোদ্ধার আধিপত্য থাকলেও বাকি সময়টা ছিল রহমতগঞ্জের দখলে। ম্যাচজুড়েই মুক্তিযোদ্ধাকে চাপে রাখে গোলাম জিলানির দল। প্রথমার্ধে দুই গোলের পর দ্বিতীয়ার্ধে গুনে গুনে আরো পাঁচ গোল করে ম্যাচ জিতে নেয় রহমতগঞ্জ। ১০ মিনিটে প্রথমবারের মতো গোছাল আক্রমণে যায় মুক্তিযোদ্ধা। সোমা ওতানির থ্রু পাস অফসাইড ফাঁদ ভেঙে বক্সে ঢুকে পড়া সুদি আব্দুল্লাহর শট গোলকিপার জিয়া কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন।
দুই মিনিট বাদেই আবারও রহমতগঞ্জের রক্ষণ কাঁপান সুদি আব্দুল্লাহ। বক্সের ডান প্রান্ত থেকে সুদির নেওয়া গতির শট জিয়ার হাতের স্পর্শের পর ক্রস বারে লেগে বাইরে চলে যায়। ১৪ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে ইয়ামিন মুন্নার নিচু ক্রস বক্সে ফাঁকায় পেয়ে যান সুদি, তার নেওয়া গতির শট জায়গায় দাঁড়িয়ে আটকে দেন জিয়া। ২৬ মিনিটে ধারার বিপরীতে গিয়ে গোল পেয়ে যায় রহমতগঞ্জ। কিরণের মাপা ফ্রি কিকে গোলমুখে হেডে জাল খুঁজে নেন ফিলিপ আদজাহ।
২৯ মিনিটে প্রতি আক্রমণে ওঠে মুক্তিযোদ্ধা। সুদি আব্দুল্লাহর নিচু করে নেওয়া শট দারুণভাবে আটকে দেন জিয়া। ৩৩ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ নষ্ট করেন ফিলিপ আদজাহ। আশরাফুলের থ্রু পাস ধরে বক্সে ঢুকে গোলকিপার রাজিবকে কাটালেও মুক্তিযোদ্ধার ডিফেন্ডারদের চাপে আর বল নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি। ৩৬ মিনিটে দুই পরিবর্তন করে রহমতগঞ্জ। চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন সিয়োভুজ আসরোরভ ও আক্কাস। মাঠে নামেন তারেক ও সাহেদ।
পরের মিনিটেই আচমকা এক গোলে ব্যবধান বাড়ায় রহমতগঞ্জ। বদলি নামা সাহেদের ক্রস মুক্তিযোদ্ধার মেহেদি হাসান ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে না পারায় বল গিয়ে লাগে সাইড বারে, ফিরতি বলে পায়ের টোকায় জালে জড়ান সানডে চিজোবা। বিরতিতে যাওয়ার আগেই ওবায়দুর রহমান নবাবের দুর্দান্ত গোলে ব্যবধান কমায় মুক্তিযোদ্ধা। সুদি আব্দুল্লাহর বাড়ানো পাসে বক্সের ডান দিকে দেখেশুনে রহমতগঞ্জের দুই-তিনজন ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে খানিকটা ভেতরে ঢুকে বাঁ পায়ের প্লেসিং শটে দূরের পোস্টে লক্ষ্যভেদ করেন নবাব। লিগে এটি তার দ্বিতীয় গোল।
৫৩ মিনিটে সানডে চিজোবের দারুণ এক ভলি ঝাঁপিয়ে ফিরিয়ে দেন রাজীব। প্রথমার্ধের বিরতিতে যাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে এই সানডের এক ফ্রিকিক দুর্দান্তভাবে আটকে দিয়েছিলেন রাজীব। ৬৮ মিনিটে আলামিনের পাগলাটে এক গোলে ব্যবধান ৩-১ করে ফেলে রহমতগঞ্জ। প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে ক্রস নিয়েছিলেন আলামিন; কিন্তু হাওয়ায় ভেসে ভেসে তা দূরের পোস্টে জাল খুঁজে নেয়। চেষ্টা করেও বল আটকাতে পারেননি গোলকিপার রাজীব। এর পরেই রাজীবকে তুলে গোলকিপার লিমনকে মাঠে নামান কোচ রাজা ঈশা।
গোলকিপার পরিবর্তন করেও ভাগ্য বদলায়নি মুক্তিযোদ্ধার। উল্টো ৮০ থেকে ৯০ মিনিটের মধ্যে আরো তিন গোল করে রহমতগঞ্জ। ৮০ মিনিটে ল্যান্সিন তোরের গোলে ব্যবধান ৪-১ করে ফেলে রহমতগঞ্জ। মামুনুল ইসলামের ফ্রি কিকে লাফিয়ে হেডে গোল করেন তোরে। ৮৬ মিনিটে খন্দকার আশরাফুলের গোলে ব্যবধান আরো বাড়ায় রহমতগঞ্জ। ৮৯ মিনিটে স্পট কিক থেকে ব্যবধান ৬-১ করেন সানডে চিজোবা। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা তৃতীয় মিনিটে রহমতগঞ্জের হয়ে সপ্তম গোল করেন ফিলিপ আদজাহ।