পারফরমেন্স
প্রত্যাশিত মানে পৌঁছাচ্ছে না কোনোভাবেই। ঘুরিয়ে বা তীর্যক ভাষায় বললে
ওপেনাররা কাজের কাজ মোটেও করতে পারছেন না। পাওয়ার প্লে‘তে হাত খুলে খেলে
রানের চাকা সচল করার পাশাপাশি ঝড়ের গতিতে একটা লম্বা চওড়া জুটি গড়ে দলকে
শক্ত ভিত গড়ে দেয়ার কাজটি হচ্ছে না অনেকদিন ধরে।
অন্য দলগুলো যখন পাওয়ার
প্লে’র ৬ ওভারে আট থেকে নয় কিংবা ১০ রান তুলে স্কোর বোর্ডকে পঞ্চাশের ঘরে
নিয়ে যাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশের রান থাকে গড়-পড়তা ত্রিশের ঘরে এবং
অবধারিতভাবে দুই থেকে তিন উইকেটের পতন ঘটছে এ সময়।
মোটকথা শুভ বা
স্বস্তিকর সূচনা হচ্ছে না কিছুতেই। ওপেনারদের ব্যর্থতায় টি-টোয়েন্টি
ফরম্যাটে শুরু থেকেই রীতিমত ধুঁকছে বাংলাদেশ। ওপেনাররা কার্যকর ভূমিকা নিতে
না পারায় ওপেনিং জুটি নিয়ে চলছে নানারকম পরীক্ষা-নীরিক্ষা। আসছে ঘন ঘন
পরিবর্তন।
গত অক্টোবরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কাঙ্খিত পারফরমেন্স হয়নি।
তারপরও ওপেনিং জুটি নিয়েও পরীক্ষা-নীরিক্ষা চালানো হয়েছে তখন। পুরো আসরে
তিন-তিনটি ওপেনিং জুটির দেখা মিলেছে। এর মধ্যে নাইম শেখ আর লিটনকে খেলানো
হয়েছে সর্বাধিক ৬ ম্যাচে।
স্কটল্যান্ডের সঙ্গে প্রথম ম্যাচে নাইম শেখের
সঙ্গে সৌম্য সরকার আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নাইমের সঙ্গে লিটনের বদলে
সাকিব ওপেনারের ভূমিকায় ছিলেন। বাকি খেলাগুলোয় লিটন-নাইমই ব্যাট হাতে ওপেন
করেছেন।
বিশ্বকাপের পর থেকেই ওপেনিং জুটিতে পরিবর্তনের হার বেড়ে গেছে
অনেক। অফ ফর্মের কারণে লিটন দাসকে বাদ দিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে হোম সিরিজে
নাইমের সাথে তিন ম্যাচের প্রথম দুটিতে খেলানো হলো সাইফ হাসানকে। সাইফ
ব্যর্থ হওয়ার পর শেষ ম্যাচে নাইমের সঙ্গী করা হলো নাজমুল হোসেন শান্তকে।
তাতেও
কাজ হলো না। নাইম স্লো ব্যাটিং করে কিছু রান পেলেও বাকিরা হলেন চরম
ব্যর্থ। এরপর আফগানিস্তানের বিপক্ষে আবার ওপেনিং জুটিতে রদবদল। এবার নাইম
শেখের সঙ্গী করা হলো বিপিএলে ভালো খেলা মুনিম শাহরিয়ারকে।
দুই ম্যাচ পর এ
জুটিতেও আবার পরিবর্তন। কারণ ওয়েষ্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দলেই জায়গা হয়নি
নাইম শেখের। মুনিম শাহরিয়ারের সাথে প্রথম ম্যাচে ইনিংসের সূচনা করলেন ৮ বছর
পর দলে ফেরা এনামুল হক বিজয়।
বলা হলো, আক্রমণাত্মক মুনিম শাহরিয়ারের
সঙ্গে ফ্রি স্ট্রোক মেকার এনামুল হক বিজয়কে বেছে নেয়া হয়েছে এবং তাদের
মানসিক চাপমুক্ত হয়ে খেলতে বলা হয়েছে। যাতে করে পাওয়ার প্লে‘তে তারা
স্বভাবসূলভ হাত খুলে খেলতে পারেন।
কিন্তু প্রথম ম্যাচে রান না পাওয়া
মুনিম শাহরিয়ারকে দ্বিতীয় ম্যাচেই বসিয়ে দেয়া হলো। ৩ জুলাই, রোববার
ডমিনিকায় দ্বিতীয় ম্যাচেই আবার ওপেনিংয়ে ফিরিয়ে আনা হলো লিটন দাসকে।
কিন্তু
হায়! মুনিম শাহরিয়ার ২ রানে আউট হওয়ার পর তাকে পরের ম্যাচেই বাদ দেয়া হলো।
এনামুল হক বিজয়ের সঙ্গী হলেন লিটন। তাতেও কাজ হলো না। লিটন আর বিজয় জুটি
ভাঙ্গল মাত্র ৮ রানে।
বিজয় ৩ আর লিটন ৫ রানে আউট। শেষ ৭ ম্যাচে
পাঁচ-পাঁচটি ওপেনিং জুটি বাংলাদেশের। ভাবা যায়! ভারতের অধিনায়ক বদলের মত
হয়ে গেলো পুরো ব্যাপারটা! প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি ৭ জুলাই শেষ ম্যাচে আবারও
ওপেনিং জুটি পাল্টানো হবে? এবার কি তবে শেখ মাহদিকে ওপরে নিয়ে আসা হবে?
এভাবে আর কত চলবে ওপেনিং জুটি নিয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষা?