শান্তিরঞ্জন ভৌমিক ||
এ বছর (২০২২) কুমিল্লায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় অনুষ্ঠানটি ২৫ মে থেকে ২৭ মে ২০২২খ্রি: (১১ জ্যৈষ্ঠ থেকে ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯ বঙ্গাব্দ) যথাযোগ্য আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে উদযাপন করা হলো। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনায় এবং কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সম্পন্ন হয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯৯২ খ্রি: ও ২০১৫খ্রি: জাতীয়ভাবে দু’বার নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উদযাপিত হয়েছিল। সে দুটি অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও উদ্বোধক ছিলেন তৎকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীদ্বয়। এবারও জাতীয় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও উদ্বোধক হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে অনুরোধ করা হয়েছিল। রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ততার কারণে তিনি মাননীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীকে তাঁর পক্ষে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। এভাবেই সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রথম দিনের অনুষ্ঠানটি সাজিয়ে আমন্ত্রণপত্র প্রস্তুত করেন।
এ বছর নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় অনুষ্ঠানটি কুমিল্লায় হবে কি হবে না এ বিষয়ে আমরা অবহিত ছিলাম না। তবে আমরা অর্থাৎ কুমিল্লাবাসী বরাবরই কুমিল্লায় প্রতি বছর জাতীয় অনুষ্ঠানটি উদযাপিত হোক তার যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করে দাবি জানিয়ে আসছে, সরকার এ ব্যাপারে ধারাবাহিকতা রক্ষা না করে অনুষ্ঠানটি বিকেন্দ্রিকরণ করেই উদযাপন আয়োজনের ব্যবস্থা করে থাকেন। সুতরাং কুমিল্লাবাসীর দাবিটা দাবি হিসেবেই সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে জমা হয়ে থেকে গেছে।
১৮ এপ্রিল ২০২২ খ্রি: সকাল ১১টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা ভবনের সেমিনার হল-এ জনাব কে এম খালিদ, এমপি, মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর সভাপতিত্বে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর ১৬১তম জন্মবার্ষিকী ১৪২৯/২০২২ এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১২৩তম জন্মবার্ষিকী ১৪২৯/২০২২ উদযাপন বিষয়ে এক উচ্চ পর্যায়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। তাতে এবারের রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান ২৫ বৈশাখ ১৪২৯/০৮ মে ২০২২খ্রি: রবিবার বিকাল ২.৩০টায় রবীন্দ্রস্মৃতি বিজড়িত কুষ্ঠিয়ার কুমারখালীতে আয়োজন করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। এবং প্রতিপাদ্য বিষয় ‘মানবতার সংকট ও রবীন্দ্রনাথ’ নির্ধারণ করা হয়। তিন দিনের অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তা হিসেবে প্রথম দিন বেগম আকতার কামাল, দ্বিতীয় দিন অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরী এবং তৃতীয় দিন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক জনাব মুহম্মদ নুরুল হুদাকে সর্বসম্মতিক্রমে মনোনীত করে।
জাতীয় কমিটির সভায় ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯/২৫ মে ২০২২খ্রি: বুধবার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন বিষয় স্থান নির্ধারণ বিবেচনায় নজরুল জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯/২৯ মে ২০২২খ্রি: সকাল ১১টায় নজরুল স্মৃতি বিজড়িত কুমিল্লায় আয়োজন করা হবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তিনদিনে অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তা হিসেবে প্রথমদিন জনাব শান্তিরঞ্জন ভৌমিক, দ্বিতীয় দিন অধ্যাপক মহীবুল আজিজ এবং তৃতীয় দিন কবি নজরুল ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ জাকীর হোসেন- কে সর্বসম্মতিক্রমে মনোনীত করে।
উল্লেখ্য, রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকী ও নজরুল জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মূল অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, তিনি তাঁর পক্ষে অন্যমন্ত্রীকে মনোনীত করে নির্দেশ প্রদান করেন।
জাতীয় কমিটির সভা বা প্রতিবেদনের (রেজুলেশন) মাধ্যমে তা জানতে পারি। কিন্তু কুমিল্লায় ১২৩তম নজরুল জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানটি উদযাপনের বিষয়টি এতটা সহজভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। মাননীয় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর বাড়ি ময়মনসিংহে, আমাদের (কুমিল্লা) জেলা প্রশাসকের বাড়িও ময়মনসিংহে, মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর অভিপ্রায় ছিল এ বছর (২০২২) নজরুল জন্মবার্ষিকীর জাতীয় অনুষ্ঠানটি ময়মনসিংহে উদযাপিত হোক। সভায় কুমিল্লার পক্ষে একমাত্র প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ কামরুল হাসান। তিনি মন্ত্রী মহোদয়কে বুঝালেন যে, আগামী বছর যেহেতু জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সেজন্য আগামী বছর জাতীয় অনুষ্ঠানটি ময়মনসিংহে হলে মন্ত্রী মহোদয়ের পক্ষে ইতিবাচক সুবিধা হবে। কাজেই এ বছর (২০২২) অনুষ্ঠানটি কুমিল্লায় হোক- এ বিষয়ে অনেক জুড়ালো অবস্থান নিয়ে নিজের মতো করে যুক্তি দেখিয়ে অভিমত ব্যক্ত করলেন জেলা প্রশাসক মহোদয় এবং সভায় সকলেই বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে কুমিল্লায় জাতীয় অনুষ্ঠানটি উদযাপনের পক্ষে সম্মতি প্রদান করেন। এ বিষয়টি জানার পর আমি অনেকটা আবেগে আপ্লুত হই। আমরা (কুমিল্লাবাসী) এজন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়কে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
এ বছর নজরুল জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় অনুষ্ঠানের প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয় ‘বিদ্রোহীর শতবর্ষ’। কারণ কালজয়ী অমরকবিতা ‘বিদ্রোহী’ কবিতা রচনা ও প্রকাশের শতবর্ষ পূর্ণ হয়েছে ২০২২ খ্রিস্টাব্দে। এছাড়া নজরুল স্মৃতি বিজড়িত কুমিল্লায় কবি একশত বছর আগে অর্থাৎ ১৯২১খ্রি: এপ্রিলের মাঝামাঝি প্রথম এসেছিলেন। নজরুলের আগমনের শতবর্ষ, ‘বিদ্রোহী’ কবিতা রচনার শতবর্ষ (১৯২১খ্রি:) ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহের কোনো একদিন দিবাগত রাত্রি) এবং প্রকাশের শতবর্ষ (৬ জানুয়ারি ১৯২২) পূর্ণ হওয়ায় এ বছরের জাতীয় অনুষ্ঠানটি উদযাপনের বিষয়টি অত্যন্ত ভিন্নমাত্রা লাভ করেছে। তিনদিনের অনুষ্ঠানটি ছিল কুমিল্লাবাসীর জন্য প্রত্যাশিত আকাক্সক্ষা পূরণের জয়গাঁথা। উৎসবমুখর পরিবেশে নান্দনিক মঞ্চসজ্জা ও পেন্ডেল স্থাপনের বিষয়টি ছিল এককথায় চমৎকার। জেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে কোন ত্রুটি রাখেননি। এজন্য ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করব না। বরং সামগ্রিক ব্যবস্থাপনাও আয়োজনে প্রশাসনের সকলকে কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি কাছ থেকে দেখেছি, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশানুযায়ী এডিসি (সার্বিক) জনাব মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন নিরলসভাবে সকল কাজের সমন্বয় করে প্রতিটি ক্ষেত্রে সুষ্ঠু কর্ম সম্পাদন করেছেন।
নির্ধারিত তিনজন স্মারক বক্তার মধ্যে অধ্যাপক মহীবুল আজিজ স্বাস্থ্যগত কারণে অপারগতা প্রকাশ করায় তাঁর স্থলে জনাব এ এফ এম হায়াতুল্লাহ, চেয়ারম্যান (গ্রেড-১), বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনকে পরবর্তীতে মনোনীত করা হয়। তিনি তৃতীয়দিন বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন।
জাতীয় অনুষ্ঠান উপলক্ষে ব্যক্তি বা সংগঠনের পক্ষে কয়েকটি ছোট ছোট প্রকাশনা বের করা হয়েছিল। কেন্দ্রিয়ভাবে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি স্মরণিকা প্রকাশ করে। স্মরণিকায় প্রতিটি লেখা ছিল ‘বিদ্রোহী’র শতবর্ষকে উপলক্ষ্য করে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী, মাননীয় সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী, মাননীয় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি, মান্যবর সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর সচিব প্রমুখের বাণী সমৃদ্ধ জনাব মোহাম্মদ জাকীর হোসেন, নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) কবি নজরুল ইন্সটিটিউট-এর সম্পাদনায় স্মরণিকাটি প্রকাশ করা হয়। স্থানীয়ভাবে ড. আলী হোসেন চৌধুরী রচিত ‘কুমিল্লায় কবি কাজী নজুরল ইসলাম’, নজরুল পরিষদ, কুমিল্লা কর্তৃক ‘কুমিল্লায় স্মৃতিময় নজরুল’ শীর্ষক এ্যালবাম, সংলাপ সংগঠনের পক্ষে শাহজাহান চৌধুরী ‘নজরুল স্মৃতি নির্দেশিকা’ ঐতিহ্য কুমিল্লার পক্ষে ‘কবি নজরুল কুমিল্লা ও দৌলতপুর’ এবং দৈনিক কুমিল্লার কাগজ ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বিশেষ সংখ্যা’ প্রকাশ করে।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনের আমন্ত্রণ জানানো হয় জেলা প্রশাসন, কুমিল্লার পক্ষ থেকে।
প্রতিপাদ্য বিষয় ‘বিদ্রোহী’র শতবর্ষ নির্ধারণ করা থাকলেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন অন্যান্য বক্তারা নিজেদের মতো করে নজরুল এর উপর আলোচনা করেছেন বিষয়টি মূল প্রতিপাদ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ছিল না। এছাড়া জাতীয় অনুষ্ঠান হিসেবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় একটি স্যুভিনীরা (স্মারণিকা) বের করেছেন, কিন্তু কুমিল্লা জেলা প্রশাসন ‘কুমিল্লায় নজরুল পরিচিতি’ নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন, সময়মত পাণ্ডুলিপি সংগ্রহ করা যায়নি বলে এবং প্রত্যাশিত কাজটি সেভাবে প্রস্তুত করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল, তা যথাযথ হয়নি বলে পুস্তিকাটি প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। তবে অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে একটি প্রকাশনা ছিল প্রাসঙ্গিক। অনুরোধ থাকল উদযাপিত জাতীয় অনুষ্ঠানের কার্যক্রমের প্রতিবেদনসহ পরবর্তীতে একটি প্রকাশনা জেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিলে ইতিহাসের স্মারক-সাক্ষী হিসেবে থাকবে।
অনুষ্ঠানের প্রথমদিন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি (ঢাকা) একটি উপভোগ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনা করেছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন কুমিল্লার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান তাদের পরিবেশনা উপস্থাপন করে অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে রেখেছে। উল্লেখ করতে হয়- বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, কুমিল্লা, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, কুমিল্লা, কবি নজরুল ইন্সটিটিউট, কুমিল্লা শাখা, যাত্রী সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠক, কুমিল্লা, আবৃত্তি সংসদ, কুমিল্লা এবং এককভাবে শিল্পীরা গান-নৃত্য-দলীয় নৃত্য-দলীয় আবৃত্তি ইত্যাদি পরিবেশনা ছিল সামগ্রিক অনুষ্ঠানের অলংকার। বিশেষত শতকন্ঠে ‘বিদ্রোহী’ কবিতার আবৃত্তি ও অনুপম নৃত্যের মাধ্যমে দৃশ্যমান অভিব্যক্তি পরিবেশনা ছিল নান্দনিক। তবে তিনদিনের অনুষ্ঠানে কোনো নাটক মঞ্চস্থ হয়নি। জাতীয় অনুষ্ঠান উপলক্ষে শহরটিকে তোরণ ও ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হয়েছিল, বীরচন্দ্রনগর মিলনায়তন ও গণপাঠাগারকে আলোকসজ্জায় সাজিয়ে তোলা হয়েছিল, নজরুলের নানা বয়সের ছবি দিয়ে ‘নজরুল কর্ণার’ স্থাপন করা হয়েছিল, তাতে স্বল্পসময়ের জন্য নজরুলকে স্পর্শ ও আবিষ্কারের সুযোগ ঘটেছে। তবে শুধুমাত্র নজরুল বিষয়ক প্রকাশনা দিয়ে একটি বই এর কর্ণার করা গেলে আরও ভালো হতো। অন্যদিকে প্রকৃতি মাঝে মাঝে বিরূপ ভাব ধারণ করলেও কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারেনি।
এই বিরাট কর্মযজ্ঞের লাভ-ক্ষতি হিসেব নিকেশ করে কেউ কেউ ব্যক্তিগত অবদানের বিষয়টি প্রচার করতেও কম চেষ্টা করেননি। কৃতিত্ব অর্জন তর্জন-গর্জন দিয়ে হয় না। ব্যক্তিগতভাবে আমি ছিলাম বিব্রতকর অবস্থায়। আমি প্রথমদিন স্মারক বক্তব্য প্রদান করি, কেউ কেউ তা পছন্দ করেননি এবং প্রকাশ্যে অভিমতও জানিয়েছেন আমার উপস্থিতিতে। তারা মনে করেছেন বক্তা নির্বেচনে আমার উদ্যোগ ছিল, আমি তৎপর হয়ে আমার নামটি অন্তর্ভুক্ত করেছি প্রকাশ্য সভায় এ আলোচনা শুনে মনে মনে ক্ষুব্ধ হয়েছিল কুমিল্লায় সমকালে অবক্ষয়ের পরিণতি দেখে হতাশ হয়েছি। তখন মনে হয়েছে
‘লেখা নাই পড়া নাই
সমাজের সরদার।
জ্ঞানীগুণী চুপচাপ
বিচার করে
বাটপার।’
প্রখ্যাত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন-
‘আত্মসম্মান নিয়ে বেঁচে থাকা মানুষগুলো গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে, আর তেল মারা মানুষগুলো সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হয়ে উঠছে।’
এবং এ প্রসঙ্গে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আবুল কালাম আজাদ বলেছেন-
‘প্রতিশোধ নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই,
শুধু চুপচাপ বসে অপেক্ষা করো...
যারা তোমাকে আঘাত করেছে,
তারা নিজেরাই শাস্তি পাবে...
আর তুমি যদি ভাগ্যবান হও,
তাহলে তুমি তা নিজে চোখে দেখতে পাবে।’
সান্ত¦না এই-রবীন্দ্রনাথের ভাষায়-
‘ হে মোর দুর্ভাগা দেশ, যাদের করেছ অপমান
অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান।’
আমাদের শুভবুদ্ধি জাগ্রত হোক, এজন্য অপেক্ষায় থাকব জীবনের বাকী দিনগুলো।