‘বঙ্গবন্ধু
বলেছিলেন, শিক্ষায় বিনিয়োগ হচ্ছে শ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা শিক্ষা ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেছেন। ভবিষ্যতে শিক্ষাই
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মেগা প্রকল্প হবে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী
ডা. দীপু মনি এমপি।
রবিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে কুমিল্লার চান্দিনা
উপজেলা সদরের চান্দিনা ডা. ফিরোজা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কলেজ শাখার
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী
বলেন, আর্ন্তজাতিক একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে মাধ্যমিক শিক্ষায় ১০৬টি দেশের
মধ্যে ৭৫টি দেশকে পিছনে ফেলে বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে এবং দক্ষিণ এশিয়ায়
বাংলাদেশ প্রথম। দক্ষ জনশক্তি গঠনে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, পড়ালেখা হতে
হবে আনন্দময়। শিক্ষায় যাতাকলে যেন শিক্ষার্থীরা জর্জড়িত না হয়, সেদিকে
খেয়াল রাখতে হবে। সুশিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে।
তিনি
আরও বলেন- আমরা এখন পরিবর্তন চাই না রুপান্তর চাই, শিক্ষায় করোনাকালীন
সময়ে যে ঘাটতি হয়েছে তা পূরণ করতে আমরা একেবারে পরিপূর্ণ পরিকল্পনা প্রনয়ণ
করেছি, পরিকল্পনা প্রনয়ণের আগে বিষদ ভাবে গবেষণা করা হয়েছে, গবেষণা করে
ঘাটতি নিরুপণ করে নিরসনের জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছে। সে ঘাটতিও আমরা পুষিয়ে
নিবো। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, ডা. ফিরোজা
বেগমকে রোল মডেল হিসেবে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর এই
যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি বলেন- ‘আজকে বাংলাদেশে কেউ না খেয়ে থাকে
না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ অনেক এগিয়েছে। বাংলাদেশ কখনও শ্রীলঙ্কার হবে
না। সারাবিশ্ব আজ অস্থির অবস্থায় আছে। দূরদর্শী নেত্রী শেখ হাসিনার
আমাদেরকে সাশ্রয়ী হতে পরামর্শ দিয়েছেন। তাতেই লুটের রাজনীতিতে বিশ্বাসীরা
মাথাচারা দিয়ে উঠেছে।’
তিনি বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘একটি মহল বলে-
গেলে, গেলো। তাদেরকে বলি, পদ্মা সেতু হলো, নিজস্ব অর্থায়নে। লক্ষ লক্ষ
গাড়ি চলছে, সেতু কি আছে না গেলো ?
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য বীর
মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত এমপি’র সভাপতিত্বে অতিথিদের
মধ্যে বক্তৃতা করেন- কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. আবদুস
ছালাম, চান্দিনা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা তপন বকসী,
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আফজাল হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.
জিয়াউল হক মীর, পৌর মেয়র শওকত হোসেন ভূইয়া, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতার মেয়ে ডা.
জাবিন জলিল, ভাগিনা অধ্যাপক ডা. মাসুম সিরাজ, ডা. নওশীন সিরাজ।
অন্যদের
মধ্যে বক্তৃতা করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হরিলাল দেবনাথ, অভিভাবক
সদস্য কাজী তৌহিদুল আলম মঈন, শিক্ষার্থী নূসরাত জাহান আনিকা।
এশিয়া
মহাদেশের প্রখ্যাত গাইনী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক সৈয়দা ফিরোজা বেগম নারী
শিক্ষার অগ্রগতির লক্ষ্যে ১৯৭০ সালে চান্দিনা উপজেলা সদরে ‘চান্দিনা ডা.
ফিরোজা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর জীবদ্দশায় বেশ
ভাল ভাবেই চলছিল শিক্ষার মান। ২০০০ সালে তাঁর মৃত্যুর পর থেকে ক্রমশই হ্রাস
পেতে থাকে ওই বিদ্যালয়টির অবস্থান। স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত খ্যাতনামা
চিকিৎসক ড. প্রাণ গোপাল দত্ত এমপি চলতি বছরে ওই বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের
সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে পাল্টে যেতে থাকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ও
অবকাঠামো উন্নয়ন। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি আজ উচ্চ
মাধ্যমিক পর্যায়ে পরিণত হয়েছে।
পায়রা, বেলুন উড়িয়ে ও ফলক উন্মোচনের
মাধ্যমে বিদ্যালয়টির কলেজ শাখা উদ্বোধনের পর ডা. সৈয়দা ফিরোজা বেগম ও
বিদ্যালয়টির উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শণী করা হয়। এছাড়া ফুলেল
শুভেচ্ছা, সম্মাননা স্মারক প্রদানের মাধ্যমে অতিথিবৃন্দকে বরণ করে নেয়
শিক্ষার্থীরা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা সহকারি কমিশনার (এসিল্যান্ড)
উম্মে হাবিবা মজুমদার, সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (দাউদকান্দি) সার্কেল)
ফয়েজ ইকবাল, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়া আক্তার, থানা অফিসার
ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.
আরিফুর রহমান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কানিজ আফরোজ, সাবেক মেয়র
মফিজুল ইসলাম, আওয়ামীলীগ নেতা মজিবুর রহমান, কুমিল্লা উত্তর জেলা
স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি জিএস সুমন, সাধারণ সম্পাদক লিটন সরকার, কৃষকলীগ
নেতা শাহ সেলিম প্রধান, কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মো.
মহিউদ্দিন, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা, শিক্ষক,
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ওমর ফারুক ও বিদ্যালয়ের
প্রাক্তন শিক্ষার্থী মুক্তি সাহা।