মাসুদ আলম ||
করোনা
মহামারির কারণে এবার বছরের প্রথমদিন শিক্ষর্থীদের মাঝে উৎসব করে নতুন বই
বিতরণ হয়নি। বিগত বছরগুলোতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা শীত-কুয়াশা উপো করে
সকালেই নতুন বই নিতে বিদ্যালয়ে হাজির হতো। বই নিয়েই কেউ ছুট দিত বাড়ির পথে;
আবার কেউবা কাসে বসেই নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিত মনভরে। কিন্তু এবার করোনার
প্রাদুর্ভাবের কারণে এসবের কিছুই হয়নি।
তবুও বছরের প্রথমদিন নতুন বই
বিতরণ বন্ধ থাকেনি। উৎসব না হলেও এবার বই বিতরণে ছিল ব্যতিক্রমী উদ্যোগ।
শিক্ষকরা ভ্যানে বা হাতে করে শিক্ষার্র্র্থীদের বাড়ি বাড়ি বই পৌঁছে
দিয়েছেন। তেমনী এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছিলে কুমিল্লা হাইস্কুল। সেই সাথে
আগে পৌঁছে দেওয়া নতুন বই কুমিল্লা জেলার প্রত্যেকটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক
বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
বই
বিতরণে ব্যতিক্রমী উদ্যোগের মধ্যে গতকাল শুক্রবার সকালে কুমিল্লা শহরতলির
চাঁনপুর এলাকায় ভ্যানে করে শিার্থীদের বাড়িতে বই নিয়ে হাজির হন কুমিল্লা
হাইস্কুলের একদল শিক। তাঁরা তালিকা ধরে বাড়ি বাড়ি বই দেন। যেসব এলাকায়
ভ্যান নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি, সেসব এলাকায় হাতে করে বই নিয়ে যান শিকেরা।
বেলা
১১টার দিকে বই নেয় বিদ্যালয়টির শিার্থী আবুল হাসান। সে বলে, ‘অন্যবার
নিজেরা বই আনতে যেতাম। এবার স্যারেরা বাড়ি এসে বই দিয়ে গেলেন। এটাও খারাপ
না।’
একই বিদ্যালয়ের শিার্থী ফাতেমাও পেয়েছে বই। সে বলে, ‘বাড়িতে নতুন
বই পেয়ে ভালো লাগল। জীবনে এমনভাবে বই দিতে দেখিনি। স্যারদের কাছে আমরা
কৃতজ্ঞ।’
বাড়ি বাড়ি গিয়ে বই দেওয়ার বিষয়ে কুমিল্লা হাইস্কুলের প্রধান
শিক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, করোনার কারণে এবার বই-উৎসব সেভাবে করা গেল না।
তাই আমরা শিার্থীদের বাড়ি বাড়ি বই পৌঁছে দিচ্ছি।’
একই দিন কুমিল্লা মহানগর ও জেলার ১৭টি উপজেলার সব শিাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আংশিক বই বিতরণ করা হয়েছে।
গতকাল
সকালে নগরের নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে বই বিতরণ
কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধান শিক রোকসানা ফেরদৌস মজুমদার। এ বিদ্যালয়ে
নবম, অষ্টম ও চতুর্থ শ্রেণির বই দেওয়া হয়। কুমিল্লা জিলা স্কুলের প্রধান
শিক রাশেদা আক্তার ষষ্ঠ শ্রেণির বই বিলি করেন।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে
নগরের আওয়ার লেডি অব ফাতিমা গালর্স হাইস্কুলে গিয়ে দেখা গেল, বিদ্যালয়টির
প্রধান শিক সিস্টার গ্রাসিয়া বই বিতরণ করছেন। সঙ্গে অন্য শিকেরাও রয়েছেন। এ
বিদ্যালয়ে সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে বই নিতে আসেন মোস্তাক আহমেদ।
মোস্তাক আহমেদ বলেন, মেয়ে এখানে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। তার জন্য বই নিতে এসেছি।’
বেলা
১১টার দিকে কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজে নবম শ্রেণির বই বিতরণ
করেন অধ্য নার্গিস আক্তার। কুমিল্লা মডার্ন হাইস্কুলে অষ্টম ও সপ্তম
শ্রেণির বই বিতরণ করেন প্রধান শিক এ কে এম আক্তার হোসেন।
জেলা শিা
কর্মকর্তা মো. আবদুল মজিদ বলেন, কুমিল্লা মহানগর ও ১৭টি উপজেলার সব
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বই বিতরণ করা হয়েছে। বই বিতরণ কয়েক দিন
চলবে। করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বই দেওয়া হচ্ছে।