পদ্মা
সেতু, মেট্রো রেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলীর নিচ দিয়ে টানেল,
মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ সব
মেগাপ্রকল্পের কাজ দ্রুত এগোচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৩ বিলিয়ন ডলার
ছাড়িয়েছে। জিডিপিতে ভারতকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এমন অনেক আশাজাগানিয়া
খবর দিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বছর। প্রত্যাশার পারদ ক্রমেই চড়ছে। এই অবস্থায়
সুখানুভূতির তাল কেটে দিচ্ছে বাজারদর। চাল, ডাল, তেল, আলুর মতো কিছু
নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। বছরের শুরুতে খুচরা
বাজারে মিনিকেট, নাজিরশাইলসহ সরু চালের দাম ছিল ৪৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি।
বছরের শেষে দাম হয়েছে ৬২ থেকে ৬৮ টাকা কেজি। স্বর্ণা, পাইজাম, আটাশসহ মোটা ও
মাঝারি মানের চাল কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ৪৬ থেকে ৬০ টাকা
কেজি। সয়াবিন ও পাম তেলের দাম ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এক লিটার খোলা
সয়াবিন এখন ১১৬ টাকা এবং বোতলজাত সয়াবিন ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। অথচ বছরের
শুরুতে খোলা তেলের দাম ছিল ৮৬ থেকে ৮৮ টাকা এবং বোতলজাত তেল ছিল ১১০ টাকা
পর্যন্ত। বছরের শুরুতে বড় দানার মসুর ডাল ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি, এখন তা
৭০ থেকে ৭৫ টাকা। ছোট দানার ডাল ছিল ৯০ থেকে ১৩০ টাকা, এখন ১০০ থেকে ১৩০
টাকা। ভরা মৌসুমেও প্রতি কেজি আলুর দাম ৫০ টাকা। গত বছরের শুরুতে ছিল ২৫
থেকে ৩০ টাকা।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন, কিছু পণ্যের এভাবে
মূল্যবৃদ্ধির পেছনে চাহিদা-সরবরাহের নিয়ম যতটা না কাজ করছে, তার চেয়ে বেশি
কাজ করছে কারসাজি। চালের বাজারে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেট অনেক শক্তিশালী। তারা
সারা দেশের বাজার নিয়ন্ত্রণ করার মতা রাখে। সরকার ভারত থেকে চাল আমদানির
উদ্যোগ নিয়েছে। গুদামগুলোতেও পর্যাপ্ত চাল মজুদ আছে। কিন্তু সেসব চাল দ্রুত
বাজারে নিতে হবে এবং ভোক্তার হাতে পৌঁছাতে হবে। সরকারি উদ্যোগের
সীমাবদ্ধতা এখানেই। আর ব্যবসায়ীরা সে সুযোগটাই নিয়ে থাকে। তেল, চিনিসহ আরো
কিছু পণ্যের বাজারে অনেক আগে থেকেই এক ধরনের মনোপলি কাজ করছে। সেই মনোপলি
ভাঙতে হবে এবং এসব পণ্যের যৌক্তিক দাম নিশ্চিত করতে হবে। খোলাবাজারে পণ্য
বিক্রিসহ বাজারে সরকারের হস্তপে বাড়াতে হবে।