অন্য জেলা থেকে আনা এবং বিদেশি পেঁয়াজের ওপর নির্ভরতা কমাতে ইউনিয়ন
পরিষদের চেয়ারম্যান নিজেই শুরু করেছেন পেঁয়াজের চাষ। ইচ্ছা থাকলে সবই
সম্ভব, সেটিই প্রমাণ করেছেন ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়ন পরিষদের
চেয়ারম্যান ইয়ানুর রহমান বিপ্লব মোল্লা। তিনি ইউপি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব
পালনের পাশাপাশি শুরু করেছেন পেঁয়াজ চাষ। এ কাজে একদিকে তিনি যেমন ব্যাপক
সুনাম অর্জন করেছেন তেমনি কৃষকরাও তাকে অনুসরণ করতে শুরু করেছেন। এতে
ভবিষ্যতে ভোলা জেলায় পেঁয়াজ চাষের বিপুল সম্ভাবনা দেখছে কৃষি বিভাগ।
২০১৯ সালে সারাদেশের মতো ভোলার বাজারেও পেঁয়াজ সংকট তৈরি হয়। এতে
দিশেহারা হয়ে পড়েন সাধারণ ক্রেতারা। তারপর থেকেই পেঁয়াজ চাষ শুরু করেন
ইয়ানুর রহমান বিপ্লব মোল্লা। ওই বছর ৬ একর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে পেঁয়াজ
চাষ করেন। প্রথম বছর পরীক্ষামূলক চাষে সফলতা পেয়ে এ বছর প্রায় একশ একর
জমিতে পেঁয়াজ চাষের উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ইয়ানুর রহমান বিপ্লব মোল্লা বলেন, ‘২০১৯ সালে
দেশে পেঁয়াজের আমদানি কমে যাওয়ায় সারাদেশের মতো ভোলায়ও সংঙ্কট সৃষ্টি হয়।
তখন আমি ভাবলাম ভোলা জেলা পেঁয়াজ চাষের একটি অপার সম্ভাবনাময় জেলা। প্রথমে
পরীক্ষামূলভাবে ৬ একর জমিতে পেঁয়াজ চাষ শুরু করি। ৬ একরে ১ হাজার ৮০০ মণ
পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। প্রথম বছরের সাফলতা দেখে এ বছর ১০০ একর জমিতে পেঁয়াজ
চাষের উদ্যোগ নিই। কিন্তু করোনার কারণে তা সম্ভব হয়নি। ফলে ১৪ একর জমিতে
এবার পেঁয়াজের চাষ করেছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমার মূল লক্ষ, ভোলার মানুষ যেন আমদানি করা পেঁয়াজের
ওপর নির্ভরশীল না হন। ভোলায় পেঁয়াজ উৎপাদন করেই জেলার চাহিদা পূরণ করা,
এরপর অন্য জেলায় পাঠানো। সে লক্ষ্যে আমি কাজ করে যাচ্ছি। ভোলার কৃষকরা আমার
মতো পেঁয়াজ চাষে গুরুত্ব দিলে আমদানি করা পেঁয়াজের ওপর নির্ভরশীল হবো না।
চেয়ারম্যান হয়েও কৃষিকাজে নিয়োজিত হয়ে আমার ভালো লাগছে। কোন কাজই ছোট নয়।’
চেয়ারম্যানের এই সফলতা যেমন কিছু মানুষ দেখতে আসছেন তেমনি অনেকেই পেঁয়াজ কিনতেও আসছেন।
ভোলা শহরের বাংলা স্কুল মোড় এলাকার রিপন পাল বলেন, ‘আমি সবসময় বাজার
থেকে পেঁয়াজ কিনি। যখন শুনলাম ভোলায় বড় পরিসরে পেঁয়াজ চাষ হচ্ছে, তখন দেখতে
আসলাম। পেঁয়াজের ক্ষেত দেখে খুবই ভালো লাগল।’