করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে ১১ মাস ধরে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। গত বছরের মার্চের মাঝামাঝি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা হয়। এখন কোনো রকমে অনলাইনে বা দূরশিণ পদ্ধতিতে কাস চলছে। শিক্ষার্থীরা সরাসরি শিক্ষাঙ্গনে যেতে পারছে না, বিষণœতা ভর করেছে তাদের ওপর। শিশু শিক্ষার্থীদের অবস্থা করুণ, তারা বাইরে কোথাও যেতে পারছে না। এর মধ্যে একটি শিক্ষাবর্ষ অতিক্রান্ত হয়েছে। কবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে তা নিশ্চিত নয়। অথচ ঘর থেকে বের হওয়ার আকুতি সব শিক্ষার্থীর মধ্যেই রয়েছে। শিক্ষাঙ্গনে যেতে পারলে তাদের হয়তো ভালো লাগবে। দ্রুত কাসে ফিরে যেতে চায় তারা। ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী চায় তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরতে। অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের বেশির ভাগ স্কুল খোলার প।ে এডুকেশন ওয়াচ ২০২০-২১ অন্তর্র্বতীকালীন প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাকালে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দূরশিণ (টেলিভিশন, অনলাইন, রেডিও ও মোবাইল ফোন) পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হলেও তাতে মাত্র ৩১.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। দূরশিণ প্রক্রিয়ার বাইরে থাকা শিক্ষার্থীর ৫৭.৯ শতাংশ প্রয়োজনীয় ডিভাইসের অভাবে কাস করতে পারেনি। গ্রাম এলাকায় এ হার ৬৮.৯ শতাংশ। অনলাইন ক্লাস আকর্ষণীয় না হওয়ায় ১৬.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী তাতে অংশ নেয়নি। ৯৯.৩ শতাংশ শিক্ষার্থী বাড়িতে নিজে নিজে পড়ালেখা করেছে বলে জানিয়েছে।
বাস্তবতা নিরিখ করে ৭৬ শতাংশ অভিভাবক ও ৭৩ শতাংশ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দ্রুত স্কুল খোলার ব্যাপারে মত দিয়েছেন। ৫৮ শতাংশ শিক ও ৫২ শতাংশ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সতর্কতার সঙ্গে স্কুল খুলতে বলেছেন। ৮০ শতাংশ এনজিও কর্মকর্তা একই মত দিয়েছেন। ৮২ শতাংশ শিক্ষক স্কুল খোলার আগে স্বাস্থ্যবিধি মানা, মাস্ক ব্যবহার, স্যানিটাইজার ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব রার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। বিষয়গুলো বিবেচনার দাবি রাখে।
পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ধাপে ধাপে করোনায় কম সংক্রমিত এলাকায় স্কুল খুলে দেওয়া যেতে পারে। সমীায় অংশগ্রহণকারীরাও তা-ই বলেছেন। আগামী মার্চ থেকে বড় শহরের স্কুলগুলো খোলা যেতে পারে। পরিবেশ, পরিস্থিতি ও সমতা বিবেচনা করে স্কুল-কলেজ খুলতে হবে। এভাবে কাজ করলে শিক-শিক্ষার্থীরাও প্রস্তুতি নিতে পারবে। স্কুল খুললে প্রথমে উপস্থিতির হার কম হতে পারে; তবে সময়ে ঠিক হয়ে যাবে। ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর স্কুল-কলেজে যাওয়ার ইচ্ছা গুরুত্বপূর্ণ অবশ্যই। প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়াই উচিত।