স্থলবন্দর পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধায় নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কয়ার’। টুইন টাওয়ার কিংবা লন্ডন ব্রিজের আদলে স্থাপনাটি নির্মিত হচ্ছে। নান্দনিক এই স্থাপনা নির্মাণ করছে পঞ্চগড় জেলা পরিষদ। জানা গেছে, প্রতিবছর বাংলাবান্ধা স্থল বন্দর দিয়ে দেশ বিদেশের কয়েক লক্ষ পর্যটক যাতায়াত করে। এই স্থল বন্দর দিয়ে ভারত, নেপাল এবং ভুটানের সাথে ব্যাবসায়িক কার্যক্রম চলছে। পর্যটকরাও এই বন্দর ব্যবহার করে খুব সহজেই তিনটি দেশে ভ্রমণ করতে পারছেন। ফলে দিন দিন এ বন্দরের জনপ্রিয়তা বাড়ার পাশাপাশি সরকারের আয়ও বাড়ছে। এসব দিক বিবেচনা করে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কয়ার’ স্থাপনের কাজ শুরু করেছে জেলা পরিষদ।
বাংলাবান্ধা-ঢাকা মহাসড়কের উপরেই গড়ে উঠবে এই দৃষ্টিনন্দন স্কয়ার। মহাসড়কের দুই পাশে থাকবে ৫ তলার দুটি ভবন। ভবন দুটি যুক্ত হবে একটি সেতুর মাধ্যমে। সম্পূর্ণ স্থাপনা হবে স্টিল স্ট্রাকচারের। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। দেশের উত্তর গোলার্ধকে আরও পর্যটন বান্ধব করতে এই উদ্যোগ বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, প্রতি বছর পঞ্চগড়ে প্রায় লাখো পর্যটকের আনাগোনা হলেও তেমন অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা গড়ে উঠেনি। তাই জেলা পরিষদ থেকে দেশের উত্তরের শেষ সীমানা বাংলাবান্ধা এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কয়ার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এরই মধ্যে এই স্থাপনার কাজও শুরু হয়েছে। শিগগিরই বাংলাবান্ধার বুকে দৃশ্যমান হবে স্থাপনাটির পুরো অবয়ব।
পঞ্চগড় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী আব্দুল আলীম খান ওয়ারেশী জানান, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের কাছেই মহাসড়কের দু’পাশে স্টিল স্ট্রাকচারের দুটি পাঁচ তলা ভবন নির্মিত হবে। প্রতিটি ভবনের দৈর্ঘ্য হবে ৩০ ফুট এবং প্রস্থ ৩০ ফুট। প্রথম ভবনের নীচতলায় থাকবে ঐতিহাসিক জাদুঘর। সরকারের উচ্চ মহলের অনুমতি নিয়ে সেখানে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তিসহ ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে সম্পাদিত সকল চুক্তির চিত্র এবং বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংক্রান্ত তথ্য চিত্র রাখার কথা রয়েছে। দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ তলায় থাকবে আবাসিক সুবিধা। পঞ্চম তলায় থাকবে ওয়াচ টাওয়ার ও কফি কর্নার।
দ্বিতীয় ভবনের নিচতলায় থাকবে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও সিকিউরিটি ইউনিট। দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ তলায় থাকবে আবাসিক সুবিধা। পঞ্চম তলায় হবে ওয়াচ টাওয়ার ও খাবার হোটেল। দুটি ভবনকে ১০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২০ ফুট প্রস্থের একটি সেতু সংযোগ স্থাপন করবে। সেতুটি নির্মিত হবে মাটি থেকে ২৫ ফুট উপরে। সেতুটির মাঝ বরাবর ৫ ফুট চওড়া একটি রাস্তা রেখে দুই পাশে থাকবে দেশের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন পণ্য সামগ্রির স্টল। সরকারের অনুমোদন পেলে বাংলাদেশ ভারত, নেপাল ও ভুটানের স্টলও রাখার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। বাংলাবান্ধায় দৃষ্টিনন্দন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কয়ার নির্মিত হলে পর্যটন শিল্পে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। পর্যটকদের থাকা খাওয়াসহ বিনোদনের সুযোগ তৈরি হবে।
পঞ্চগড় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট বলেন, প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক পঞ্চগড়ে ঘুরতে আসেন। বিশেষ করে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট দেখতে যান তারা। কিন্তু সেখানে থাকা খাওয়ার তেমন কোন সুযোগ সুবিধা নেই্। পঞ্চগড়ের পর্যটন শিল্পকে আরও এগিয়ে নিতেই আমরা এই জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কয়ার’ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি, এটি নির্মিত হলে পঞ্চগড়ের পর্যটন শিল্পে নতুন মাত্রা যোগ হবে।