নিজস্ব
প্রতিবেদক: কলামিস্ট, প্রাবন্ধিক, লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ ইন্তেকাল
করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার ছেলে সৈয়দ নাসিফ
মকসুদ জানান, মঙ্গলবার বিকালে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তার বাবাকে স্কয়ার
হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। চিকিৎসকরা সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা
করেন।
আবুল মকসুদের পারিবারিক বন্ধু ও ব্র্যাকের অভিবাসন বিষয়ক
কর্মসূচির প্রধান শরীফুল হাসান বলেন, “এখন মরদেহ স্কয়ার হাসপাতালে আছে।
দাফনের ব্যাপারে পারিবারিক সিদ্ধান্ত হয়নি।”
বাংলা একাডেমি পুরস্কার
পাওয়া আবুল মকসুদ পরিচিত ছিলেন সমাজ, সংস্কৃতি ও রাজনীতির সমসাময়িক ঘটনাবলী
নিয়ে সংবাদপত্রে লেখা কলাম এবং গবেষণামূলক প্রবন্ধের কারণে। তার বয়স
হয়েছিল ৭৫ বছর।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
এই লেখকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। ১৯৪৬ সালের ২৩ অক্টোবর
মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার এলাচিপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সৈয়দ আবুল
মকসুদ। ১৯৬৪ সালে এম আনিসুজ্জামান সম্পাদিত সাপ্তাহিক নবযুগ পত্রিকায় তার
কর্মজীবন শুরু হয়।
পরে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি সমর্থিত সাপ্তাহিক
'জনতা'য় কাজ করেন কিছুদিন। ১৯৭১ সালে যোগ দেন বাংলাদেশ বার্তা সংস্থায়।
২০০৮ সালের ২ মার্চ তিনি সেখানকার সম্পাদকীয় বিভাগের চাকরি ছেড়ে দেন।
পত্রিকায়
'সহজিয়া কড়চা' এবং 'বাঘা তেঁতুল' শিরোনামে কলাম লিখে পরিচিত পান সৈয়দ আবুল
মকসুদ। তার সাহিত্যচর্চার শুরু হয় ষাটের দশকে, কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ
দিয়ে।
১৯৮১ সালে তার কবিতার বই ‘বিকেলবেলা’ প্রকাশিত হয়। ১৯৮৭ সালে
প্রকাশিত হয় তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘দারা শিকোহ ও অন্যান্য কবিতা’।
মানবাধিকার, পরিবেশ, সমাজ ও প্রেম নিয়েও তিনি লিখেছেন।
রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুর, বুদ্ধদেব বসু, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী, মাওলানা
আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মত প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদদের জীবনী ও
কর্ম নিয়ে গবেষণা করেছেন আবুল মকসুদ।
আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে নিয়ে
তিনি লিখেছেন ‘মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানীর জীবন, কর্মকা-, রাজনীতি ও
দর্শন (১৯৮৬) ও ভাসানী কাহিনী’। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহকে নিয়ে লিখেছেন ‘সৈয়দ
ওয়ালীউল্লাহর জীবন ও সাহিত্য’ , ‘স্মৃতিতে ওয়ালীউল্লাহ’।
এছাড়া বিভিন্ন
সময়ের সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক বিভিন্ন বিষয়ে তার
পর্যবেণ এসেছে পত্রিকায় প্রকাশিত তার কলামগুলোতে। আবুল মকসুদের লেখা বইয়ের
সংখ্যা চল্লিশের বেশি। সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৯৫ সালে তিনি বাংলা একাডেমি
পুরস্কার পান। সৈয়দ আবুল মকসুদ স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।