প্রতিবছরের
মতো এবারও রমজানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করবে, এমন আশঙ্কা অনেক আগেই
করা হয়েছিল। বাস্তবে সেটাই ঘটেছে। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে,
রমজান সামনে রেখে এরই মধ্যে অস্থির হয়ে উঠেছে ভোগ্য পণ্যের বাজার। রমজান
শুধু নয়, স্বাভাবিক সময়েও বাজারে পণ্যের দাম বাড়ানোর েেত্র কম আমদানি কিংবা
কৃত্রিম সংকটের কথা বলা হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। একই অজুহাতে এবারও
বাড়ানো হচ্ছে নিত্যপণ্যের দাম। প্রতিবছর রমজানে সরকারের প থেকে বাজার
মনিটরিং করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এবার ভিন্ন কৌশল নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
রমজান শুরুর আগেই ভোগ্য পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। গত এক মাস থেকে
রমজানে প্রয়োজনীয় বেশির ভাগ ভোগ্য পণ্যের দাম আগের চেয়ে বেড়ে গেছে এবং এখনো
সব পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী।
প্রতিবছর রোজা সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দাম
বাড়ানো হয়। দাম বাড়ানোর যত রকম কারসাজি আছে, তা করা হয়। এবারও তেমনটি ঘটছে
রোজা শুরুর আগেই। বাজার পর্যালোচনা করে কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা
হয়েছে, দুই দিনের ব্যবধানে খাতুনগঞ্জে পাইকারি পর্যায়ে ছোলার দাম মানভেদে
কেজিতেই বেড়েছে প্রায় ছয় টাকা। যদিও বাজারে পর্যাপ্ত ছোলা থাকায় দাম বাড়ার
কোনো কারণ নেই। সব ধরনের ভোজ্য তেলের বাজার অস্থির। কেজিতে আবারও তিন-চার
টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম।
বাজারে পণ্যের দাম কেন বাড়ে? সাধারণত চাহিদার
তুলনায় সরবরাহ কমে গেলে বাজারে যেকোনো জিনিসের দাম বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু মুক্তবাজারে যখন যেকোনো পণ্য সহজেই আমদানি করা যায়, তখন দাম বাড়ার
কথা নয়। কিন্তু চাহিদা ও সরবরাহের সূত্রে নয়, বাংলাদেশের বাজারে
জিনিসপত্রের দাম বাড়ে নানা অজুহাতে। কখনো অতিবর্ষণ, কখনো পরিবহন ব্যয়
বৃদ্ধি, কখনো আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে বাজারে জিনিসপত্রের
দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়। পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীদের একটি গোপন জোট
বা সিন্ডিকেটের কথা বরাবরই আলোচিত হয়। এখন একেক সময় একেকটি পণ্যের দাম
বাড়ানো হয়। চালের দাম বাড়ানোর পর আমদানি উন্মুক্ত করে দিয়েও বাজারের লাগাম
টেনে ধরা যায়নি। চাল আমদানি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু দাম সে অনুপাতে কমেনি।
আশার
কথা, বাজার নিয়ন্ত্রণে বিক্রি বাড়িয়েছে সরকারি ক্রয়-বিক্রয়কারী সংস্থা
টিসিবি। দ্বিগুণ পণ্য নিয়ে তাদের প্রাক-রমজানের বিক্রি শুরু হয়েছে গতকাল
থেকে। রোজার মাসে টিসিবি খোলাবাজারে বিক্রি অব্যাহত রাখবে, এটাই আমাদের
প্রত্যাশা।