কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং বড় শরণার্থী শিবিরে চার ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও আগুন নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব হয়নি। আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনী কাজে নেমেছে। সোমবার (২২ মার্চ) বিকেল ৩টার দিকে কুতুপালংয় শরণার্থী শিবিরের বালুখালী এলাকার ৮ ডব্লিউ নম্বর ব্লকে থেকে এ অগ্নিকাণ্ডের সূচনা হয়। তবে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় শত শত ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো দাবি করছে। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট কাজ করছে।
ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী কাজ করছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) প্রতিনিধি ও সিনিয়র সহকারী সচিব রাশেদুল হাসান। তিনি জানান, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে সেটি এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। মূলত বাতাসের গতিবেগ বেশি থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে পড়েছে।
সোমবার বিকেলে কক্সবাজারের ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) আতিকুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ‘কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাতাস গতি বেশি হওয়ার কারণে আগুনে বিভিন্ন ব্লকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। আগুন নেভানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আমাদের ফায়ার সার্ভিসের দল। এই মূহুর্তে আগুনের সূত্র বলা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা পাশের ব্লক থেকে লোকজন সরিয়ে নিচ্ছি।
রোহিঙ্গা নেতা মো. রফিক জানান, বিকেলে দিকে আগুন লাগে এবং দ্রুতই তা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় স্থানীয়ভাবে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়, পাশাপাশি খবর দেওয়া হয় ফায়ার সার্ভিসে। পরে ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করে। এখনও আগুনে নেভাতে সক্ষম হয়নি। এদিকে আশপাশের রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছেড়ে পালাচ্ছে।
এদিকে অতিরিক্ত ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামছু-দৌজা নয়ন জানান, ক্যাম্পে আগুন লাগার খবর শুনেছি। আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে। এখন অগ্নিকাণ্ডে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা সম্ভব না।’
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)-এর অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোশারফ হোসেন জানান, ‘উখিয়া রোহিঙ্গা শিবিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আমরা সবাই মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি। আসলে এ মূহূর্তে হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বলা সম্ভব না।’
আইএসসিজি-এর যোগাযোগ ও গণসংযোগ কর্মকর্তা সাইয়্যেদ মো. তাফহীম জানান, ‘বিকেলে কুতুপালং বালুখালী এলাকার রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সরকারি ও মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু এখনই সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতির ওপর বিস্তারিত তথ্য দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে আমরা দেখতে পাচ্ছি এর তীব্রতা অনেক। হতাহতের এবং ক্ষয়ক্ষতির খবর যাচাই করা হচ্ছে।’