রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডে নিহত বেড়ে ১১
Published : Wednesday, 24 March, 2021 at 12:00 AM
কক্সবাজারের
উখিয়ায় বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকা-ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১
জন হয়েছে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসিন
জানিয়েছেন।
কক্সবাজারে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের
কার্যালয়ে মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় এক প্রেস ব্রিফিং-এ তিনি বলেন, “অগ্নিকা-ের
ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ১১; খুব কম সংখ্যক মানুষ আহত হয়েছে।”
তিনি জানান,
আগুনে ক্যাম্পের নয় হাজার তিনশ পরিবারের আনুমানিক ৪৫ হাজার মানুষ তিগ্রস্ত
হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় মানুষের বসত ঘরসহ দুই শতাধিক স্থাপনা তিগ্রস্ত হয়েছে।
ব্রিফিংয়ে
কেউ নিখোঁজ হয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, তদন্তের পর এই
ব্যাপারে জানা যাবে। কেউ কেউ হয়ত আশপাশের কোনো ঘরে আশ্রয় নিয়ে থাকতে পারে;
পরে সেটা জানা যাবে।
সোমবার বিকাল ৪টার দিকে উখিয়ার বালুখালী ৮-ডব্লিউ
নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে তা পাশের ৯, ১০ ও ১১
নম্বর ক্যাম্পে ছড়িয়ে পড়ে বলে অতিরিক্ত ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন
কমিশনার সামছু-দৌজা নয়ন জানান।
তিনি বলেন, “ক্যাম্পের বসত ঘরগুলো ঝুপড়ির
মতো লাগোয়া হওয়ায় এবং সে সময় বাতাসের গতি বেশি থাকায় আগুন দ্রুত ছড়ায়।
আগুন লাগার সাথে সাথে স্বেচ্ছাসেবক কর্মীসহ স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা
চালায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেন।”
ফায়ার
সার্ভিস, সেনাবাহিনী, পুলিশ, এপিবিএন এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের পাঁচ
ঘণ্টার বেশি সময় চেষ্টার পর রাত সোয়া ৯টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার কথা জানান
কক্সবাজারের ১৪ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) অধিনায়ক এসপি আতিকুর
রহমান। তবে ক্যাম্পের কোনো কোনো অংশ সারারাতই ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়।
এর
আগে মঙ্গলবার সকালে কক্সবাজার ফায়ার স্টেশনের জ্যেষ্ঠ স্টেশন অফিসার শাহদাত
হোসেন বলেন, “আমরা এ পর্যন্ত সাতজন রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার করে এপিবিএনকে
হস্তান্তর করেছি। তাদের মধ্যে দুটি শিশু, দুজন নারী এবং বাকি তিনজন পুরুষ।”
শাহদাত
হোসেন জানান, পাশাপাশি চারটি ক্যাম্পের মধ্যে ৮ নম্বর ক্যাম্প পুরোপুরি
পুড়ে গেছে। বাকি তিনটি ক্যাম্পেরও বেশিরভাগ ঘর তিগ্রস্ত হয়েছে।
“সব
মিলিয়ে প্রায় দশ হাজার ঘর পুড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আগুন কীভাবে
লেগেছে, য়তির আর্থিক পরিমাণ কত, তা নিরূপন করবে তদন্ত কমিটি।”
ওই চার
ক্যাম্পের ঘর হারানো বাসিন্দাদের খাবার ও আশ্রয়ের জন্য ত্রাণ ও শরণার্থী
প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় কাজ করছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এদিকে অগ্নিকা-ের ঘটনায় সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
শরণার্থী
ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াতের নেতৃত্বে গঠিত এই
কমিটিকে অগ্নিকা-ের কারণ উদঘাটন এবং য়তির পরিমাণ নির্ধারণ করে প্রতিবেদন
দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে কক্সবাজারের ডিসি মো. মামুনুর রশীদ
জানিয়েছেন।
ক্যাম্পে আগুন লাগার পর পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী আবুল
কাশেম উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র খোলা হয় বিভিন্ন
এনজিওর প থেকে।
সেখানে দায়িত্বরত ব্র্যাকের সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা
ডা. রঞ্জু মিয়া জানান, সোমবার বিকাল থেকে দুই সহাস্রাধিক আহত মানুষকে তারা
চিকিৎসা দিয়েছেন।