ভারতের ছত্রিসগড়ের জাগারগুন্ডা-জোঙ্গাগুড়া-তারেমের-এ মাওবাদী হানায় মারা গেলেন অন্তত ২২ জন জওয়ান। আর এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত আরও ৩০ জন।
এছাড়াও মাওবাদীরা জওয়ানদের কাছ থেকে ১২টিরও বেশি আধুনিক অস্ত্র লুট করে পালিয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী দাবি, তারাও পাল্টা গুলি চালিয়েছে। তাতে ২৫-৩০ জন মাওবাদী নিহত হয়েছে। তবে তাদের দেহ পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে মাত্র এক জন মহিলা মাওবাদীর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
দুই মাওবাদী নেতা হিদমা ও সুজাতার খোঁজে প্রায় দুই হাজার নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ান জড়ো হয়েছিলেন ওই এলাকায়। বছর তিরিশেকের হিদমার মাথার দাম ৪০ লাখ টাকা। আগে সে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের আক্রমণ করেছে বলে অভিযোগ। যে জওয়ানরা গেছিলেন, তারা সকলেই জঙ্গলে লড়াই করার ব্যাপারে পারদর্শী সিআরপিএফের কোবরা বাহিনীর সদস্য। তাদের কাছে খবর ছিল, হিদমারা ওই জায়গায় ঘাঁটি গেড়েছে।
তারা বুঝতে পারেননি। আসলে তাদের জন্য ফাঁদ পেতেছিল মাওবাদীরা। নিরাপত্তা বাহিনীর প্রথম দলটি সেখানে পৌঁছতেই তিনদিক থেকে রকেট-গ্রেনেড নিয়ে ঘিরে ধরে মাওবাদীরা। শুরু হয় গুলির লড়াই। তাতেই এই জওয়ানদের মৃত্যু হয়।
সিআরপিএফের ডিজি-র দাবি, ২৫ থেকে ৩০ জন মাওবাদী মারা গেছে। তাদের দেহ ট্রাক্টরে করে নিয়ে চলে গেছে বাকি মাওবাদীরা। তিনি গোয়েন্দা তথ্য ভুল ছিল এই অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন।
এই ঘটনার পর যথারীতি রাজনীতি শুরু হয়ে গেছে। বিরোধীরা নরেন্দ্র মোদী সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন। আসামে ভোট প্রচার কাটছাঁট করে দ্রুত দিল্লি ফিরে একাধিক বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
তৃণমূলের মুখপাত্র ও রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ওব্রায়েনের অভিযোগ, ‘শাসকরা অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলেন। তারা সেই কাজকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভোট কুড়াবার জন্য রোড শো-তে ফুলের পাপড়ি ছড়াতে ব্যস্ত ছিলেন। তিনি ভারতীয় জওয়ানদের রক্ষা করার দিকে বেশি নজর দিলে ভালো হতো।’ প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সমানে পশ্চিমবঙ্গে ভোট প্রচার করা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিল তৃণমূল।
বিজেপি নেতা ও ছত্তিশগড়ের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী রামন সিং আবার কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘জওয়ানরা মারা যাচ্ছেন, আর মুখ্যমন্ত্রী আসামে প্রচার করছেন। রোম পুড়ছে, নীরো বেহালা বাজাচ্ছেন।’ সূত্র: জি-নিউজ/এএনআই