ভারতে আরো সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদন করতে আগ্রহী রাশিয়া। এ নিয়ে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনা চলছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্করের সঙ্গে মঙ্গলবার দিল্লিতে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এ তথ্য জানান। তবে রুশ সেনাবাহিনীর জন্য কী ধরনের সরঞ্জাম ভারতে উৎপাদন করা হবে সে বিষয়ে কোনো তথ্য তিনি দেননি।
তবে তারা বলেন, উভয় দেশের সরকার দীর্ঘদিন ধরে ভারতে রুশ সেনাবাহিনীর জন্য হেলিকপ্টার নির্মাণের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করছে।
লাভরভ বলেন, ‘‘আমাদের উভয়ের লক্ষ্য সামরিক প্রযুক্তিগত সহযোগিতার উন্নয়ন এবং আমরা আমাদের লক্ষ্যের বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছি।
‘‘এ কাজ নিজস্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এগুবে এবং ভারতের মাটিতে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর জন্য বাড়তি সরঞ্জাম উৎপাদনের সম্ভাবনার বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে।”
ভারত রাশিয়ার মিগ য্দ্ধুবিমান এবং এসইউ-৩০ জেট তৈরি করে। এছাড়া দুই দেশ সহযোগিতার ভিত্তিতে ভারতের মাটিতে সুপারসনিক ‘ব্রাক্ষ্মোস’ ক্রুজ মিসাইলের উন্নয়ন ও উৎপাদনে কাজ করছে।
ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার এই আলোচনা যদি ফলপ্রসু হয় তবে তা যুক্তরাষ্ট্রকে ক্ষুব্ধ করবে।
ইউক্রেইন থেকে ক্রিমিয়া দখল এবং ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগে রাশিয়ার উপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা এবং গোয়েন্দা বিভাগও ওই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে।
এ বিষয়ে লাভরভ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য দেশকে রাশিয়ার থেকে অস্ত্র কেনায় নিরুৎসাহিত করতে চাইছে। কিন্তু ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার সময় যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি নিয়ে কোনো কথা হয়নি। বরং উভয় পক্ষ নিজেদের মধ্যে সামরিক সম্পর্ককে আরো গভীর করার দিকে অধিক মনযোগ দিয়েছে।
এদিকে, ওয়াশিংটন এরই মধ্যে দিল্লিকে সতর্ক করে বলেছে, যদি তারা রাশিয়ার কাছ থেকে ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনে তবে তাদের যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে।
গত বছর একই কারণে তুরস্কের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।
২০১৮ সালেই ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনার বিষয়ে একটি চুক্তিতে আসতে চাইছে।
ভারত এজন্য ২০১৯ সালে রাশিয়াকে প্রাথমিকভাবে ৮০ কোটি মার্কিন ডলার পরিশোধ করেছে। এ বছরের শেষ নাগাদ মিসাইলের ব্যাটারির প্রথম সেট হাতে পাওয়ার আশা করছে ভারত।
জয়শঙ্কর বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে মিত্রতা সময় পরীক্ষিত এবং উভয় পক্ষ এ বছরের শেষ দিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক আয়োজনের বিষয়েও আলোচনা করেছে।
ঐহিত্যগতভাবে ভারত মূলত রাশিয়া থেকেই অস্ত্র কেনে। কিন্তু গত কয়েক বছরে দিল্লি যুদ্ধ হেলিকপ্টার, পরিবহন বিমান, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ড্রোন এবং অন্যান্য সামরিক নজরদারি সরঞ্জামের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের দিকে ঘুরতে চাইছে।