তানভীর দিপু:
গত ৩ মাসে ৫ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকার মাদক দ্রব্য উদ্বারসহ ১ হাজার ১২ আসামী গ্রেফতার করেছে কুমিল্লা জেলা পুলিশ। ৩ মাসে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে এ মাইলফলক অর্জন করেছে বলে জানিয়েছে কুমিল্লা জেলা পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, একটি গ্রাম থেকে একটি দেশ, মাদকমুক্ত বাংলাদেশ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে জেলা পুলিশ কুমিল্লা মাদক উদ্বারে সর্বাত্বক প্রচেষ্টা গ্রহন করেছে। পুলিশ সুপার আরো জানান, ভারত বাংলাদেশের সীমান্তবর্ত্তী বড় একটি জেলা কুমিল্লা। এ জেলা থেকে গত ২ জানুয়ারি থেকে ২১ এপ্রিল প্রায় ৩ মাস ১৯ দিনে ৪৮৩ জন আসামী গ্রেফতারসহ ২শ ১০ কেজি গাজা উদ্বার করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য ৩ কোটি ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। ৩৬০ জন আসামী গ্রেফতারসহ ৫৯ হাজার ৯শ ৬৮ পিস ইয়াবা উদ্বার করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ৭৯ লক্ষ ৯০ হাজার ৪ শ টাকা। ১০৭ জন আসামী গ্রেফতারসহ ৭ হাজার ৫শ ৯২ বোতল ফেনসিডিল আটক করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য ৩৭ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা। ১৫ জন আসামী গ্রেফতারসহ ৩৬৬ লিটার দেশী মদ উদ্বার হয়, যার আনুমানিক মূল্য ৩ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা। তাছাড়া হুইস্কি ১৬২ বোতল, বিয়ার ৪৮ বোতল, বিদেশি মদ ৯৬ বোতল, ইস্কাফ সিরাপ ১ হাজার ৩ বোতলসহ ৪৭ জনকে আটক করা হয়। এসকল উদ্বারকৃত মাদকের মূল্য ১১ লক্ষ ১৩ হাজার ৫শ টাকা। সব মিলিয়ে ১ হাজার ১২ জন মাদকের আসামীসহ ৫ কোটি ৩৪ লক্ষ ১৫ হাজার ৯শ টাকা মূল্যর মাদকদ্রব্য উদ্বার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আরো জানান, ২ টন গাজাসহ ১ হাজার ১২ আসামী গ্রেফতারের মাইলফলক অর্জন হয়েছে। এ অর্জনে আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না, একে আমরা আরো সামনে এগিয়ে নিতে চাই। আরো বেগবান করতে চাই। প্রতিটি থানাকে নিয়ে বিভিন্ন কর্মকৌশল গ্রহন করা হয়েছে। বিভিন্ন কৌশল হিসেবে মাদক ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা, চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়দের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনের আওতায় মামলা, মাদক বিরোধী আন্দোলন ও প্রচার, আন্তঃবাহিনীর সমন্বয় মাদক সেবীদের কাউন্সিলিং, তাদের চিকিৎসার উদ্যোগ, আত্মসমর্পন, পূর্ণবাসন, মাদকের উৎস, মাদকের রুট ও মাদক প্রবণ এলাকা চিহ্নিত করন, মাদক বিরোধী সংগঠনের ডাটাবেজ তৈরীসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহন। এ কর্মপরিকল্পনা চলমান মাদক বিরোধী অভিযানকে আরো গতিশীল করার পাশাপাশি কুমিল্লায় মাদক নির্মুলে গুরুত্বর্পর্ণ ভুমিকা রাখবে বলে তিনি জানান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মোঃ আজিম উল আহসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শাহরিয়ার মোহাম্মদ মিয়াজী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর দপ্তর) মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহান সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আফজল হোসেন, কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল হক, গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকার্ত আনোয়ারুল আজিমসহ অন্যান্যরা।