ঈদ
সামনে রেখে প্রতিবছরের মতো আবারও তৎপর হয়েছে সংঘবদ্ধ অপরাধীচক্র। ছিনতাই ও
অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বৃদ্ধির খবর পাওয়া যাচ্ছে। সাধারণ ছিনতাইকারীদের
পাশাপাশি অভিজাত শ্রেণির ছিনতাইকারীরাও পথে নেমেছে। গত বুধবার ভোরে
রাজধানীর কমলাপুর বিআরটিসি বাস ডিপোর পাশে প্রাণ হারিয়েছেন একজন
পরিচ্ছন্নতাকর্মী। ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে নিতে গিয়ে তাঁর প্রাণটাই কেড়ে
নিয়েছে অপরাধীরা। বৃহস্পতিবার সকালে খিলেেতর কুড়িল ফাইওভারে পাওয়া যায়
দুবাইপ্রবাসী সুভাষ চন্দ্র সূত্রধরের লাশ। গত রবিবার দিনদুপুরে যাত্রাবাড়ী
চৌরাস্তা মোড়ে এক ব্যবসায়ীকে ছুরি দেখিয়ে টাকা ও মোবাইল ফোনসেট ছিনিয়ে নিয়ে
যায় দুর্বৃত্তরা। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, গত ১৫ দিনে
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের আরো অন্তত ১৯টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।
প্রতিটি ঘটনায় ছুরিকাঘাতসহ মারধরে আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা
নিয়েছেন। এর বাইরে বাসাবাড়িতে চুরি, ডাকাতির ঘটনাও ঘটছে।
ছিনতাই ও
অজ্ঞান পার্টি মিলিয়ে ঢাকায় তিন শতাধিক গ্রুপ রয়েছে বলে এক সংবাদ সূত্রে
জানা যায়। কখনো কখনো ছিনতাইকারী আসে দল বেঁধে। কোনো কোনো ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত
হয় দামি গাড়ি। কোনো কোনো ধনীর ছেলে নেশার টাকা জোগাড় করতে এ অপরাধে জড়িয়ে
পড়েছে। একটি চক্র পেশা হিসেবেই বেছে নিয়েছে ছিনতাই। সংঘবদ্ধ এই চক্র
সম্পর্কে পুলিশের কাছে এমন সব ধরনের তথ্যই আছে। গোয়েন্দা তথ্য মতে, ডিএমপি
এলাকায় অন্তত ৩৫৮টি ছিনতাই স্পট রয়েছে। প্রতি ঈদের আগে এসব এলাকায় ছিনতাই
বেড়ে যায়। এর পাশাপাশি অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টির তৎপরতা রয়েছে বিভিন্ন
হাসপাতালের আশপাশ এলাকায়। বাস, লঞ্চ ও রেলস্টেশন এলাকায়ও এসব অপরাধীর বিচরণ
রয়েছে। ঈদ সামনে রেখে এদের তৎপরতা বাড়ে।
নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার
দায়িত্ব র্যাব-পুলিশ তথা আইন-শৃঙ্খলা রা বাহিনীর। ঈদ সামনে রেখে সংঘবদ্ধ
অপরাধীচক্র যখন বেপরোয়াভাবেই ছিনতাইয়ে নেমেছে, তখন আইন-শৃঙ্খলা রা
বাহিনীকেও ব্যাপক তৎপর হতে হবে। জননিরাপত্তায় কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। আমরা
আশা করব, ছিনতাইকারী ও অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বন্ধে আইন-শৃঙ্খলা রা বাহিনী
যথাযথ ভূমিকা রাখবে।