মাসুদ
আলম।। কুমিল্লাজুড়ে প্রচণ্ড তাপদাহে চরম দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে মানুষ।
রবিবার (২৩ মে) কুমিল্লায় ৩৮.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে
জেলা আবহাওয়া অফিস। এটি ছিলো গত এক যোগেও বেশি সময়ের মধ্যে দ্বিতীয়
সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। আজ সোমবারও এই তাপমাত্রা কুমিল্লাজুড়ে অব্যাহত থাকবে।
তবে এর মধ্যেই আগামী ২৪ ঘন্টার যে কোন সময় কুমিল্লায় দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া
এবং বজ্র ও বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে জেলা আবহাওয়া অফিসের
কর্মকর্তা ইসমাইল ভূঁইয়া।
তিনি জানান, সোমবার পর্যন্ত চলমান মৃদু
তাপপ্রবাহ শেষে ধীরে ধীরে কুমিল্লায় তাপমাত্রা কিছুটা কমবেও জনজীবনে
ভ্যাপসা গরমের প্রভাব থাকবে। এছাড়া ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ বাংলাদেশ
উপকূল অতিক্রম না করা পর্যন্ত এই গরম থাকবে। তবে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ বাংলাদেশ
উপকূল অতিক্রম করলে কুমিল্লায় তাপমাত্রা ও গরম কমে জনজীবনে স্বস্তি
ফিরবে।
এদিকে চলতি মাসের মে মাসের শুরু থকে আরম্ভ হওয়া এই প্রচ-
গরমে বিপাকে পড়েছের শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র-ছাত্রী, অফিস-আদালতগামী মানুষ।
সকালের রোদের আলোয় জানিয়ে দেয় সারা দিনের তাপদাহ কেমন হবে। রমজানের শুরু
থেকেই এ জেলায় গরমের মাত্রা যেনো বেড়েই চলেছে। গরমের তীব্রতায় ডায়রিয়া,
নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ অনেকেই। তারমধ্যে লোডশেডিংয়ের
ভোগান্তিতো আছেই।
এ তাপদাহ যেনো কেড়ে নিয়েছে সাধারণ মানুষের স্বস্তি।
জেলাজুড়ে গরমের তাপমাত্রা বাড়তি থাকায় শহরের ব্যস্ততম সড়ক গুলো বেলা বাড়ার
সঙ্গে সঙ্গে অনেকটা ফাঁকা হয়ে যায়। কেউ গাছের ছায়ার নিচে আবার কেউ রাস্তার
পাশে শরবতের দোকানে আশ্রয় নিতে দেখা যাচ্ছে। সেখান থেকে কিছুটা শীতল হয়ে
ফিরলেও তা বেশিক্ষণ ধরে রাখা সম্ভব হয়ে না।
শহর ঘুরে কয়েকজন পথচারী ও
রাস্তার পাশের ফুটপাতের বিভিন্ন ধরণের দোকান নিয়ে বসা দোকানিরা জানান, বেচা
কেনা দূরের কথা রোদের তাপে সড়কের পাশে বসাই যাচ্ছে না। গরমের তাপে অতিষ্ঠ
হয়ে দুপরের আগেই বাসায় চলে যাওয়া লাগে। তাছাড়া ক্রেতাই পাওয়া যাই না।
রিকশা
চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গরমের কারণে তারা দীর্ঘ সময় ধরে রিকশা
চালাতে পারে না। তাপমাত্রা বাড়ার আগ পর্যন্ত যে ভাড়া পাওয়া যায় তা নিয়েই
অনেকে বাসায় ফিরে যায়।
চিকিৎসকরা বলছেন, তীব্র গরমে শরীর থেকে অতিরিক্ত
ঘাম ঝরছে। এতে শরীর থেকে লবণ বের হয়ে যায়। ফলে শরীরের রক্তচাপ কমে যায়,
দুর্বল লাগে, মাথা ঝিমঝিম করে। যারা বাইরে কাজ করেন, প্রয়োজনীয় পানি পানের
সুযোগ পান না, তারা মারাত্মক পানিস্বল্পতার শিকার হচ্ছেন। শ্রমজীবী মানুষই
এর শিকার হচ্ছেন বেশি।
অন্যদিকে তাপদাহের কারণে সর্দি, কাশি আর নিউমোনিয়াসহ জেলায় বেড়েছে শিশুদের নানা রোগ। হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।