ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে
বাংলাদেশকে মাঝেমধ্যেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হয়। সম্প্রতি
পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট সুস্পষ্ট ‘ইয়াস’ লঘুচাপটি
আরো ঘনীভূত হয়ে গভীর নি¤œচাপে পরিণত হয়েছে। গত সোমবার ভোর ৬টায় ঘূর্ণিঝড়ে
রূপ নেওয়া নিম্নচাপটি আরো ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তর পশ্চিমে অগ্রসর হয়ে আগামী
বুধবার নাগাদ ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশের খুলনা উপকূলে পৌঁছতে পারে। দেড়
দশক ধরে একের পর এক ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে বারবার এসব এলাকার
মানুষের জীবন-জীবিকা বিপর্যস্ত হয়েছে। দুর্যোগকবলিত এই জনপদের মানুষ একটির
তি পুষিয়ে উঠতে না উঠতেই ফের নতুন নামে আঘাত হানছে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়।
এসব ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণ হারিয়েছে বহু মানুষ। সম্ভ্রান্ত অনেক পরিবার জমি ও
সম্পদ হারিয়ে অনেকে উদ্বাস্তু। আইলার পর আড়াই হাজারের মতো পরিবারকে এলাকা
ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হয়েছে বলে খবরে প্রকাশ। উপকূলীয় এলাকায় নদীতে
জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পেলেই বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ
করে। আইলায় বাঁধ ভেঙে চার বছরের বেশি সময় মানুষকে পানিবন্দি থাকতে হয়েছে।
গত কয়েক বছরে উপকূলে আঘাত হেনেছে নার্গিস, আইলা, মহাসেন, কোমেন, রোয়ানু,
ফণী, বুলবুল, আম্ফান। এসব ঘূর্ণিঝড়ের ত এখনো শুকায়নি। আবার ঘূর্ণিঝড় আঘাত
হানলে বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিতে পারে বলে শঙ্কায় ভুগছে উপকূলবাসী।
ঘূর্ণিঝড়ের
প্রভাবে য়তি কমাতে উপকূলীয় এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি
সতর্কতামূলক নানা পদপে নিয়েছে সরকার। আবহাওয়াবিদ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
কর্মীরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রকৃতি ও এর বিপদ সম্পর্কে যথাযথ ধারণা রাখার
পাশাপাশি ঝড় আঘাত আনার সময়ে করণীয় সম্পর্কে উপকূলের বাসিন্দাদের সতর্ক করা
হচ্ছে। এটাই হতে পারে য়তি এড়ানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায়। গত রবিবার গণভবন
থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ বিষয়ে
সবাইকে সতর্ক করছেন। সরকারের প থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবেলায় এবারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে তিন গুণ আশ্রয়কেন্দ্র
প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আধুনিক প্রযুক্তির কারণে ঘূর্ণিঝড়ের মতো
প্রাকৃতিক দুর্যোগের খবর এখন অনেক আগে থেকেই জানা যায়। সরকারের প থেকেও
এসব বিষয়ে যথেষ্ট সতর্কতা নেওয়া হয়ে থাকে। সরকার নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ
মোকাবেলায় সব ধরনের চেষ্টা চালায়। তবে এ ক্ষেত্রে জনসচেতনতারও প্রয়োজন
রয়েছে। বিশেষ করে প্রাকৃতিক দুর্যোগে জান-মাল রার েেত্র আগে থেকেই
আশ্রয়কেন্দ্রে উপস্থিত হওয়ার ব্যাপারে মানুষকে সচেতন হতে হবে।