ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
চান্দিনা-ঝলম সড়ক
এক কিলোমিটার ভোগান্তিতে ১২ কিলোমিটার উন্নয়ন ফিকে
পাঁচ অংশ সংস্কার না হওয়ায় বিপাকে হাজার-হাজার যাত্রী ও চালকরা
Published : Saturday, 29 May, 2021 at 12:00 AM, Update: 29.05.2021 1:35:44 AM
 এক কিলোমিটার ভোগান্তিতে ১২ কিলোমিটার উন্নয়ন ফিকেরণবীর ঘোষ কিংকর:
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা সদরের সাথে পাশ্ববর্তী বরুড়া উপজেলার ঝলম বাজারের সংযোগ সড়কটির সংস্কার কাজ ২ বছরেও সম্পন্ন করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। টেকসই কাজ করতে সংশোধিত ডিজাইনের প্রস্তাব পাশ না হওয়ায় ঝুলে আছে প্রকল্পের কাজ।
সড়টির বিভিন্ন স্থানে এক কিলোমিটারের বেশি সংস্কার কাজ বাকি থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দুই উপজেলার বাসিন্দাদের। সড়কটির চান্দিনা অংশের ৫টি স্থানে মাটি কাটার পর সেখানে কোন রকম সংস্কার কাজ না করায় বেশ বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে গাড়ি চালক ও যাত্রীদের। শুকনো মৌসুমে ধুলো-বালুর খেলা, আর বর্ষায় কাঁদা পানিতে একাকারে যান চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে।   
খোঁজ নিয়ে জানা যায়- ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাথে যুক্ত হওয়া দুই উপজেলার সেতু বন্ধনের ১৩ কিলোমিটারের ওই সড়কটি সংস্কার ও বর্ধিত করণ কাজের জন্য ৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দ পায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ২০১৯ সালে টেন্ডার হওয়ায় কাজটির দায়িত্ব পায় রানা বিল্ডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ১৩ কিলোমিটার সড়ক বর্ধিতকরণ, কালভার্ট নির্মাণ ও কার্পেটিং সম্পন্ন করার কাজ প্রায় ৯৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়। আরসিসি ও কার্পেটিং জটিলতায় ঝুলে যায় বাকি ৫ শতাংশ কাজ। গত এক বছরেও ওই জটিলতা শেষ না হওয়ায়  চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দুই উপজেলার বাসিন্দাদের।
ওই সড়কে চলাচলরত সিএনজি অটোরিক্সা চালক মফিজুল ইসলাম জানান- রামমোহন থেকে চান্দিনা পর্যন্ত ৭ কিলোমিটারের পথ। এর মধ্যে এতবারপুর বাজার থেকে হারং পর্যন্ত ৫টি পয়েন্টে রাস্তা কেটে রাখায় আমাদের অনেক কষ্ট হয়। বিশেষ করে বর্ষাকালে কাঁদা-পানিতে গাড়ির চাকা দেবে আটকে যায়। অনেক সময় গাড়ি টেনে তুলতে হয়।
রিক্সা ভ্যান চালক বিল্লাল হোসেন জানান- যে স্থানগুলো কাজ করা হয়নি সেগুলো পাকা রাস্তা থেকে অন্তত এক-দেড় ফুট নিচে দেবে আছে। মালামাল নিয়ে একা চলাচল করতে পারিনা। শুকনো অবস্থায় ২-৪জন মিলে ধাক্কা না দিলে কোন রকমে পার হই কিন্তু বর্ষা মৌসুমে তাও সম্ভব নয়।
রানা বিল্ডার্স এর স্বত্বাধিকারী মোঃ ইসহাক জানান- আমাদের কোটি কোটি টাকা আটকিয়ে আছে। বিল পাচ্ছি না। এছাড়া ওই কাটা অংশে  আরসিসি ঢালাই ধরা ছিল না, সড়ক ও জনপথ আমাদেরকে ওই অংশ গুলি কী দিয়ে কাজ করবো এখনো কোন  নির্দেশনা দিচ্ছে না। তবে জন দুভোর্গের কথা চিন্তা করে শীঘ্রই কাজ শুরু করবো।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানায়- জেলা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প কুমিল্লা জোনের আওতায় কুমিল্লা- ব্রাহ্মণবাড়িয়া- চাঁদপুর- লক্ষীপুর- নোয়াখালী-ফেনী ৬টি জেলার ২৪টি সড়ক নিয়ে ওই প্রকল্প। এর মধ্যে কুমিল্লা জেলায় ৬টি সড়ক রয়েছে। ওই ৬টি সড়কের মধ্যে একটি হচ্ছে চান্দিনা-ঝলম সড়ক। প্রকল্পের ডিজাইনে ক্ষতিগ্রস্থ স্থানগুলোর নিচে একাধিক লেয়ার ও আরসিসি উল্লেখ না থাকায় পরবর্তীতে সংশোধিত ডিজাইন দেয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এদিকে করোনা কালিন সময়ে যথাযথ ভাবে সংশোধিত ওই ডিজাইন ও অর্থ বরাদ্দের বিষয়টির অগ্রগতি না হওয়ায় ওই কাজ সম্পন্ন করার জন্য ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়।  
সড়ক ও জনপথ বিভাগের কুমিল্লা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রেজা-ই-রাব্বি জানান- ওই সড়কের ডিজাইন ৪ বছর আগের। কাজ শুরু করার যে স্থান গুলোর নিচের অংশে কাঁদা লেয়ার বেরিয়ে এসেছে সেখানে কংক্রিটের লেয়ার দেওয়ার চেয়ে পাথরের লেয়ার দিয়ে কাজ করলেই বেশি মজবুত হবে এমনটা ভেবে আমরা সংশোধিত প্রস্তাব দেই। কিন্তু আমাদের আগের টেন্ডারে ওইসব স্থানে একাধিক লেয়ারসহ আরসিসি ঠালাই উল্লেখ না থাকায় ঠিকাদারও খরচ বেড়ে যাওয়ায় কারণে কাজ বন্ধ রেখেছে।
তিনি আরও জানান- করোনা কালিন সময়ের কারণে ওই সংশোধিত প্রস্তাবটি এখনও একনেকে পাশ হয়নি। যে কারণে ঠিকাদারও ওই কাজ সম্পন্ন করতে পারছে না। যেসব স্থানের কাজ বাকি রয়েছে ওই স্থানগুলোর দৈর্ঘ্য কম হলেও চালক ও যাত্রীদের ভোগান্তি অনেক বেশি। তবে আসন্ন বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে ওইসব স্থানগুলো চলাচলের উপযোগি করতে প্রাথমিক ভাবে কিছু কাজ করার জন্য ঠিকাদারের সাথে আমাদের আলোচনা হয়েছে।