বিডিনিউজ:
মহামারীর মধ্যে এক বছরের বেশি সময় বন্ধ থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনলাইনের
পাশাপাশি সরাসরি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পরীক্ষার ব্যবস্থা নিতে
বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন- ইউজিসি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পাঠানো
ইউজিসিরিএকটি চিঠিতে বলা হয়, “কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায়
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার স্বার্থে প্রত্যেক
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদনক্রমে সরাসরি ও অনলাইন
পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা
হলো।”
ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম বলেন, “আমরা
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে চিঠি দিয়েছি। আমরা দুটো অপশন
দিয়েছি। যদি অবস্থা ভালো হয় তাহলে সরাসরি পরীক্ষা নেয়া যাবে। নইলে অনলাইনে
পরীক্ষা নিতে হবে।”
করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার পাঁচ শতাংশের নিচে নামলে
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরাসরি শারীরিকভাবে উপস্থিত থেকে পরীক্ষা নেয়া যাবে
বলে জানান তিনি।
অধ্যাপক দিল আফরোজ বলেন, “তবে শারীরিকভাবে উপস্থিত থেকে
পরীক্ষা নেয়ার ক্ষেত্রে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন ফলো করতে হবে।
আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছি, চীনের টিকা আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থীদের যেন প্রায়োরিটির ভিত্তিতে টিকা দিয়ে দেয়া হয়।
“পাবলিক
বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ১১ লাখ টিকা লাগবে। টিকা দেয়া হলে পাবলিক
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়া যাবে। পাঁচ শতাংশের নিচে সংক্রমণের হার না
নামলে অনলাইনেই ইউজিসির গাইডলাইন অনুযায়ী পরীক্ষা নিতে বলেছি আমরা। দেড়
সপ্তাহ আগে সে প্রজ্ঞাপন আমরা দিয়েছি।”
আগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে ইউজিসির নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এখন তা তুলে নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
“এতোদিন
আমরা পরীক্ষা নেয়ার অনুমতি দেইনি, কারণ আমরা ভেবেছিলাম কোভিড ভালো হয়ে
যাবে। কিন্তু আমরা কল্পনাও করিনি দেড় বছর ধরে বসে থাকতে হবে। আর টিকা ছাড়া
বিশ্ববিদ্যালয় খোলা সম্ভবই না।”
করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাবের পর গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
এ
সময়ে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস হলেও পরীক্ষা বন্ধ
রয়েছে। ফলে দুটি সেমিস্টারের পরীক্ষা আটকে থাকায় ৪৯টি পাবলিক
বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক লাখ শিক্ষার্থী সেশনজটের শঙ্কায় রয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
গত বুধবার
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সংবাদ সম্মেলনে এসে জানান, মহামারী পরিস্থিতি ‘খুব
বেশি প্রতিকূল না হলে’ আগামী ১৩ জুন স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হবে।
তবে আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় খোলার কোনো সিদ্ধান্তে আসেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
ইউজিসির চিঠিতে পরীক্ষার বিষয়ে গত ২২ ডিসেম্বরের নির্দেশনা অনুসরণের করতে বলা হয়েছে।
ওই
নির্দেশনায় স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বশেষ
সেমিস্টারে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া
আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখতে হবে। এর আগে গত ৬ মে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের
উপাচার্যদের সাথে এক বৈঠকে অনলাইনে চূড়ান্ত পরীক্ষা নিতে বলেছিল ইউজিসি।
ওই সময় ইউজিসির সদস্য সাজ্জাদ হোসাইন জানিয়েছিলেন, সেশনজট এড়াতে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে সরাসরিও পরীক্ষা নিতে পারবে।
“সেক্ষেত্রে
যতটা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সম্ভব নিতে হবে। অনেক ছোট বিশ্ববিদ্যালয় আছে,
তারা যদি সরাসরি পরীক্ষা নিতে পারে, নিবে,” বলেছিলেন তিনি।