Published : Saturday, 19 June, 2021 at 12:00 AM, Update: 19.06.2021 1:28:23 AM
নিজস্ব
প্রতিবেদক: একমাস আগে ড্রাইভিংয়ের চাকরি হারায় মিরাজ। আবারো চাকরির খোঁজে
ছিলো সে। বৃহস্পতিবার রাতে চাকরির পাওয়ার জন্যই ফখরুল আলমের গাড়ীর চালক
বেলালের সাথে রওনা হয় নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে। ‘বদলি’ ড্রাইভার হিসেবেই হয়তো
তাকে পরখ করে দেখতে চেয়েছিলেন ফখরুল আলম। কিন্তু বিধিবাম। চালকের পাশে বসেই
প্রাণ হারাতে হলো চালক মিরাজের। গতকাল শুক্রবার ভোর রাতে ঢাকা থেকে
নোয়াখালী যাবার পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সুয়াগাজী এলাকায় জোড় কানন
রেষ্টুরেন্টের সামনে ইউটার্নে শ্যামলী পরিবহনের বাসের ধাক্কায় প্রাণ হারান
ঢাকার খিলগাওয়ের বাসিন্দা ফখরুল আলম, বেলাল এবং মিরাজ। গুরুতর আহত হন
মাহবুব মাহবুব নামে আরো এজন।
এম্বুল্যান্স চালকের কাছ থেকে ফোন পেয়ে
সকালে এসে কুমিল্লার ময়নামতি হাইওয়ে ক্রসিং থানায় আসেন মিরাজের ভাই ও বাবা।
এসেই দেখেন মিরাজের মৃতদেহ সাদা ব্যাগে মোড়ানো। থানার লাশ ঘরে রাখা
মিরাজের দেহ। ছেলের মরদেহের কাছেই যেতে পারেন নি শোকাহত বাবা। থানা গেটে
কথা হয় বাবা মোবারক হোসেনের সাথে। কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান, বেলাল বলেছিলো
মিরাজকে চাকরি দিবে। তাই তাকে নিয়ে এসেছিলো। আমার ছেলে চাকরির খোঁজে
জীবনটাই দিয়ে গেলো।
বাবার সাথেই আসা মিরাজের ভাই পুরোই নির্বাক। সে যেন
বুঝতেই পারছে না- কি ঘটলো তাদের জীবনে। একাবার ভাইয়ের মরদেহের কাছে
আরেকবার তার বাবার কাছে ছুটোছুটি আর অস্থিরতায় যে তার শোক কমছিলোই না।
পুলিশ
জানায়, ১৮ জুন শ্রক্রবার ভোর রাতে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজী
এলাকার শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা-মেট্রো ব-১৫-২৫১৩) বাসের সাথে
প্রাইভেটকারের (ঢাকা মেট্রো-গ ৩৯-৭৬৯১) মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হয়েছে ৩ জন ।
আহত হয়েছে আরো এক জন। নিহত এবং আহতরা সবাই প্রাইভেটকারের যাত্রী। গত রাতে
ঢাকার খিলগাও এলাকা থেকে প্রাইভেটকারটি নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে রাত ৩
টায় দুর্ঘটনায় পতিত হয়।
ময়নামতি হাইওয়ে ক্রসিং থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, কুমিল্লা সুয়াগাজীর জোড় কানন রেষ্টুরেন্টের
সামনে প্রাইভেটকারটি ইউটার্ন অতিক্রম করার সময় অপর দিক থেকে আসা শ্যামলী
পরিবহনের বাসটি ধাক্কা দেয়। এসময় প্রাইভেটকারের চার যাত্রীর মধ্যে
ঘটনাস্থলে দুজন নিহত হয় আর হাসপাতালে নেওয়ার পথে একজন নিহত হয় আর আহত হয়
একজন। দুর্ঘটনাকবলিত বাস এবং প্রাইভেটকারটি পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। বাসের
চালক এবং সহকারী পলাতক রয়েছে।
দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- প্রাইভেটকারের
মালিক লক্ষীপুর জেলার হামন্দী এলাকার ফখরুল আলম দুলাল, শেরপুর নলিতাবাড়ী
এলাকার বেলাল হোসেন, ঢাকার খিলগাও এলাকার মিরাজ। এছাড়া মাহবুব নামে এক
ব্যাক্তি গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে চিকিৎসাধীন আছেন।