জহির শান্ত ।।
আগামীকালই
কুমিল্লার আরো ৬৬২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পাচ্ছে মুজিব শতবর্ষ
উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী উপহার জমিসহ ঘর। রবিবার (২০ জুন) সকাল সাড়ে ১০ টায়
সারাদেশের ৫৩ হাজার ৩৪০টি ঘরের সাথে কুমিল্লার জন্য প্রস্তুত এই ঘরগেুলোও
হস্তান্তর করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে
এসব ঘর হস্তান্তর কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
জানা গেছে, ভূমিহীন
দরিদ্রদের জন্য নির্মাণ করা এসব ঘরের মধ্যে যেগুলোর সাথে সংযোগ সড়ক নেই-
সেসব ঘরে সংযোগ সড়ক তৈরি ছাড়াও বিদ্যুৎ ও পানির সুব্যবস্থাও করা হয়েছে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে কুমিল্লার জন্য বরাদ্দ আসা ১ হাজার ২৯১টি ঘরের মধ্যে ৬৬২টি
ঘরই ঠিক সময়ের মধ্যে তুলে দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে গতকাল শুক্রবার বিকালে
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
এসময়
উপস্থিত থেকে প্রকল্পটির বর্তমান অবস্থা ও আগ্রগতি তুলে ধরেন স্থানীয়
সরকার বিভাগ কুমিল্লার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শওকত ওসমান, অতিরিক্ত জেলা
প্রশাসক(সার্বিক) মোঃ শাখাওয়াত হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)
শাহাদাত হোসেনসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
প্রেস ব্রিফিংয়ে
জানানো হয়, গত ফেব্রুয়ারি মাসে কুমিল্লার জন্য বরাদ্দ প্রাপ্ত ঘরের সংখ্যা
ছিলো ১ হাজার ২৯১টি। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ মিলিয়ে ৩ হাজার ৭০ জন ভূমিহীনকে
এই প্রকল্পের আওতায় আনা হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রথম ধাপের ৩৪৩ জনকে ঘর হস্তান্তর
করা হয়েছে এবং দ্বিতীয় ধাপের ৬৬২টি ঘর হস্তান্ত করা হবে। রাজধানী থেকে
প্রধানমন্ত্রীর সাথে উপজেলা পর্যায়ে যুক্ত হয়ে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানের
মাধ্যমে এসব ঘর হাতে পাবেন সৌভাগ্যবানরা। যেসব ঘরের সাথে সংযোগ সড়ক নেই
সেসব ঘরে সংযোগ সড়ক তৈরী ছাড়াও বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
এছাড়াও
জানানো হয়, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে জনপ্রতিনিধি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও
বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের নিজস্ব অর্থায়নে প্রতিশ্রুত ঘরের সংখ্যা ১৩৫টি। যার
মধ্যে ২৮ টি ঘর নির্মিত হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ এ্যাডমিনেস্ট্রেশন সার্ভিস
এসোসিয়েশন কুমিল্লার কর্তৃকও ৫টি ঘর নির্মান করা হয়েছে।
জেলাপ্রশাসনের
দেয়া তথ্য মতে, দ্বিতীয় ধাপের কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায় সমাপ্ত হয়েছে
৯টি, সদর দক্ষিণ ৫৩টি, চৌদ্দগ্রাম ১২৫টি, নাঙ্গলকোট ৪৫টি, লাকসাম ২৪টি,
মনোহরগঞ্জ ০৮টি, লালমাই ১০টি, বরুড়া ৭০টি, চান্দিনা ৫৩, দাউদকান্দি ৫২টি,
মেঘনা ২৪টি, তিতাস ১৫টি, হোমনা ২৬টি, মুরাদনগর ৭০টি, দেবীদ্বার ১২টি,
ব্রাহ্মণপাড়া ১৫টি, বুড়িচং ৩০টিসহ মোট ৬৬২টি ঘর উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত
আছে। বাস্তবায়নাধীন ঘরের সংখ্যা ৬২৯টি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়,
প্রকল্পের এসব ঘরগুলো শুধু গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মধ্যে হস্তান্তর করার মধ্য
দিয়েই শেষ নয়, এসব প্রকল্পে যারা বসবাস করবে তাদের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ
ব্যবস্থা ও কর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হবে।
সাংবাদিকদের
এক প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার বিভাগ কুমিল্লার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ
শওকত ওসমান জানান, আবহাওয়া এবং করোনা পরিস্থিতির প্রতিকূলতার কারনে বাকি
ঘরগুলো নির্মান কাজে সময় ব্যয় হচ্ছে। তবে দ্রুত কাজ শেষ করার চেয়ে টেকসই ঘর
নির্মানের প্রতিই নজর দিচ্ছে প্রশাসন। এছাড়া সরকারি খাসজমি নির্ধারণ এবং
ঘর নির্মানের জন্য জমি তৈরীর বিষয়টিতেও সময় নিয়েছে নির্মানকারীরা।
বুড়িচংয়ের ভূমিহীন দরিদ্ররা পাচ্ছেন ৩০ ঘর:
রবিবার
কুমিল্লায় যে ৬৬২টি ভূমিহীন দরিদ্র পরিবারের মাঝে ঘর হস্তান্তর করা হবে এর
মধ্যে বুড়িচং উপজেলায় রয়েছে ৩০টি ঘর। বিষয়টি নিশ্চিত করে বুড়িচং উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাম্মৎ সাবিনা ইয়াসমিন জানিয়েছেন, আগামীকাল ২০ জুন
রবিবার সারাদেশে একযোগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায়
ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে ২য় পর্যায়ে নির্মিত ঘর সুবিধাভোগীদের মাঝে
হস্তান্তর করা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই গৃহ
হস্তান্তরের কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লা জেলার
বুড়িচং উপজেলার বাকশীমুল ইউনিয়নের বড় আনন্দপুর মৌজায় নির্মিত ৩০ টি ঘর
ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে হস্তান্তর করা হবে।