ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
প্রধানমন্ত্রীর ঘর উপহার পেয়ে আনন্দে কাঁদলেন হতদরিদ্র ফিরোজা খাতুন
শাহীন আলম
Published : Sunday, 20 June, 2021 at 6:22 PM
প্রধানমন্ত্রীর ঘর উপহার পেয়ে আনন্দে কাঁদলেন হতদরিদ্র ফিরোজা খাতুনস্বামী পরিত্যাক্তা ফিরোজা খাতুনের বাড়ি সুবিল ইউনিয়নের রাঘবপুর গ্রামে। ইমন নামে সাত বছরের এক ছেলে সন্তান রয়েছে তার। এতোদিন থেকেছেন অন্যের একটি টিনের ঘরে। স্বামী চলে যাওয়ায় মাথাগুজার ঠাঁই বলতে ওই ঘরটিই ছিলো শেষ সম্বল। অন্যের বাড়িতে কাজ করেই চলতো মা ছেলের সংসার।
রোববার (২০জুন) দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার ঘরের দলিলপত্র ও ঘরের চাবি পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন ফিরোজা খাতুন। মাথাগুজার একটু আশ্রয় পেয়েছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত ঘর আমি পেয়েছি। এটা আমার জন্য বড় আনন্দের। এ জন্য কর্তৃপক্ষসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতার সাথে ধন্যবাদ জানাচ্ছি'। ঘর পেয়ে এভাবে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছিলেন ফিরোজা খাতুন। ফিরোজা খাতুনের মত ঘর পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেছেন এমন অনেকেই। দেবিদ্বারের খালেদা আক্তার, সুবিলের বিল্লাল হোসেন, বারুর গ্রামের আবদুল জলিলও ঘর পেয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে ভুলেননি, ‘কখনই ভাবিনি এত বড় একটি উপহার পাব, সত্যি এটি আমাদের জন্য বিরল ঘটনা। আমাদের মাথাগুজার ঠাঁই হলো। ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’      
রোববার (২০জুন) দুপুরে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন গৃহহীন ৬২পরিবারকে জমি ও গৃহ হস্তান্তর করেন দেবিদ্বার উপজেলা প্রশাসন। এর আগে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারাদেশে ৫৩ হাজার ৩৪০টি জমিসহ ঘর প্রদানের কার্যক্রম উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উপজেলা হলরুমে আয়োজিত জমিসহ গৃহ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসনের সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল উপস্থিত থেকে ৬২হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ঘরের চাবি ও জমির দলিলপত্র তুলে দেন। 
ইউএনও রাকিব হাসানের সভাপতিত্বে সংসদ সদস্য রাজী ফখরুল বলেন, সমাজের হতদরিদ্র কোন মানুষ গৃহহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার জমিসহ ঘর প্রদান করে বিশে^ অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। এমন দৃষ্টান্ত বিশে^ আর কোথাও নেই। 
বক্তব্যে ইউএনও রাকিব হাসান বলেন, উপজেলা প্রশাসন প্রথম পর্যায়ে ১০৫টি ঘর হস্তান্তর করেছে। ২য়পর্যায়ে আরও ৬২টি ঘর বিতরণ করা হয়েছে। আশ্রয়হীনদের জন্য মাননীয় এমন উদ্যোগ বাংলাদেশকে এগিয়ে যাচ্ছে অনেক দূর। তিনি আরও বলেন,  প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছে এ দেশে যেন কেউ গৃহহারা না থাকে। সেই লক্ষ্যে আমাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা ইউএনও অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১কোটি ৮৪ লক্ষ ২হাজার টাকা ব্যয়ে ৬২ টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ঘরগুলো হলো, উপজেলার সুবিল ইউনিয়নের বুড়িপাড় বাজারের পাশে ৩০টি, জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের বারুর গ্রামে ১৫টি, ভানী ইউনিয়নে ৩টি, ধামতি উত্তরপাড়ায় ২টি এবং সুলতানপুর ইউনিয়নে ১২টি। 
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি ঘরে দুটি শয়নকক্ষ, একটি করে বারান্দা, রান্নাঘর ও বাথরুমসহ নানা সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে। ঘর সংলগ্ন এলাকায় পাকা রাস্তা, স্কুল, মসজিদ-মাদরাসা এবং বাজার রয়েছে। পর্যাপ্ত আলো বাতাসসহ প্রতিটি ঘরে বিশুদ্ধ পানি ও বিদ্যুতের সুবিধা রয়েছে। যাদের ঘর প্রদান করা হচ্ছে তাদের ওই এলাকাতে যেন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা থাকে সে বিষয়টি বিবেচনা করা হয়েছে। পর্যাপ্ত আলো বাতাসসহ প্রতিটি ঘরে বিশুদ্ধ পানি ও বিদ্যুতের সুবিধা রয়েছে। যাদের ঘর প্রদান করা হচ্ছে তাদের ওই এলাকাতে যেন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা থাকে সে বিষয়টি বিবেচনা করা হয়েছে। 
ঘর বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবুল কাশেম ওমানী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাজমা বেগম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন, অফিসার ইনচার্জ মো.আরিফুর রহমান, জেলাপরিষদ সদস্য মোসা.শিরিন সুলতানা, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল হোসেন রাজু, জিএস আবদুল মান্নান মোল্লা, প্রভাষক মো. সাইফুল ইসলাম শামীম, কুমিল্লা উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সদস্য মো. সাদ্দাম হোসেন, জাফরগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসেন, সুবিলের ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবু তাহের সরকার, রসুলপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. কামরুল ইসলাম, সুলতানপুরের ইউপি চেয়ারম্যান মো. সফিকুল ইসলাম, গুনাইঘর দক্ষিন ইউনিয়নের আবদুল হাকিম প্রমুখ।