মো. হাবিবুর রহমান, মুরাদনগর ||
চট্টগ্রাম
বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের প্রধান সমন্বয়কারী ও আওয়ামীলীগ কেন্দ্রিয় কমিটির
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, এ জাতির আশা-আকাংখা,
প্রাপ্য অধিকার আদায়ের লক্ষে আওয়ামীলীগ গঠিত হয়েছে। দলটির প্রতিষ্ঠাকাল
থেকেই সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই সংগ্রাম করেছেন। জাতির জনক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেনি। এ দেশের
গনতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে জেল জুলুমসহ অনেক লাঞ্চিত হয়েছেন। দেশ
স্বাধীনের পর দেশদ্রোহীরা বঙ্গবন্ধুকে বেশীদিন বাঁচতে দেয়নি। ১৫ আগষ্টের
কালো রাত্রিতে তাকে স্বপরিবারে নির্মম ভাবে হত্যা করে। তারা ভেবেছিল
বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেই পাকিস্তানী রাজত্ব কায়েম করবে। কিন্তুু আল্লাহর
অশেষ মেহেরবানীতে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে
থাকায় নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পান। এরপরও আমাদের নেত্রী শেখ
হাসিনাকে ১৮ বার মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। সেই শত্রুরা এখনো উৎপেতে
আছে, সুযোগ পেলেই তারা আবার ছোবল দিবে।
হামলাকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি
কঠোর হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, যারা এখন শেখ হাসিনাকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্রে
লিপ্ত রয়েছেন, তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। তাদেরকে স্বমূলে নিশ্চিন্ন
করে দেওয়া হবে। দেশ ও দেশের বাইরে থেকে যারাই ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন, তারা
বোকার স্বর্গে বাস করছেন। আপনাদের এ আশা কোনদিন পূর্ণ হবেনা ইনশাল্লাহ।
মাহবুব-উল
আলম হানিফ বৃহস্পতিবার দুপুরে মুরাদনগর নুরুন্নাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
মাঠে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে
এসব কথা বলেন।
কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ম. রুহুল
আমিনের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক হাজী রোশন আলী মাস্টারের উপস্থাপনায় এতে
বিশেষ অতিথি ছিলেন, সাবেক ডেপুটি স্পীকার অধ্যাপক আলী আশরাফ এমপি, জাতীয়
সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক
আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও
প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, এফবিসিসিআই’র সাবেক
সভাপতি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এমপি, সুবিদ আলী ভুইয়া এমপি, রাজী মোহাম্মদ
ফখরুল এমপি, সেলিমা আহমাদ মেরী এমপি, আরমা দত্ত এমপি।
অন্যান্যের মধ্যে
আরো বক্তব্য রাখেন, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হানিফ
সরকার, আব্দুল মান্নান জয়, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার,
সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, শিল্প ও বানিজ্য সম্পাদক নজরুল ইসলাম
সরকার, দেবিদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, মেঘনা উপজেলা
চেয়ারম্যান সাইফুল মিয়া, হোমনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল
মজিদ, দাউদকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট আহসান হাবিব, তিতাস
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত আলী, চান্দিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ
সম্পাদক এডভোকেট মহিউদ্দিন আলম প্রমুখ।
বর্ধিত সভায় শোক প্রস্তাব পাঠ
করেন, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলঅম রাজীব।
সভঅর শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম
বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা মোতাহের হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে
চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের প্রধান সমন্বয়কারী ও আওয়ামীলীগ কেন্দ্রিয়
কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, দলীয় গঠনতন্ত্র
অনুযায়ী আসন্ন ইউপি নির্বাচনে প্রার্থীদের নাম কেন্দ্রে পাঠাতে হবে। আর
যারা নৌকার বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করবেন, আগামীতে তারা
দলের পদ পদবী থেকে বঞ্চিত হবেন। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের নিয়েই মেয়াদ উত্তীর্ণ
কমিটিগুলো গঠন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের
ভরসার দল এখন আওয়ামীলীগ। তাই এ দলে অনেকেই ঠাই পেতে চাচ্ছে। জামায়াত ও
যুদ্ধাপরাধীর সাথে জড়িত ছিল বা আছে, তাদের কিংবা তাদের বংশধরদের দলের সদস্য
করা থেকে বিরত থাকতে হবে, নতুবা নিজের পদ-পদবী হারাবেন। আওয়ামীলীগকে
শক্তিশালী করতে হলে ত্যাগি নেতা-কর্মীদেরকে নিয়ে অঙ্গ সংগঠনের কমিটি করতে
হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক ডেপুটি স্পীকার অধ্যাপক আলী আশরাফ
এমপি বলেন, আগে বাংলাদেশকে কেউ চিনত না, বঙ্গবন্ধুকে চিনত। এখন বাংলাদেশকে
উন্নয়নের রোল মডেলে রুপান্তরিত করায় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ^ চিনে।
প্রবীন এ দলটাকে আরো শক্তিশালী করতে মাসে মাসে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের নিয়ে
সভা করতে হবে। তাদের দু:খ কষ্ট শুনতে হবে। আমি চান্দিনা এলাকায় নিয়মিত
সভা-সমাবেশ করে আসছি। প্রত্যেক ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের নাম, পিতার
নাম ও পরিবার সম্পর্কে আমি জানি।
জাতীয় সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রাম
বিভাগীয় আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ
স্বপন এমপি বলেন, বিদেশে একবার ঘুরতে গিয়েছিলাম। এক লোক আমার দেশের নাম
জানতে চেয়েছিল। আমি অকপটে বলেছিলাম বাংলাদেশ। কিন্তু সে চিনতে পারে নাই।
যখন বল্লাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দেশ, তখন সে হাসি দিয়ে ওঠলেন এবং সহসাই
চিনতে পারলেন।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক
সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর বলেন, কিশোর বয়স থেকেই ছাত্রলীগ করে
আওয়ামীলীগ বুকে ধারণ করেছি। দলের স্বার্থে বিভিন্ন উপজেলায় চষে বেরিয়েছি।
ত্যাগি নেতাদেরকে মূল্যায়ন করতে হবে। হাইব্রীডদের দলের পদ-পদবী দেওয়া যাবে
না।