মুজিবুর রহমান দুলাল, লাকসাম.।।
মোটর ও ব্যাটারী চালিত রিক্সা-ভ্যান বন্ধে সরকারি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে আজ রোববার কুমিল্লার লাকসাম পৌরশহরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ওইদিন সকাল ১০টায় পৌরশহরের লাকসাম বাইপাস এলাকায় কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কে রিক্সা শ্রমিক ও জেলা গণসংহতি আন্দোলন’র যৌথ উদ্যোগে ঘন্টাব্যাপী রিক্সা শ্রমিকেরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
রিক্সা শ্রমিকদের এই কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা জানিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ গ্রহণ করেন গণসংহতি আন্দোলনের কুমিল্লা জেলা এবং লাকসাম উপজেলা কমিটির নেতৃবন্দ।
ওইদিন প্রায় দেড় সহ¯্রাধিক অটোরিক্সা ও ভ্যান চালক, এবং গণসংহতি আন্দোলন’র নেতাকর্মী এই বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ গ্রহণ করে। সকাল ৯ টা থেকে পৌরশহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে বিভন্ন শ্লোগান সম্বলিত ব্যানার, ফেষ্টুন নিয়ে লাকসাম বাইপাস এলাকায় জড়ো হতে থাকে। ওই তারা সরকারের আকস্মিক ভাবে মোটর ও ব্যাটারী চালিত রিক্সা ও ভ্যান বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে লিফলেট বিতরণ এবং বিক্ষোভ মিছিল করে। সেখান তারা ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন। একপর্যায়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পৌরশহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে এসে অবস্থান নেয়। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এ কে এম সাইফুল আলম রিক্সা শ্রমিকদের নানাভাবে আশ্বস্থ করলে তারা কর্মসূচি স্থগিত করেন।
এ সময় গণসংহতি আন্দোলন কমিটির কুমিল্লা জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইমরান হোসেন ইমন রিক্সা শ্রমিকদের দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলন’র কুমিল্লা জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইমরান হোসেন ইমন রিক্সা শ্রমিকদের ওইসব রিক্সাগুলোকে আধুনিকায়ন, পরিবেশ বান্ধব এবং সঠিক নীতিমালা প্রণয়ন করে ব্যাটারী চালিত সকল পরিবহনের পৌর লাইসেন্স প্রদানের দাবি জানান। অন্যথায় আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে সমাবেশ ডেকে হরতাল-অবরোধসহ কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারী দেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, লাকসাম অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা আবুল কালাম, মোশারেফ হোসেন, তৌহিদুর রহমান, ও জাফর আহম্মদ প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, চলমান মহামারী করোনার কারনে এমনিতেই বেকারের সংখ্যা বাড়ছে, বিভিন্ন ট্রেডের শ্রমিকরা কাজ হারাচ্ছে। সেখানে নিজেদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে ব্যাটারী চালিত রিক্সা চালিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে আছে। সরকারের হঠাৎ এমন আত্মঘাতি ঘোষনার ফলে এই এলাকার কয়েক হাজার রিক্সা শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বেন। এবং তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে।
এদিকে লাকসাম পৌরসভার মেয়র মো. আবুল খায়ের জানান, সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রানালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপন’র বিরুদ্ধে আমাদের কিছুই করা নাই। তবে পৌরশহরে প্যাডেল চালিত রিক্সা চালানোর জন্য চালকদের উৎসাহিত করতে তিনি রিক্সা এবং চালকের লাইসেন্স ফি মওকুফসহ প্রত্যেক চালককে ৫০০ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন।
অপরদিকে রোববার লাকসাম পৌরসভা মেয়রের ঘোষণা মোতাবেক পৌরসভা প্রাঙ্গণে বেশ কিছু প্যাডেল চালিত রিক্সা চালকের হাতে প্রতিশ্রুতির অর্থ তুলে দেন।