ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
কারাগারে কয়েদি শনাক্তে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি কেন নয়: হাইকোর্টের রুল
Published : Tuesday, 29 June, 2021 at 12:00 AM
দেশের সব কারাগারে কয়েদিদের শনাক্তে ফিঙ্গার প্রিন্ট ও আইরিশ স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক ডাটা পদ্ধতি চালু করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। দুই সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন সচিব ও কারা মহাপরিদর্শককে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (২৮ জুন) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ। আর তিন আইনজীবীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
এর আগে চট্টগ্রামে একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত এক আসামির পরিবর্তে ভিন্ন একজনের জেল খাটার ঘটনাটি শুনানির জন্য হাইকোর্টে আসে।
গত ৭ জুন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি কুলসুম আক্তার ওরফে কুলসুমীর পরিবর্তে জেল খাটা মিনুকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট।
পাশাপাশি এ ঘটনায় চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর এম এ নাছের, আইনজীবী নুরুল আনোয়ার, আইনজীবী বিবেকানন্দ চৌধুরী ও আইনজীবীর সহকারী সৌরভকে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছিল। সেই আদেশের ধারাবাহিকতায় সোমবার  তারা আদালতে হাজির হন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৬ সালের জুলাই মাসে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার রহমতগঞ্জ এলাকায় কোহিনুর আক্তার ওরফে বেবী নামে এক নারী খুন হন। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি খুনের মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় কুলসুম আক্তার ওরফে কুলসুমী নামে এক নারী গ্রেফতার হন। ২০০৮ সালে এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
পরে ২০০৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি কুলসুম আক্তার জামিন লাভ করেন। এ মামলায় ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত কুলসুমকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদ- দেন।
রায়ের দিন আসামি কুলসুম আক্তার ওরফে কুলসুমী আদালতে অনুপস্থিত থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়নাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
এরপর ২০১৮ সালের ১২ জুন মিনু নামের এক নারীকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি কুলসুম আক্তার ওরফে কুলসুমী সাজিয়ে আত্মসমর্পণ করানো হয়। তখন আদালত তাকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠায়।
এর মধ্যে ২০১৯ সালের ২৩ এপ্রিল কুলসুম আক্তার হাইকোর্টে আপিল দায়ের করেন, একইসঙ্গে জামিনের আবেদন করেন। এছাড়াও চলতি বছরের ২১ মার্চ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি আবেদন করেন। আবেদনে তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ১২ জুন কারাগারে পাঠানো আসামি প্রকৃত সাজাপ্রাপ্ত আসামি কুলসুম আক্তার ওরফে কুলসুমী নন।
এ আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্ট কারাগারে থাকা মিনুকে আদালতের হাজির করে তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন। তখন তিনি জানান, তার নাম মিনু, তিনি কুলসুম নন। মর্জিনা নামে এক নারী তাকে চাল ও ডাল দেবে বলে জেলে ঢুকায়। তিনি প্রকৃত আসামি কুলসুম আক্তারকে চেনেন না।
কারাগারের রেজিস্টার যাচাই করে হাজতি আসামি কুলসুমী এবং সাজাভোগকারী আসামির চেহারায় অমিল খুঁজে পান আদালত। তখন আদালত কারাগারের রেজিস্টার বইসহ একটি উপনথি হাইকোর্ট বিভাগে আপিল নথির সঙ্গে পাঠিয়ে দেয়।
এ ঘটনাটি তখন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ঘটনাটির বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে সুপ্রিম কোর্টের আইজনীবী মোহাম্মদ শিশির মনির হাইকোর্টের একটি বেঞ্চের নজরে আনেন। হাইকোর্ট বিষয়টি আমলে নিয়ে লিখিত আকারে বিষয়টি জানাতে নির্দেশ দিয়ে শুনানির দিন ঠিক করেন।