ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
এক বৃষ্টিতেই থই থই কুমিল্লা
Published : Friday, 2 July, 2021 at 12:00 AM, Update: 01.07.2021 11:52:14 PM
এক বৃষ্টিতেই থই থই কুমিল্লাতানভীর দিপু ।।
জলাবদ্ধতা নিরসনে কুমিল্লা সিটি  কর্পোরেশন কোটি কোটি টাকা ব্যয়ের পরও এক বৃষ্টিতেই ডুবে গেল পুরো কুমিল্লা নগরী। গত বুধবার সন্ধ্যার বৃষ্টিতেই নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বৃষ্টি ও ড্রেনের পানি একাকার হয়ে যায়। রাত গড়াতেই ফেসবুকে ভেসে বেড়ায় বৃষ্টিতে কুমিল্লা নগরীর নিমজ্জিত ছবি। বুধবার রাতেই কুমিল্লা নগরীর জনবহুল ও বানিজ্যিক এলাকা চকবাজার থেকে ছাতিপট্টি পর্যন্ত পুরো সড়ক চলে যায় পানির নিচে। নালার পানি ও বৃষ্টির পানি ফুটপাত উপচে ঢুকে পরে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। এছাড়া এই এলাকার বাসাবাড়িতেও প্রবেশ করে বৃষ্টির পানি।  
টানা বৃষ্টিতে ডুবে যায় নগরীর সদর হাসপাতালের নিমতলী, জিলা স্কুল সড়ক, বাগিচাগাও, ভিক্টোরিয়া কলেজ, নজরুল এভিনিউ, কালিয়াজুরি, ছোটরাসহ বিভিন্ন এলাকা। সবচেয়ে বেশি সময় ধরে জলাবদ্ধতায় থাকে নগরীর টমছমব্রীজ থেকে শুরু করে আশরাফপুর পর্যন্ত এলাকার সড়ক ও সড়কের পাশের স্থাপনা।
বাগিচাগাঁও এলাকার মোঃ মনির হোসেন জানান, রাতের বৃষ্টিতেই রাস্তায় পানি বাড়তে থাকে। পরে রাস্তার পানি সরতে না পেরে বাসায় ঘরে ঢুকে পরে। কোন কিছু সরানোর আগেই ঘরের আসবাবপত্র পানির নিচে চলে যায়।
একই এলাকার ইউসুফ জানান, ড্রেনে পানি ধারন ক্ষমতা না থাকলে বাড়ি ঘরে পানি উঠবেই। এসব সিটি কর্পোরেশনের দেখা উচিত। না হয় দিন দিন আরো খারাপ অবস্থা হবে।
চকবাজার এলাকার সড়কে জলাবদ্ধতার যেন কোন সমাধানই নেই। বৃষ্টি এলেই সড়কে পানি জমে যায়। যানবাহন চলাচলের পাশাপাশি পথচারীদের হেঁটে চলাচলও অসম্ভব হয়ে পরে। চকবাজার এলাকারা বাসন্দা রাশেদ আহসান জানান, চকবাজার থেকে ছাতিপট্টি এলাকার রাস্তায় জলাবদ্ধতার চিত্র যেন আজীবনের। এই রাস্তায় বৃষ্টি হলে হাঁটু ডুবে না এমন ঘটনা নাই। রাস্তার পাশে ড্রেন ঠিক করেও কোন কাজ হয় নাই।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর কালিয়াজুরি ও ছোটরা এলাকায় গিয়ে দেখা যায় বাসা বাড়ির সামনে জমে আছে বৃষ্টির পানি। করাতের বৃষ্টির জলাবদ্ধতার রেশ কাটেনি পর দিন দুপুরেও। বিভিন্ন অলিগলিতে জমে থাকা পানি সরছে না ঘন্টার পর ঘন্টা। কালিয়াজুরির এলাকার শাহানা বেগম জানান, মেইন ড্রেইনের পানি না সরলে বাড়ি ঘরের পানি সরবে কিভাবে।
বুধবার রাতে কুমিল্লা জিলা স্কুল রোডে পানি ছিলো হাঁটুর উপর। এই পথে চলাচলকারী অনেক যানবাহনে পানি ঢুকে বিকল হয়ে যায়। রাস্তার উপর প্রাইভেটকার, সিএনজি ও মোটরসাইকেল বিকল হয়ে পরে থাকতে দেখা যায়। জিলা স্কুল রোডে চলাচলকারী মোটর সাইকেল চালক জহির উদ্দিন জানান, কি ভোগান্তি, মোটর সাইকেলে সাইলেন্সার পাইপে পানি ঢুকে স্টাট বন্ধ হয়ে যায়। পরে বৃষ্টিতে ভিজে বাইক ঠেলে নিয়ে যাওয়া লেগেছে।
কুমিল্লা নগরীর বাসিন্দা ফুয়াদ আদনান বিন জামাল জানান, কুমিল্লা নগরীকে একটি অপরিকল্পিত নগরে পরিনত করেছেন যারা এবং বর্তমান মেয়র উনার দায় এড়াতে পারেন না। ভারী বর্ষণে কুমিল্লা সিটির যে করুণ পরিস্থিতি হয়েছে এই জলাবদ্ধতা আগামীতে ভয়ঙ্কর রূপ ধারন করবে।
জলাবদ্ধতার এমন চিত্র বৃহস্পতিবার সারাদিন ব্যাপিই ছিলো পুরো নগরী জুড়ে। ফেসবুকে নগরীর জলাবদ্ধতার ছবি দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে নগরবাসী। সবার অভিযোগ নগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ণ না হওয়ায় বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত হচ্ছে নগরবাসী। গবে গতকাল  নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের দেখায় যায় ভোগান্তিতে পরা নাগরিকদের খোঁজ খবর নিতে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের কুমিল্লার প্রধান মোঃ ইসমাইল ভুইয়া জানান, বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কুমিল্লা জেলায় ২০৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতি আরো ৭২ ঘন্টা থাকতে পারে।