ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
হিলিতে পেঁয়াজের দাম বাড়লো কেজিতে ৭ টাকা
Published : Saturday, 3 July, 2021 at 12:00 AM
লকডাউনের মধ্যে পাঁচ দিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে সাত টাকা। এতে বিপাকে পড়েছে পাইকার ও নি¤œআয়ের মানুষ।
হিলি স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে ইন্দোর ও নাসিক জাতের পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে আগের তুলনায় বেশি আমদানি হচ্ছে। পাঁচ দিন আগে ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ বন্দরে ২৪-২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ৩২ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া নাসিক জাতের পেঁয়াজ পাঁচ দিন আগে ২৭-২৯ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে ৩৪ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
হিলি বন্দরে পেঁয়াজ কিনতে আসা পাইকার ইসমাইল আলী বলেন, ‘আমরা হিলি স্থলবন্দর থেকে পেঁয়াজ কিনে তা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে সরবরাহ করি। কিন্তু প্রায় প্রতিদিন যেভাবে দাম বাড়ছে, তাতে পেঁয়াজ কেনা নিয়ে সংশয়ে পড়ে গেছি। আমরা এখন কত দামে পেঁয়াজ কিনবো আর কত দামে বিক্রি করবো তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘একদিকে লকডাউন, তার ওপর ঈদ উপলক্ষে মোকামগুলোতে পেঁয়াজের চাহিদা আগের তুলনায় বেড়েছে। বাধ্য হয়ে বাড়তি দামে পেঁয়াজ কিনে মোকামে পাঠাচ্ছি। তবে পরিমাণ কমিয়েছি। বন্দর দিয়ে প্রতিদিন পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে, তারপরও দাম বাড়ার কোনও যৌক্তিকতা নেই। এটা কারসাজি ছাড়া কিছুই না।’
হিলির পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘লকডাউনকে ঘিরে দেশের বাজারে পেঁয়াজের একটা চাহিদা রয়েছে। এর ওপর বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি কম হওয়ায় এবং শুক্রবার বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বন্ধের কারণে বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমেছে। এর ফলে বেড়েছে দাম।’
তিনি বলেন, ‘জুন ক্লোজিংয়ের কারণে ব্যাংক বন্ধ থাকায় বন্দর দিয়ে গতকাল আমদানি হওয়া ১৩টি ট্রাকের মধ্যে অগ্রিম শুল্ক পরিশোধ করা ছয়-সাত ট্রাক পেঁয়াজ খালাস হয়েছে। বাকি ট্রাকগুলো খালাস না হওয়ায় বাজারে সরবরাহ কমায় দাম বাড়ছে। এছাড়া যে দেশি পেঁয়াজ মোকামে কয়েক দিন আগে বিক্রি হয়েছিল এক হাজার পাঁচশ থেকে এক হাজার ছয়শ টাকায়, বর্তমানে তা বেড়ে এক হাজার আটশ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। ফলে আমদানিকৃত পেঁয়াজের ওপর চাপ পড়ায় দাম বাড়ছে। তবে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি না বাড়লে দাম বাড়বেই।’
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক নাজমুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘বন্দর দিয়ে আগে যেখানে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত আমদানিকৃত পণ্যবাহী ট্রাক দেশে ঢুকতো, এখন বিকাল ৪টা পর্যন্ত ঢুকেছে। এর মধ্যে পাথরসহ অন্যান্য পণ্যের ব্যাপক যানজটের কারণে স্বাভাবিক গতিতে পেঁয়াজ আমদানি না হওয়ায় দেশের বাজারে সরবরাহ কমেছে। ফলে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। যদি সকাল থেকে অন্যান্য পণ্য রফতানি না করে কাঁচামাল অগ্রাধিকার দিয়ে পেঁয়াজ রফতানি করা হতো, তাহলে আমদানি স্বাভাবিক থাকতো। ঈদুল আজহাকে ঘিরে সাধারণ মানুষের কাছে স্বাভাবিকভাবে পেঁয়াজ পৌঁছানো যেতো। সেক্ষেত্রে দামও থাকতো কম।’
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে এরপরও কিছুটা কমেছে আমদানির পরিমাণ। গত মঙ্গলবার বন্দর দিয়ে ২৫টি ট্রাকে ৬২৬ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়। বুধবার ১৬টি ট্রাকে আমদানি হয় ৪১৮ টন পেঁয়াজ। বৃহস্পতিবার তা আরও কমে ১৩টি ট্রাকে ৩৭০ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। পেঁয়াজ যেহেতু কাঁচামাল তাই কাস্টমসের সব প্রক্রিয়া শেষ করে দ্রুত খালাস করে তা ব্যবসায়ীদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’